সরকারি চাকরিতে ২০১৮ সালের পরিপত্র বাতিল করে কোটা পদ্ধতি পুনর্বহাল সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায়ের প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে।
সোমবার (১০ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন মিলনায়তনের মুক্তমঞ্চের সামনে হাইকোর্টের ওই রায়কে বৈষম্যমূলক উল্লেখ করে মানববন্ধন করেন বাকৃবির প্রায় ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী।
এসময় শিক্ষার্থীরা, ‘মেধাবীদের কান্না, আর না আর না; সুযোগের সমতা, সংবিধানের মূল কথা; কোটার কাছে মেধার হার, রুখতে হবে আরেকবার; বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাই নাই;’ স্লোগান দিতে থাকে।
ভেটেরিনারি সায়েন্স অনুষদের মেহেদী হাসান তানজিল বলেন, মুক্তিযুদ্ধ শব্দটাকে বিচ্ছেদ করলে আমরা শুধু মুক্তিই পাই, কোথাও বৈষম্য দেখতে পাই না। স্বাধীনতার এত বছর পরেও নতুন করে কোটা বৈষম্য তৈরি করা হলে সেটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গেই সাংঘর্ষিক।
তিনি আরও বলেন, ‘তাছাড়া আমরা জানি কোটা মূলত পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায়ের একটা মাধ্যম। কিন্তু বর্তমানে যারা কোটা সুবিধার আওতাধীন, তাদের মধ্যে কেবল প্রতিবন্ধী ও আদিবাসী ছাড়া কেউই পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর আওতায় পড়ে না। বিশেষ বিবেচনায় অবশ্যই মুক্তিযোদ্ধা কোটা রাখা যেতে পারে। তবে সেটা কখনোই ৫ শতাংশের বেশি হওয়া উচিৎ নয়।’
ভেটেরিনারি অনুষদের আরেক শিক্ষার্থী মোরশেদুল ইসলাম মিশু বলেন, ‘২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী কোটা পদ্ধতি বাতিল করে দিলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আলোর মুখ দেখতে শুরু করে। তবে কোটা পদ্ধতি পুনর্বহাল সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায়ের মাধ্যমে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা আবার ৫৬ ভাগ কোটা পদ্ধতির মধ্যে পড়ে যাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘মেধা কাজে লাগিয়ে যোগ্য চাকরি পাওয়ার অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় এই কোটা পদ্ধতি। আমরা চাই মেধার ভিত্তিতে যেন সব শিক্ষার্থী দেশের মূল চালিকা শক্তিতে প্রবেশ করতে পারে।’
মো. ইরান মিয়া নামে পশুপালন অনুষদের এক শিক্ষার্থী বলেন, স্বাধীনতার ৫২ বছর পরে এসেও সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতির পুনর্বহাল বাংলাদেশের ছাত্রসমাজের সঙ্গে চরম বৈষম্যের প্রতিফলন। প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য কোটা রাখা যেতে পারে। বৈষম্যমূলক এই কোটা পদ্ধতি সংস্কার না করলে সারা বাংলার ছাত্রসমাজ দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।
আরেক শিক্ষার্থী নূর-ই-হাফিজা বলেন, দেশের প্রথম শ্রেণির চাকরিগুলোতে মেধার ভিত্তিতে একজন যোগ্য প্রার্থীকে সুযোগ দেওয়া উচিত। মেধার যথাযথ সম্মান না করলে দেশ অচিরেই মেধাশূণ্য হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, গত বুধবার সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলসংক্রান্ত পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। পরদিন থেকেই ওই রায়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন।
—–ইউএনবি
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম