জেলা প্রতিনিধি, রংপুর (গঙ্গাচড়া):
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় টানা কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি আর উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। গত শুক্রবার রাত থেকে শনিবার পর্যন্ত তিস্তার পানি বিপদসীমা উপর দিয়ে যায়। এতে উপজেলার তিস্তা বেষ্টিত ৭ টি ইউনিয়নের চরাঞ্চলসহ নিমাঞ্চল প্লাবিত হয়। এছাড়া বড়বিল ইউনিয়নের ঘাঘট নদীর পানি বৃদ্ধি ও বৃষ্টির পানিতে নিমাঞ্চলে পানি প্রবেশ করে। ফলে এসব এলাকায় বসবাসরত প্রায় ৪ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। তলিয়ে যায় রোপনকৃত আমান চারাসহ বিভিন্ন ফসল ও সবজি খেত। ভেসে যায় পুকুর, জলাশয়, মৎস খামারের মাছ। ভাঙন দেখা দেয় বিভিন্ন এলাকায়। পানিবন্দি মানুষজন খাবার সমস্যা দেখা দেয়।
অন্যদিকে তিস্তার পানি কমলেও চরাঞ্চল ও নিমাঞ্চলের ধীর গতি নেমে যাওয়ায় মানুষজন পানিবন্দি অবস্থায় দিন-রাত কাটাচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা পানিবন্দি মানুষজনের খোঁজ খবর এলাকা ঘুরে নিচ্ছন। ইউপি চেয়ারম্যানদের সাথে ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখেছেন। খোলা হয়েছে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে কন্ট্রোল রুম। পানিবন্দি মানুষকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে দেওয়া দেওয়া হয়েছে বরাদ্দ। এর মধ্যে লক্ষীটারী ইউনিয়ন ও নোহালী ইউনিয়নে ৫ মেক্ট্রিকটন করে এবং আলমবিদিতর ও গজঘন্টা ইউনিয়নে ৩ মেক্ট্রিটন করে জিআর চাল।
শনিবার ও রোববার ওইসব ইউনিয়নে গিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সাথে পানিবন্দি মানুষের মাঝে ১০ কেজি জিআর চাল ও শুকনা বিতরন করছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ তামান্না ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সজিবুল করিম। শনিবার রাতে তিনি লক্ষীটারী ইউনিয়নে ও রোববার নোহালী, আলমবিদিত, গজঘণ্টা ইউনিয়নে বিতরন করেন।
এ সময় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রাবিয়া বেগম, লক্ষীটারী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী, গজঘণ্টা ইউপি চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী, নোহালী ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ আলী, আলমবিদিতর ইউপি চেয়ারম্যান মোকাররম হোসেন সুজন, অধ্যক্ষ মাওলানা রোকনউজ্জামানসহ মেম্বার ও ইউপি সচিবগণ উপস্থিত ছিলেন। তাছাড়া নোহালী ইউনিয়নের তিস্তায় বাড়ি ভেঙে যাওয়া ৩১ পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরন করা হয়। এদিকে কোলকোন্দ, গঙ্গাচড়া, মর্নেয়া ও বড়বিল ইউনিয়নে ৫ মেক্ট্রিটন করে ২০ মেক্ট্রিটন জিআর চাল রোববার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ তামান্না বলেন, সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক ইউপি চেয়ারম্যান ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় করে মনিটরিং করা হচ্ছে। পানিবন্দি মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এবং তা বিতরন করা হচ্ছে। সরকারিভাবে ত্রান সহায়তার পর্যাপ্ত বরাদ্দ আছে প্রয়োজন হলে আরো দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি