নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস শনাক্ত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জার্মানিতে এ রোগের চিকিৎসা সম্ভব বলে জানিয়েছেন চিকিসৎকরা। তিনি এখন ‘হাইরিস্কে’ আছেন বলেও জানান তারা। রোববার (২৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি নেত্রীর বাসভবন ফিরোজায় সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা। এ সময় বিএনপি নেত্রীর চিকিৎসা বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হয়। ব্রিফিংয়ে তারা বলেন, ’ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) শারীরিক অবস্থা নিয়ে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। কিন্তু আমরা যারা প্রধান চিকিৎসক আছি, এ বিষয়টি সম্পর্কে ভালো জানি।’ চিকিসৎসকরা জানান, জটিল পদ্ধতিতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে খালেদা জিয়াকে। তার এ পর্যন্ত ৩ বার মারাত্মক ব্লিডিং হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রিব্লিডিং হয়নি। আবার যদি রিব্লিডিং হয়, তবে তা নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা এখানে নেই। সেক্ষেত্রে তার ব্লিডিং হলে মৃত্যুঝুঁকি অনেক বেড়ে যাবে। এর আগে শনিবার এক বিবৃতিতে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে নিয়ে সুচিকিৎসার দাবি জানান ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) ২ হাজার ৬৮৪ চিকিৎসক। বিবৃতিতে তারা বলেন, পছন্দমতো চিকিৎসা নেওয়ার অধিকার থেকে খালেদা জিয়া ক্রমাগতভাবে বঞ্চিত। বিএনপি নেত্রী কারাগারে যাওয়ার পর থেকেই চিকিৎসাবঞ্চিত হওয়ার ফলশ্রুতিতে আজ এ ভয়াবহ শারীরিক জটিলতার মধ্যে পড়েছে। তারা আরও বলেন, চিকিৎসা ব্যবস্থায় বাংলাদেশ ক্রমবর্ধমানভাবে এগিয়ে গেলেও এখনও বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা বিদ্যমান। যার ফলশ্রুতিতে এদেশের চিকিৎসকদের আপ্রাণ চেষ্টা সত্ত্বেও খালেদা জিয়া আশানুরূপ আরোগ্য লাভের পরিবর্তে ধীরে ধীরে অন্তিম পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। এমতাবস্থায় চিকিৎসক হিসেবে আমাদের আকুল আহ্বান, জরুরি ভিত্তিতে তার মুক্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করে বিদেশে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা হোক। অন্যথায় চিকিৎসার অভাবে খালেদা জিয়ার কিছু হলে তার দায়-দায়িত্ব সরকারের বর্তমান নীতিনির্ধারকদের বহন করতে হবে। শারীরিক নানা জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে গত ১৩ নভেম্বর থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন বেগম খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্র কিংবা যুক্তরাজ্যে নিতে চায় পরিবার। কিন্তু আইনের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে সরকার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশ যেতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারেন এমন আশঙ্কা থেকেই বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। আইনের ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে রোববার (২৮ নভেম্বর) স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন চেয়ারপারসনকে মুক্তি দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ সমাবেশে এ অভিযোগ করেন ফখরুল। আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ, মানববন্ধন, মৌন মিছিলসহ বেশ কিছু কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ