খুলনায় শিশুসহ সব বয়সের মানুষ ডায়রিয়া, জ্বর-সর্দি, মাথা ব্যথা, শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানা গেছে। শিশুদের মধ্যে নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কিউলাইটিসসহ নানা রোগ দেখা দিচ্ছে। ইতোমধ্যে খুলনা শিশু হাসপাতালসহ সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে।
খুলনা শিশু হাসপাতালের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. এস আরফিন টুটুল জানান, প্রতি বছরই আবহাওয়া বা মৌসুম পরিবর্তনের কারণে শিশুদের মধ্যে জ্বর, সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়। দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারলে কোনও সমস্যা হয় না। এ সময় আক্রান্ত শিশুদের বাড়তি যত্ন নেয়ার পাশাপাশি পুষ্টিকর খাদ্য, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। সঠিক ওষুধ প্রয়োগসহ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে চলতে হবে।
মহানগরীর বাস্তুহারার বাসিন্দা নুরজাহান জানান, সন্তানকে শিশু হাসপাতালের বহির্বিভাগে নিয়ে এসেছেন।শিশুটির কয়েকদিন ধরে জ্বর।
জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পিরোজপুর ইকড়ি গ্রামের তানভীর গত ১২ দিন ধরে শিশু হাসপাতালের তৃতীয় তলায় অবস্থান করছে। তার মা তানিয়া বেগম বলেন, ‘এখানে আসার কয়েকদিন আগ থেকে তানভীরের জ্বর হয়। ওষুধ খেয়েও জ্বর ভালো হয়নি। এখানে এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানতে পারলাম নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। প্রথম দিকে রোগীর চাপে এখানে থাকার কোনও ব্যবস্থা ছিল না। বর্তমানে চাপ কম রয়েছে।’
শিশু হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. প্রদীপ দেব নাথ বলেন, ২৭২ শয্যা নিয়ে খুলনা শিশু হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম চলছে। গত কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে শিশু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। দেনিক জ্বর, সর্দি-কাশি ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত পাঁচশর বেশি রোগীর সেবা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া প্রতিদিন প্রায় ১৫ জনের মতো ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হচ্ছেন। যদিও অন্যান্য বিভাগের তুলনায় আক্রান্তের সংখ্যা কম তবে মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত এ রোগের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি থাকে।
এদিকে খুলনা সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে রোগীদের সামলাতে অনেকটা হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। রোগীদের চাপে অনেকে এ হাসপাতালের বারন্দায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
খুলনা সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে ভর্তি রোগী রায়ের মহল এলাকার বাসিন্দা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ২৬ মার্চ দুপুরে রাস্তার পাশের একটি দোকান থেকে শরবত কিনে খাওয়ার পর থেকেই পেটব্যথা ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়। কোনোভাবে পাতলা পায়খানা না কমায় রাতে হাসপাতালে আসি। আমাকে ভর্তি করে নেয়া হয়। চারটি স্যালাইন দেয়ার পর এখন একটু সুস্থ হয়েছি। তবে শরীর এখনও খুব দুর্বল।
খুলনা সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের ইনচার্জ ডা. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, হঠাৎ গরমে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। প্রায় তিনশ রোগী ভর্তি হয়েছেন হাসপাতালটিতে। এ ছাড়া আমাদের পরামর্শে অনেকে বাড়িতে একই ধরনের চিকিৎসা নিচ্ছেন।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি