March 28, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, July 2nd, 2021, 8:41 pm

খুচরায় কমেনি তেলের দাম, সবজিও চড়া

কঠোর লকডাউনে মধ্যেও কাঁচাবাজারে মানুষের ভিড়। দেখে বুঝার কোন উপায় নেই যে দেশে লকডাউন চলছে। ছবিটি শুক্রবার কারওয়ান বাজার থেকে তোলা।

নিজস্ব প্রতিবেদক :

ভোজ্যতেল পরিশোধন ও বিপণনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৪ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয়া হলেও খুচরা বাজারে তা এখনও কার্যকর হয়নি। আগের বাড়তি দামেই সয়াবিন তেল কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। শুক্রবার বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে। পাশাপাশি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে বেশিরভাগ সবজি। এমনকি সপ্তাহের ব্যবধানে কিছু সবজির দাম বাড়ার ঘটনাও ঘটেছে। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে মুরগি, ডিম, পেঁয়াজ ও আলুর দাম। গত ৩০ জুন লিটারে সয়াবিন তেলের দাম ৪ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয় ভোজ্যতেল পরিশোধন ও বিপণনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। নতুন দাম গত বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়। নতুন মূল্য অনুযায়ী, বোতলের এক লিটার সয়াবিন তেল ১৪৯ টাকা এবং খোলা এক লিটার সয়াবিন তেল ১২৫ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা। এ ছাড়া বোতলের পাঁচ লিটার তেল ৭১২ টাকা এবং খোলা পাম সুপার এক লিটার ১০৮ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা। তবে গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বোতলের এক লিটার সয়াবিন তেল ১৫৩ টাকা বিক্রি হচ্ছে। খোলা সয়াবিন তেলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৩৫ টাকায়। আর পাম সুপারের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে তেলের দামের বিষয়ে রামপুরার ব্যবসায়ী মো. শিপলু বলেন, তেলের দাম কমানোর ঘোষণার কথা শুনেছি। কিন্তু নতুন দামের তেল এখনও আমরা পাইনি। নতুন দামের তেল এলে, তখন আমরাও দাম কমিয়ে বিক্রি করব। তেলের দাম না কমার বিষয়ে প্রায় একই ধরনের কথা বলেন খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী ওমর শেখ। তিনি বলেন, আমাদের ধারণা নতুন দামের তেল আসতে আরও কয়েকদিন লাগবে। নতুন দামের তেল না আসা পর্যন্ত দাম কমার সম্ভাবনা কম। কারণ কোনো ব্যবসায়ী লোকসান দিয়ে বিক্রি করবে না। এদিকে, গত সপ্তাহে বেড়ে যাওয়া আদা বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকার মধ্যে। আর দেশি আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। এর সঙ্গে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। সপ্তাহের ব্যবধানে বেগুনের দাম কিছুটা বেড়ে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে। গত সপ্তাহে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া পাকা টমেটোর দাম বেড়ে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দামবৃদ্ধির এ তালিকায় রয়েছে গাজরও। গত সপ্তাহে যেসব বাজারে গাজরের কেজি ৮০ টাকা ছিল, সেখানে এখন ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে বরবটি, ঝিঙে, ঢেঁড়স, পটলের দাম। আগের মতো বরবটি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ঝিঙে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ থেকে ৫০ টাকা এবং পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কাঁচকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে। লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। এক কেজি কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। পেঁপের কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। এ সবজিগুলোর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। সবজির দামের বিষয়ে কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী মিলন বলেন, লকডাউনে সবজির গাড়ি আসতে সমস্যা হচ্ছে না। তবে বৃষ্টির কারণে বাজারে ক্রেতা কম। যে কারণে সবজি কম বিক্রি হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে এখন সবজি আরও বেশি দামে কিনতে হতো। খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী আসাদুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টি মাথায় নিয়ে আজ সকাল হয়েছে। বৃষ্টির কারণে ক্রেতা কম আসছে। তাছাড়া লকডাউনের কারণে অনেকে ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়ি গেছেন। আর যারা ঢাকায় আছেন তারা কম বের হচ্ছেন। স্বাভাবিকভাবেই আমাদের বিক্রি কমেছে। এদিকে, সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে ব্রয়লার, সোনালী বা পাকিস্তানি কক মুরগি এবং লাল লেয়ার মুরগির দাম। ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়। লাল লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকার মধ্যে। আর সোনালী মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৩০ টাকায়। মুরগির পাশাপাশি দাম অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের। গরুর মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে। আর খাসির মাংসের কেজি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। এর সঙ্গে গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে আলু, ডিম ও পেঁয়াজ। আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা। আর ফার্মের মুরগির ডিম ডজন বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকায়। দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে। মালিবাগ হাজীপাড়ার ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর বলেন, কয়েকদিনের মধ্যে পেঁয়াজের দাম কমতে পারে। কারণ শোনা যাচ্ছে কম দামে পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। এই পেঁয়াজ বাজারে এলে দেশি পেঁয়াজের দামও কমবে। তাছাড়া লকডাউনের কারণে অনেকে বাড়তি পেঁয়াজ কিনেছেন। এতে পেঁয়াজের চাহিদা এখন একটু কম। ফলে সামনে দাম কমার সম্ভাবনা বেশি।