April 20, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, April 20th, 2023, 8:54 pm

কৃষিপণ্যের প্রশ্নে ইউক্রেনের প্রতি সংহতি নেই

অনলাইন ডেস্ক :

রাশিয়ার হামলা প্রতিহত করতে ইউক্রেনকে যাবতীয় সাহায্য দিয়ে চললেও খাদ্যশস্য আমদানির প্রশ্নে নিজস্ব চাষিদের স্বার্থ রক্ষায় পূর্ব ইউরোপের দেশগুলো কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে। ইইউ ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করছে। রাশিয়ার হামলার মুখে ইউক্রেনকে অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ, আর্থিক সাহায্য, শরণার্থীদের আশ্রয়ের ক্ষেত্রে ইউরোপের দেশগুলো এতকাল যথেষ্ট আন্তরিকতা দেখিয়ে এসেছে। তবে, একটি প্রশ্নে অসন্তোষ দেখা যাচ্ছে। যুদ্ধের কারণে কৃষ্ণ সাগর উপকূলে ইউক্রেনের বন্দরগুলো কার্যত বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে প্রতিবেশী দেশগুলোর বন্দর ব্যবহার করে খাদ্যশস্য রপ্তানি করতে বাধ্য হচ্ছে কিয়েভ।

কিন্তু অপেক্ষাকৃত সস্তার সেই কৃষিপণ্যের আগমনের কারণে ইউরোপের চাষিদের ক্ষতি হচ্ছে। তাদের পক্ষে প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ছে। এমনকি ইউক্রেনকে সাহায্যের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করলেও পোল্যান্ডের মতো দেশও গত সপ্তাহান্তে শস্য আমদানি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছিল। পূর্ব ইউরোপের অন্য কিছু দেশেও বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ দানা বাঁধছে। পরিস্থিতি সামলাতে এবার আসরে নামছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ইউক্রেনের সংলগ্ন পাঁচটি ইইউ সদস্য দেশের চাষিদের ক্ষতিপূরণ বাবদ ইইউ দশ কোটি ইউরো ধার্য করেছে। সেইসঙ্গে ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য আমদানির ক্ষেত্রেও ঊর্ধ্বসীমা স্থির করার পরিকল্পনা করছে ব্রাসেলস।

মার্চ মাসের শেষে বুলগেরিয়া, হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড, রোমানিয়া ও স্লোভাকিয়ার যৌথ অভিযোগের পর ইইউ জরুরি ভিত্তিতে ‘প্রতিরোধমূলক’ পদক্ষেপ নেবার অঙ্গীকার করেছে। এর আওতায় ইউক্রেন থেকে গম, ভুট্টা, সূর্যমুখী ফুলের বীজ ও রেপসিড আমদানির ক্ষেত্রে কিছু নিয়ন্ত্রণ চালু হবে। শুধু কোনো ইইউ সদস্য দেশ বা বাকি বিশ্বে রপ্তানির জন্য ইউক্রেন এই পাঁচটি দেশে খাদ্যশস্য পাঠাতে পারবে। কমপক্ষে জুন মাসের শেষ পর্যন্ত সেই নিয়ম কার্যকর করা হবে। অন্যান্য খাদ্য পণ্যের ক্ষেত্রেও এমন পদক্ষেপের প্রয়োজন খতিয়ে দেখা হবে। ২০১৬ সালে ইইউ ও ইউক্রেনের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আওতায় বেশ কিছু কৃষিপণ্যের উপর শুল্ক ও কোটা ব্যবস্থা চালু ছিল।

কিন্তু রাশিয়ার হামলার পর ইইউ ২০২৩ সালের জুন মাস পর্যন্ত সেই বাধা দূর করার একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই ব্যবস্থার মেয়াদ আরও এক বছরের জন্য বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে ব্রাসেলস। এর মাধ্যমে ইউক্রেন ২ হাজার ৬০০ কোটি ইউরো মূল্যের খাদ্যশস্য বিক্রি করতে পেরেছে। তারই মাঝে ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য প্রবেশের ক্ষেত্রে নতুন করে নিয়ন্ত্রণ চালু করতে হচ্ছে। পোল্যান্ডে চলতি বছর সংসদ নির্বাচনের কারণে সরকার চাষিদের ক্ষোভ এড়াবার চেষ্টা করছে। ২০২১ সালে ইউক্রেন থেকে ২ হাজার ৮০০ টন গম আমদানি করা হয়েছিল।

২০২২ সালে সেই মাত্রা পাঁচ লাখ টন ছুঁয়েছে। ভুট্টার ক্ষেত্রে সেই মাত্রা আরও অনেক বেশি। হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া ও বুলগেরিয়াও সেই কারণে ইউক্রেন থেকে খাদ্য পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে একতরফা নিয়ন্ত্রণ চালু করেছে। শুধু রোমানিয়া এখনো ইউক্রেনের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়ে কোনো বাড়তি পদক্ষেপ নেয়নি। গত বুধবার ইউরোপীয় কমিশনের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ইউক্রেন ও সংলগ্ন পাঁচটি ইইউ সদস্য দেশের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে এক গ্রহণযোগ্য সমাধান সূত্র সন্ধানের চেষ্টা চালিয়েছিলেন।