April 24, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, August 22nd, 2022, 9:26 pm

গণপরিবহনে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভাড়া আদায়ের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

র‌্যাপিড পাস নামে গণপরিবহন থেকে ডিজিটল পদ্ধতিতে ভাড়া আদায়ের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। সেজন্য ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) আওতায় একটি বিশেষায়িত কোম্পানি গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী মেট্রোরেল, বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট বা বিআরটি, লঞ্চ-ফেরি, সড়ক ও সেতুর টোল, ট্রেনসহ বেসরকারি কোম্পানির বাসেও ব্যবহার করা হবে র‌্যাপিড পাস। ফলে যাত্রীদের কাউন্টার থেকে পরিবহনের টিকিট কিনতে হবে না। সরাসরি কোনো আর্থিক লেনদেন নেই। নির্দিষ্ট ভাড়া আদায়ের মেশিনে একটি কার্ড প্রবেশ করালেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে কেটে রাখা হবে ভাড়ার টাকা। গণপরিবহনে ভাড়া আদায়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি) বিগত ২০১৮ সাল থেকেই র‌্যাপিড পাস নামে একটি ই-টিকেট চালু করেছে। সরকার এখন ওই ব্যবস্থা আরো বৃহৎ পরিসরে চালুর পরিকল্পনা করছে। ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে র‌্যাপিড পাসের জন্য কোম্পানি গঠনে অংশীদারদের কাছে প্রস্তাবনা চেয়ে এক্সপ্রেসশন অব ইন্টারেস্ট (ইওআই) আহ্বান করেছে। স্পেশাল পারপাস কোম্পানি বা এসপিসি নামে প্রাথমিকভাবে কোম্পানির নাম ঠিক করা হয়েছে। ওই কোম্পানি স্বাধীনভাবে র‌্যাপিড পাস উৎপাদন ও পরিচালনা করবে। পাশাপাশি র‌্যাপিড পাসের আর্থিক বিষয়গুলোও ওই কোম্পানির মাধ্যমে পরিচালনা করা হবে। আর সরকারের হাতে থাকবে কোম্পানির সিংহভাগ মালিকানা।
সূত্র জানায়, ডিটিসিএ একটি বেসরকারি কোম্পানি বা কনসোর্টিয়ামকে সঙ্গে নিয়ে একটি স্পেশাল পারপাস কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করতে চায়। ওই কোম্পানির প্রধান কাজ হবে র‌্যাপিড পাস পরিচালনা, ব্যবস্থাপনা, কার্ড ইস্যু, ব্যবসায়িক উন্নয়ন করা। র‌্যাপিড পাসে ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট কার্ড টেকনোলজি এবং পেমেন্টের জন্য একাধিক আউটলেটের ব্যবস্থা রাখা হবে। কার্ডটি ব্যবহার করে সাধারণ মানুষ মেট্রোরেল, বাস, রেলওয়ে, টোলসহ বিভিন্ন সেবা নিতে পারবে। একই সঙ্গে ব্যবহারকারীরা র‌্যাপিড পাস দিয়ে বিভিন্ন ধরনের পণ্য ও সেবা গ্রহণ করতে পারবে। র‌্যাপিড পাসে একজন ব্যবহারকারী একসঙ্গে ন্যূনতম ১০০ থেকে সর্বোচ্চ ২ হাজার টাকা পর্যন্ত রিচার্জ করতে পারবেন। কার্ডটি ডিটিসিএ অনুমোদিত গণপরিবহন সেবা যেমন- বাস, ট্রেন, ফেরি ইত্যাদি ব্যবহার করা যাবে। যাত্রার আগে এবং গন্তব্যে পৌঁছার পর শুধু ডিভাইসে (হ্যান্ডি রিডার-রাইটার) ট্যাপ করতে হবে। ভাড়া স্বয়ংক্রিয়ভাবে আইসি কার্ড থেকে কেটে নেয়া হবে। দ্বিতীয়বার ট্যাপ করার পর যাত্রী ডিভাইস থেকে একটি মুদ্রিত প্রাপ্তি পাবে। ওই প্রাপ্তির মধ্যে আইসি কার্ডের বর্তমান ব্যালান্স, টিকিটের মূল্য দেয়া থাকবে। সরকার আগামী ডিসেম্বরে নির্মাণাধীন উত্তরা-মতিঝিল-কমলাপুর মেট্রোরেলের উত্তরা-আগারগাঁও অংশ চালুর পরিকল্পনা করছে। আর মেট্রোরেলের মধ্য দিয়েই র‌্যাপিড পাসের ব্যাপক ব্যবহার শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে।
এদিকে এ বিষয়ে ডিটিসিএর প্রোগ্রামার (ক্লিয়ারিং হাউজ অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) পারভেজ হাওলাদার জানান, র‌্যাপিড পাস কার্ডটা এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যা সব ধরনের গণপরিবহনে ব্যবহার করা যাবে। মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে কার্ডটির বহুমুখী ব্যবহার করা। চলতি বছরের ডিসেম্বরে মেট্রোরেল প্রকল্পের একাংশ চালু হওয়ার কথা রয়েছে। মেট্রোরেলে ওই টিকিট ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হবে। ভবিষ্যতে বিআরটি, লঞ্চ, টোল কালেকশন, রেল সবারই ওই ব্যবস্থায় আসার সুযোগ রয়েছে। এমনকি প্রাইভেট কোম্পানির বাসও ওই কার্ডের আওতায় আসতে পারবে। স্পেশাল পারপাস কোম্পানি গঠনের জন্য সম্প্রতি ডিটিসিএ অংশীদার নির্বাচনের জন্য এক্সপ্রেসশন অব ইন্টারেস্ট আহ্বান করেছে। ধাপে ধাপে পরের কাজগুলো করা হবে। অংশীদার নির্বাচনের র‌্যাপিড পাস কার্যক্রমটি বৃহৎ পরিসরে শুরু করা হবে।