প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘খালেদা জিয়াকে বাসায় থাকতে এবং বিনামূল্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার অনুমতি দিয়ে অনেক উদারতা দেখানো হয়েছে, যদিও সবসময়ই তার উদ্দেশ্য ছিল বঙ্গবন্ধুর পরিবারের ক্ষতি করা।’
বুধবার বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের ৪৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নগরীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে দেয়া এক বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন,‘তারা আমাদের কাছ থেকে আর কী আশা করে? আমরা তাকে বাড়িতে থাকতে দিয়েছি এবং তাকে বিনামূল্যে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এটা কি যথেষ্ট নয়? এটা কি বিরাট উদারতা নয়? মানবিক কারণেই নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে তাকে বাসায় থাকতে ও চিকিৎসার অনুমতি দেয়া হয়েছে। এখন তিনি (খালেদা) দেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।’
খালেদা জিয়ার জন্মদিনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, ‘১৫ আগস্ট জন্মদিনের কেক কাটা অর্থ কী? এদিন যারা বাবা-মা, ভাই ও সন্তানদের হারিয়েছেন,এটা শুধু তাদের কষ্ট দেয়ার জন্য; তাই না? খালেদা জিয়া ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন করেন। যদি তাই হয়,তাহলে তারা কীভাবে আমার কাছ থেকে আরও বেশি আশা করতে পারে?’
তিনি আরও বলেন, ‘এই জন্মদিন ছাড়াও খালেদা জিয়ার বিভিন্ন নথিতে তার জন্মদিন হিসেবে আরও বেশ কয়েকটি দিনের উল্লেখ করা হয়েছে।
জাতির পিতার খুনিদের পুরস্কৃত ও পৃষ্ঠপোষকতা করা, ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুর খুনিকে সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা করা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সময় অবমাননাকর মন্তব্য, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল মুস্তাফিজুর রহমানকে সিএমএইচে চিকিৎসা নিতে না দেয়া, কারাগারে বন্দি এইচ এম এরশাদ ও রওশন এরশাদকে চিকিৎসার সুযোগ না দেয়া এবং মোহাম্মদ নাসিমসহ আ.লীগ নেতাদের ওপর অত্যাচার চালানোসহ আরও বিভিন্ন বিষয়ে খালেদা জিয়ার সমালোচনা করেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন বিএনপি নেতারা সহানুভূতি ও সহযোগিতা চায়! তবে আমি তাদের কাছে জানতে চাই, খালেদা জিয়া (আমাদের সঙ্গে) কী আচরণ করেছেন? ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার আগে খালেদা জিয়ার বক্তব্য কী ছিল? শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী তো দূরের কথা,কখনো বিরোধীদলীয় নেত্রীও হতে পারবে না। আওয়ামী লীগ ১০০ বছরেও ক্ষমতায় যেতে পারবে না। আল্লাহর খেলা বোঝা ভার। বরং খালেদা জিয়াই প্রধানমন্ত্রী হতে পারেননি, বিরোধী দলের নেতাও হতে পারেননি। এটা তার ওপরই ফলে গেছে।’
তিনি আরও বলেন,‘তাদের সকল কাজের পিছনে উদ্দেশ্য হল আমাদের আঘাত করা, শুধুমাত্র খুনিদের (বঙ্গবন্ধুর) পুরস্কৃত ও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েই নয়, অন্যভাবেও।’
যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির নানক ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মির্জা আজম এমপি।
আলোচনা অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মইনুল হোসেন খান নিখিল।
উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে শেখ ফজলুল হক মনি (পরশের পিতা) যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করেন।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম