March 29, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, May 25th, 2023, 8:37 pm

ক্ষণিকের জীবনে ভালো কাজে নিয়োজিত থাকতে চাই : পূর্ণিমা

অনলাইন ডেস্ক :

২৫ বছর আগের কথা। ভীরু পায়ে, দুরু দুরু বুকে ক্যামেরার সামনে হাজির হয়েছিলেন এক কিশোরী। মিডিয়া নামের রূপকথার জগতে পা রেখেই যেন টের পেলেন, তিনি থাকতে এসেছেন; ঘটেছিলও তাই। অভিনয়ের দ্যুতি ছড়িয়ে সহসাই নিজের একটা জায়গা পাকা করে নিলেন। তিনি আর কেউ নন, দিলারা হানিফ পূর্ণিমা। প্রথম সিনেমা ‘এ জীবন তোমার আমার’ মুক্তি পায় ১৯৯৮ সালে। তাঁর ক্যারিয়ারে বাঁক বদল হয় ‘মনের মাঝে তুমি’ দিয়ে; এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। গুনে গুনে অভিনয়ের সঙ্গে ২৫ বছর কাটিয়ে দিলেন তিনি।

শুরুতেই প্রশ্ন ছিল- দীর্ঘ সময় জনপ্রিয়তা টিকিয়ে রেখে কীভাবে কাজের স্পৃহা ধরে রেখেছেন? ‘অভিনয় ছাড়া আর কোনো কাজে পূর্ণ মনোযোগ দিইনি। অভিনয়বিহীন নিজেকে এক মুহূর্তের জন্য ভাবতে পারিনি। আজকের এই অবস্থানে আসার জন্য দর্শক সমান কৃতিত্ব রাখেন। তাঁদের সমর্থন না পেলে কাজ করে যাওয়া সম্ভব হতো না।’ কল্পনাতুল্য জগৎকে একান্তই নিজের রাজত্বে পরিণত করার পর এই রাজকন্যা মাঝে কাজেও বিরতি নিয়েছিলেন। ক্যারিয়ারে গেছে নানা চড়াই-উতরাই। তবে দমে যাননি। ফিরে আসার পর তাঁর আত্মা ঠিকই উড়ে বেড়িয়েছে এ জগতের অলিগলিতে। তাঁর মনে কখনও কোনো আশঙ্কা বা নার্ভাসনেসের কালো মেঘ জড়ো হতে দেননি। বরং নিজেকে প্রস্তুত রেখেছেন, আবারও আলো ছড়ানোর উদ্দেশ্যে। অভিনয় ক্যারিয়ারে ভালো ভালো কাজ উপহার দিয়ে বীরদর্পেই ঘটিয়েছিলেন প্রতিভার বিচ্ছুরণ। সিনেমা, নাটক, বিজ্ঞাপন- সর্বশেষ ওয়েব মাধ্যমেও তাঁর সরব উপস্থিতি বিমোহিত করে রেখেছিল অগুনতি দর্শককে। সম্প্রতি ছয় পর্বের ওয়েব সিরিজ ‘হোটেল রিলাক্স’ দিয়ে নতুন করে আলোচনায় এসেছেন এই অভিনেত্রী।

তাঁর অভিনীত পুলিশ কর্মকর্তার চরিত্রটি দর্শককে মুগ্ধ করেছে। কাজল আরেফিন অমির এ সিরিজটি গত ঈদে মুক্তি পেয়েছিল। মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে তাঁর অভিনীত সিনেমা ‘জ্যাম’, ‘গাঙচিল’ ও ‘আহারে জীবন’। তিনটি সিনেমার দর্শক তাঁকে নতুন রূপে দেখতে পাবেন। শুধু অভিনয় নয়, উপস্থাপক হিসেবেও নিজেকে মেলে ধরেছেন পূর্ণিমা। উপস্থাপনার ফাঁকে জনপ্রিয় শিল্পীদের অনুকরণে পূর্ণিমার অভিনয়েও মুগ্ধ হয়েছেন দর্শক। তাঁদের প্রিয় উপস্থাপকের তালিকায়ও উঠে গেছে পূর্ণিমার নাম। ক্যারিয়ারে রজতজয়ন্তীতে এসে আপনার এই এগিয়ে যাওয়ায় আপনি কতটুকু সন্তুষ্ট? পূর্ণিমার উত্তর- ‘আমি কখনোই সন্তুষ্ট হই না। আমি মনে করি, একার পক্ষে একজন শিল্পী সন্তুষ্ট হয়ে গেলে তাঁর এগিয়ে যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যায়। তাই আমি আমার মধ্যে অভিনয়ের খিদেটা ধরে রাখি। আমার পরিবারের সদস্যরা সংস্কৃতিমনা ছিলেন। বোন থিয়েটার ও সিনেমায় কাজ করতেন। তবে আমার পরিবারের কেউ ভাবতেই পারেনি আমি অভিনেত্রী হবো। বলতে পারেন হুট করেই অভিনয়ে এসেছিলাম। ক্যারিয়ারে এই সময়ে সাফল্যে আমি নিশ্চয়ই খুশি। অভিনয় জীবনে ৮০টির মতো সিনেমায় কাজ করেছি।

অনেক সিনেমা সুপার ডুপার হিট হয়েছে। আবার কিছু সিনেমা চলেনি। তাঁর জন্য অনুতপ্ত নই; যা চেয়েছি তাঁর থেকে বেশি পেয়েছি।’ দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে, নানা অনুকূল-প্রতিকূল অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ হয়ে, নিজেকে প্রতিমুহূর্তে আগের চেয়ে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী হিসেবেই অনুভব করেন পূর্ণিমা। তাই তার কাছে জানতে চাই জীবনকে কীভাবে দেখেন, এর সার্থকতা কোথায়? ‘আমাদের সবার জীবনেই প্রতিটি মুহূর্ত অনেক মূল্যবান। আমরা কেউ জানি না আর কতদিন পৃথিবীতে থাকব। আজ যে সময় চলে যাচ্ছে, তা আর কোনোদিন ফিরে আসবে না। ক্ষণিকের এই জীবনে ভালো কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে হবে। টুকরো টুকরো মুহূর্তকে সুন্দরভাবে উপভোগ করা উচিত। জীবনের সার্তকতা এখানেই।’- বললেন পূর্ণিমা