November 18, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, July 25th, 2022, 7:37 pm

খাঁচায় বন্দি টিয়া পাখি, ১৫ কোটি টাকার মামলা

অনলাইন ডেস্ক :

‘শেষ গল্পটা তুমিই’ নামের একটি নাটকে ‘খাঁচায় বন্দি টিয়া পাখি’ দেখানোয় ‘বন্য প্রাণী আইন ২০১২’ ভাঙার অভিযোগ উঠেছে নির্মাতা অনন্য ইমনের বিরুদ্ধে। এতে করে নাটকটির চিত্রনাট্যকার ও পরিচালক অনন্য ইমনের বিরুদ্ধে ১৫ কোটি টাকার মামলা হয়েছে। ক্ষতিপূরণ দাবি করে উচ্চ আদালতে মামলা করেছে সরকারের পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের ‘বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট’। এই নাটকটিতে অভিনয় করেন তৌসিফ মাহবুব ও তাসনিয়া ফারিণ। বেসরকারি একটি টেলিভিশনে প্রচারের পর ২৪ মার্চ ‘শেষ গল্পটা তুমিই’ উন্মুক্ত হয় সিডি চয়েসের ইউটিউব চ্যানেলে। নির্মাতা অনন্য ইমনের বরাতে সেই মামলার একটি কপি এসেছে চ্যানেল আই অনলাইনের কাছে। মামলার নথি অনুযায়ী জানা যায়, ৫ এপ্রিল ২০২২ তারিখে ফেসবুকের মাধ্যমে বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের নজরে আসে বিষয়টি। নথিতে বলা হয়, “বন্য প্রাণীকে খাঁচাবন্দি করা, বেচাকেনা করা, প্রদর্শন করা বা এ জাতীয় অপরাধ সংঘটনে সহায়তা করা, প্ররোচনা প্রদান ইত্যাদি ‘বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২’ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ‘সিডি চয়েস ড্রামা’ নামে ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত নাটকটিতে খাঁচাবন্দি বন্য প্রাণী প্রদর্শন প্রচলিত আইনে অপরাধ এবং অন্যদেরও সেই অপরাধ করতে উৎসাহিত করছে।” এ কারণে অনন্য ইমনের বিরুদ্ধে ‘বন্য প্রাণী আইন ২০১২’র ৩৮(২), ৪১ এবং ৪৬ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। নাটকে ১৫ মিনিট আট সেকেন্ড থেকে শুরু হওয়া ৫৩ সেকেন্ডের সময় দৃশ্যটি রয়েছে। আর এই ৪৫ সেকেন্ডের জন্য ক্ষতিপূরণ হিসেবে ধরা হয়েছে ১৫ কোটি টাকা। এই মামলার সাক্ষী চারজন- অসীম মল্লিক (বন্য প্রাণী পরিদর্শক), মো. আব্দুল্লাহ-আস-সাদিক (বন্য প্রাণী পরিদর্শক), মো. হাফিজুর রহমান (ফরেস্টার) ও মো. আবদুল মালেক (জুনিয়র ওয়াইল্ডলাইফ স্কাউট)। মামলার বিষয়ে পরিচালক অনন্য ইমন বলেন, নাটকের চিত্রনাট্যে এমন কোনো দৃশ্য ছিল না। যে বাড়িতে শুটিং করেছি সেখানেই ছিল টিয়া পাখিটি। দৃশ্যায়নের সময় মনে হলো নায়ক কোনো একটা কাজ করতে করতে মা ও বোনের সঙ্গে কথা বললে দৃশ্যটা বেশি বিশ্বাসযোগ্য মনে হবে দর্শকের কাছে। তাছাড়া এখানে পাখিকে আদর করে খাওয়ানো হচ্ছে, এটা নিয়ে আইনি ঝামেলায় পড়ে যাবো, ভাবনাতেই আসেনি। তিনি বলেন, একই সঙ্গে দৃশ্যটিতে নায়কের মা গাছে পানি দিচ্ছিল, পাখিবন্দি দেখানোয় যদি কপালে তিরস্কার জোটে, তবে গাছে পানি দিতে সবাইকে উৎসাহিত করার জন্য আমার পুরস্কার পাওয়া উচিত। নির্মাতা বলেন, নাটকের বাজেট মাত্র ৪ লাখ টাকা, ক্ষতিপূরণ ১৫ কোটি টাকা! পারিবারিক সব সম্পত্তিসহ আমাকে বিক্রি করলেও এত টাকা পাওয়া যাবে না। এই মামলার অন্যতম সাক্ষী ফরেস্টার মো. হাফিজুর রহমান গণমাধ্যমে বলেছেন, ‘আমরা গ্রামীণফোন, দারাজের মতো প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনচিত্রে বন্য প্রাণী আইন ভঙ্গের অভিযোগ এনে মামলা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা চোখ-কান খোলা রাখি সর্বক্ষণ। অনন্য ইমন সাহেব বন্য প্রাণীকে খাঁচাবন্দি দেখিয়ে অপরাধ তো করেছেনই, অন্যদেরও উৎসাহিত করেছেন।’ গেল ২৬ জুন ইমনকে আদালতে হাজির থাকতে বলা হয়েছিল। কিন্তু কোরবানির ঈদের নাটকের শুটিং থাকায় তিনি যেতে পারিনি। এরপর আইনজীবী নিয়োগ করে ২১ জুলাই আদালতে হাজির হন নির্মাতা। তখন বিচারক তাকে ১ আগস্ট হাজির থাকতে বলেছেন। অনিচ্ছাকৃত এই কর্মকাÐ আদালতের কাছে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার আহŸান জানিয়েছেন অনন্য ইমন।