অনলাইন ডেস্ক :
ধরুন, কোনো রেস্তোরাঁয় গিয়ে আপনি চিকেন শর্মা অথবা চিকেন বার্গার অর্ডার করলেন। একটু পরে ওয়েটার এসে আপানার খাবার দিয়ে গেলো, আপনি খাওয়া শুরু করলেন। মাংসের ঘ্রাণ ও স্বাদ দুটোই একদম মুরগির মাংসের মতো। কিন্তু পথিমধ্যে জানতে পারলেন, আপনি যে মাংস খাচ্ছেন, তা কোনো খামার কিংবা বাড়িতে পোষা মুরগির নয়। এমনকি সে মাংস আসল মুরগিরই নয়। কেমন লাগবে তখন? অবাক লাগছে, তাই তো? অবিশ্বাস্য হলেও ঘটনা সত্য। কৃত্রিমভাবে তৈরি করা এমনই মুরগির মাংস পাওয়া যাচ্ছে সিঙ্গাপুরের হুবার’স বুচারি অ্যান্ড বিস্ট্রো রেস্তোরাঁয়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, বিশ্বে এটিই একমাত্র রেস্তোরাঁ, যার মেনুতে কৃত্রিম মাংস পাওয়া যাচ্ছে। রেস্তোরাঁ থেকে কয়েক মাইল দূরের শিল্পাঞ্চলে কৃত্রিমভাবে এ মাংস তৈরি হচ্ছে। রেস্তোরাঁ মালিকের দাবি, কাস্টমারদের কাছে এরইমধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে এ মাংস। যারা খেয়েছে তারাই এর স্বাদে, ঘ্রাণে মুগ্ধ।
এ মাংস প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক ‘ইট জাস্ট’ বলছে, স্বাদ ও মানের বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। কৃত্রিমভাবে মাংস তৈরির শিল্পে শত শত কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হচ্ছে। তবে নতুনত্বের বাইরে এ উদ্যোগ কতটা টেকসই হবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েই গেছে। ২০১৩ সালে লন্ডনে প্রথমবারের মতো কৃত্রিমভাবে তৈরি বার্গার বাজারে আনা হয়। ওই বার্গার তৈরিতে খরচ হয়েছিল ৩ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার। তারপর থেকে বিশ্বের বেশকিছু কোম্পানি বাজারে কৃত্রিমভাবে তৈরি করা মাংস আনার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। অনেকগুলো কোম্পানির মধ্যে এখন পর্যন্ত শুধু ‘ইট জাস্ট’ তাদের পণ্য বিক্রির অনুমোদন পেয়েছে। ২০২০ সালে সিঙ্গাপুরের নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ কোম্পানিটির কৃত্রিম মুরগির মাংস বাজারজাতের অনুমোদন দেয়। তাছাড়া দেশ হিসেবে সিঙ্গাপুরই প্রথম কৃত্রিমভাবে তৈরি করা মাংস বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে।
তবে সিঙ্গাপুরের সব জায়গায় এ মাংস পাওয়া যাচ্ছে, বিষয়টি এমন না। ২০২১ সালে একটি বেসরকারি ক্লাবের মেনুতে খুব অল্প সময়ের জন্য কৃত্রিম মাংস দিয়ে তৈরি চিকেন নাগেট রাখা হয়েছিল। ইট জাস্ট কোম্পানি কয়েক মাসের জন্য ওই ক্লাবে এ মাংস সরবরাহ করেছিল। কিন্তু চলতি বছর সাধারণ মানুষের কাছে কৃত্রিম মাংসের চিকেন স্যান্ডউইচ ও পাস্তা বিক্রি শুরু করেছে হুবার’স। যদিও সপ্তাহে মাত্র একবার সীমিতভাবে সেগুলো বিক্রি করা হচ্ছে। ইট জাস্টের প্রধান নির্বাহী জশ টেট্রিক বলেছেন, কৃত্রিমভাবে তৈরি মাংস আর আসল প্রাণির মাংসের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। কিন্তু এর সুবিধা হলো, মাংসের জন্য আপনাকে কোনো প্রাণিকে জবাই করা লাগছে না। আমার বিশ্বাস, অদূর ভবিষ্যতে কৃত্রিমভাবে তৈরি খাবারগুলো মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। সূত্র: বিবিসি
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি