খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জন্য ৮৬১ কোটি ৬ লাখ ২৭ হাজার টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) দুপুরে নগর ভবনের শহীদ আলতাফ মিলনায়তনে কেসিসি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক এ বাজেট ঘোষণা করেন।
প্রস্তাবিত এ বাজেটে রাজস্ব ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯২ কোটি ১১ লাখ ৩৮ হাজার টাকা এবং সরকারি বরাদ্দ ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা থেকে উন্নয়ন খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৬৮ কোটি ৯৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা।
গত ২০২১-২২ অর্থবছরে বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬০৮ কোটি ২ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। সংশোধিত বাজেটে এর আকার দাঁড়িয়েছে ৪৫০ কোটি ৬৪ লাখ ৯১ হাজার টাকা। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ৭৪.১২ শতাংশ।
বাজেট ঘোষণাকালে সিটি মেয়র বাজেটের মূল বৈশিষ্ট্যগুলো তুলে ধরে বলেন, বাজেটে এবারও নতুন কোন কর আরোপ করা হয়নি। বকেয়া পৌরকর আদায়, নবনির্মিত সকল স্থাপনার ওপর প্রচলিত নিয়মে কর ধার্য্য এবং নিজস্ব আয়ের উৎস সম্প্রসারণের মাধ্যমে কর্পোরেশনের আয় বৃদ্ধির পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এটি একটি উন্নয়নমুখী বাজেট। বাজেটে সড়ক ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, জলাবদ্ধতা নিরসন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, নাগরিক সেবা সম্প্রসারণ, কোভিড-১৯ প্রতিরোধ, মশক নিধন, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন, ধর্মীয় উপাসনালয়-পার্ক-বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-রাস্তাঘাট উন্নয়ন, কেসিসির বিভিন্ন দপ্তর আধুনিক প্রযুক্তির আওতায় আনা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।
মেয়র বলেন, কেসিসি একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। এটি কেবল সরকারি বা বিদেশি সাহায্য ও ঋণের ওপর নির্ভরশীল থাকতে পারে না। কেসিসিকে নিজস্ব আয়ের ওপর নির্ভর করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে।
মেয়র জানান, কেসিসির নিজস্ব সংস্থাপন ব্যয় মিটিয়ে এবং ব্যয় সংকোচন করে রাজস্ব তহবিল থেকে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক খাতে মোট ৫৬ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব খাত থেকে উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪২ কোটি ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। অবকাঠামো ও রাস্তাঘাট উন্নয়নের সাথে সাথে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য রাজস্ব তহবিল থেকে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। মানববর্জ্য উন্নয়ন এবং মশক নিধনের জন্য কনজারভেন্সি খাতে ১৪ কোটি ৮৮ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
বাজেটে এডিপির জন্য থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৬০ কোটি টাকা। উক্ত বরাদ্দ থেকে পূর্ত খাতে ২৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা, নগরীতে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের দায়িত্ব খুলনা ওয়াসার হলেও বিশেষ প্রয়োজনে জরুরি পানির চাহিদা মেটানোর জন্য গভীর ও অগভীর নলকূপকে সাবমারসিবল পাম্পে রূপান্তর করার জন্য এখাতে ৭৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ভেটেরিনারি খাতে ৫০ লাখ টাকা, জনস্বাস্থ্য খাতে ১০ কোটি ২৭ লাখ টাকা, কনজারভেন্সি খাতে ১৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তিনি আরও জানান, বর্তমানে সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার ১৬টি উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে। এসব প্রকল্পে ২০২২-২০২৩ অর্থবছর ১৮৬ কোটি ২০ লাখ ৮৯ হাজার টাকার উন্নয়ন সহায়তা পাওয়ার আশা করা যায়। এছাড়া জাতীয় এডিপিভুক্ত তিনটি প্রকল্পে ৪২২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
বাজেট অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কেসিসির অর্থ ও সংস্থাপন বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও কাউন্সিলর শেখ মো. গাউসুল আজম। এ সময় কেসিসির প্যানেল মেয়র, কাউন্সিলর, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, সরকারি কর্মকর্তা, কেসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি