অনলাইন ডেস্ক :
সামাজিক মাধ্যমে ছোট্ট একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন লাসিথ মালিঙ্গা। সেখানে দেখা যাচ্ছে, টিভি পর্দায় বল হাতে ছুটছেন নুয়ান থুশারা। আঙুল উঁচিয়ে তার দিকে দেখাচ্ছেন মালিঙ্গা। ততক্ষণে আগুনে বোলিংয়ে হ্যাটট্রিক করে বাংলাদেশের ব্যাটিং নাড়িয়ে দিয়েছেন থুশারা। উত্তরসূরীর বোলিং ও কীর্তিতে কতটা খুশি মালিঙ্গা, ফুটে উঠছে এই ভিডিও ক্লিপেই। এতদিন ধরে মূলত মালিঙ্গার সঙ্গেই মিশে ছিল থুশারার পরিচয়। একইরকম স্লিঙ্গিং অ্যাকশন ও শরীরের পাশে অনেক নিচু থেকে বল ছাড়ার কারণে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটে অনেক দিন ধরেই থুশারার পরিচয় মূলত ‘ক্লোন মালিঙ্গা।’ শনিবার সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে বিধ্বংসী দুটি ওভারে যেন বার্তা ছড়িয়ে দিলেন, এখন পরিচিত হতে চান তিনি নিজের নামেই। ওই দুই ওভারে হ্যাটট্রিকসহ চার উইকেট শিকার করেন তিনি।
সব মিলিয়ে ম্যাচে ২০ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ২৯ বছর বয়সী পেসারই শ্রীলঙ্কার সিরিজ জয়ের নায়ক। এই সিরিজে এ দিনই প্রথম মাঠে নামে থুশারা। শ্রীলঙ্কার হয়ে তার খেলার অভিজ্ঞতা বলতে ছিল এই ম্যাচের আগে সাতটি টি-টোয়েন্টি। এর মধ্যে একটি ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। তবে সেটি ছিল গত এশিয়ান গেমসে আফগানিস্তানের বিপক্ষে, আন্তর্জাতিক ম্যাচ হলেও সেখানে মূলত জাতীয় দল পাঠায়নি টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলো। ওই ম্যাচ ছাড়া শ্রীলঙ্কার হয়ে তার পারফরম্যান্সে ছিল যাচ্ছেতাই। বাকি ছয় টি-টোয়েন্টিতে দুটি উইকেট নিতে পেরেছিলেন তিনি দেদার রান বিলিয়ে।
তবে স্লিঙ্গিং অ্যাকশন, সুইংয়ের দক্ষতা আর নিজের দিনে এক স্পেলেই খেলার মোড় বদলে দেওয়ার সামর্থ্যের ঝলক তিনি নানা সময়ে দেখিয়েছেন ঘরোয়া ক্রিকেট ও ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে। গত আইপিএলের নিলামে এজন্যই তাকে নিয়ে তুমুল লড়াই জমেছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালোর ও মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের। শেষ পর্যন্ত ৪ কোটি ২০ লাখ রুপিতে তাকে দলে নেয় মুম্বাই। মুম্বাই যে ভুল করেনি, সেটিই যেমন শনিবার বুঝিয়ে দিলেন থুশারা। বাংলাদেশের বিপক্ষে এই ম্যাচে তিনি সুযোগ পেয়েছিলেন মাথিসা পাথিরানার বদলে, যিনিও ঠিক একই গোত্রের বোলার। একইরকম স্লিঙ্গিং অ্যাকশন ও রিলিজ পয়েন্ট তারও। তাকেও বরাবরই বলা হচ্ছে মালিঙ্গার উত্তরসূরী।
থুশারার চেয়ে বরং এতদিন ধরে বেশি সম্ভাবনাময় মনে করা হয়েছে পাথিরানাকেই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট, ঘরোয়া ক্রিকেট ও আইপিএলে সেই সম্ভাবনার ছাপও রেখেছেন তিনি। তবে এই সিরিজে দুটি ম্যাচ খেলে ২১ বছর বয়সী পেসার একদমই ছিলেন এলোমেলো। পরে তো চোটও পান তিনি। তার জায়গায় সুযোগ পেয়ে বাজিমাত করলেন থুশারা। যার বোলিংয়ে অনুপ্রাণিত পাথিরানা ও থুশারা, সেই মালিঙ্গা মুগ্ধ দুজনের বোলিংয়েই। শ্রীলঙ্কার সিরিজ জয়ের পর সামাজিক মাধ্যমে লঙ্কান এই পেস গ্রেট লিখলেন, দুজনকেই তিনি আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে দেখতে চান।
“নুয়ান থুশারার হ্যাটট্রিক ও আজকের চোখধাঁধানো পারফরম্যান্স নিশ্চয়ই বিশ্বকাপ দলে তার জায়গা নিশ্চিত করে দিল পাথিরানার সঙ্গে। আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সবচেয়ে শক্তিশালী বোলিং আক্রমণগুলোর একটি হিসেবে দারুণভাবে গড়ে উঠছে আমাদের বোলিং আক্রমণ।” আগামী বিশ্বকাপে একই গ্রুপে পড়েছে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচটি খেলবে লঙ্কানদের বিপক্ষেই, ডালাসে আগামী ৭ জুন।
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা