May 9, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Saturday, April 27th, 2024, 2:32 pm

খুলনায় তীব্র তাপপ্রবাহে খেটে খাওয়া মানুষদের দুর্বিষহ জীবন

গত কয়েকদিনের তীব্র তাপদাহে খুলনায় অস্বস্তিকর অবস্থা বিরাজ করছে। খুলনাসহ এর পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোয় তাপদাহের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে। প্রচণ্ড তাপদাহে কোথাও কোথাও সড়কের পিচ গলে যাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গা ও যশোরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) খুলনাঞ্চলের সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায় ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি।

আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, তীব্র তাপদাহ আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকবে।

এদিকে তীব্র তাপদাহে খুলনায় খেটে খাওয়া মানুষগুলো সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন। খেটে খাওয়া মানুষগুলো পেটের দায়ে তাপদাহের প্রখর রোদেই বাধ্য হচ্ছেন কাজে বের হতে, অতিবাহিত করছেন দুর্বিষহ জীবন।

তীব্র তাপদাহে মহানগরীর মুজগুন্নী এলাকার একটি সড়কে কাজ করা দিনমজুর নজরুল ইসলাম হাওলাদার (৫৫) বলেন, ‘অভাব ছাড়া তীব্র গরমে এই রোদে কেউ কাজ করে? অভাবের তাড়নায় কাজ করতে আসছি। বউ-পোলাপান, পোলার বউ নিয়ে সংসারে খাওনের লোক ৯ জন। সবাই মিলে রায়েরমহল এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকি। কোনোরকম ডাল-ভাত খেয়ে বেঁচে আছি। কাজ না করলে ডাল-ভাতও খাওন জুঁটবে না। এত গরমের ভেতর কড়া রোদে তাই কাজ করছি ভাই।’

একই সঙ্গে কাজ করা ৫৫ বছর বয়সী আরেক দিনমজুর আব্দুল কাদের বলেন, ‘বস্তিতে ১২শ’ টাকা ভাড়া দিয়ে থাকি। স্ত্রী, দুই মেয়ে নিয়ে ৪ জনের সংসার। সংসারের রোজগার আমাকে একা করতে হয়। গরম সহ্য করতে পারছি না। এত গরমে কাজ করতে মন চায় না। কিছুক্ষণ কাজ করার পর হাঁপায় উঠি। তারপরও কাজ করতে হয়। কাজ না করলে যে পেটে খাওন জুঁটবে না।’

সড়কে কাজ করা নারী দিনমজুর বিলকিস বেগম (৫৫) বলেন, ‘পেটের দায়ে এত গরম সহ্য করে রোদে কাজ করতেছি। এত গরমে কাজ করতে মন চায় না। সংসারে ৬ জন আছি। রেলগেট কুলিবাগানে রেলের জমিতে ভাড়া থাকি। ছেলেরা আছে। তারা কাজ করে না। সংসারে অভাব। কাজ না করলে খাব কি? তাই বাধ্য হয়ে এই গরমে কাজ করছি।’

ভ্যানচালক আবুল কালাম। বয়স ৬৭ বছর। স্ত্রী সন্তান নিয়ে পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৩ জন। ফুলবাড়িগেট কুয়েট সড়কে ভ্যান চালান ৪৭ বছর ধরে। আবুল কালাম বলেন, ‘৪৭ বছরের ভেতরে এমন গরম দেখি নাই। সংসারে আয় রোজগারের কেউ নেই। তাই বাধ্য হয়ে প্রচণ্ড গরমে তাপ সহ্য করে খাটতে হচ্ছে।’

—–ইউএনবি