জেলা প্রতিনিধি, গাইবান্ধা :
এলাকাবাসির অভিযোগের প্রেক্ষিতে গাইবান্ধা সদর উপজেলার খামার বোয়ালি গ্রামে অবৈধভাবে নির্মিত ইটভাটায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট। তিনি সাত দিনের মধ্যে নির্মাণাধীন ভাটা অপসারণের নির্দেশ দিলেও ১৩ দিনেও তা অপসারণ করা হয়নি। বরং নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নির্দেশ উপেক্ষা করে ইটভাটা নির্মাণ কাজ অব্যাহত রাখা হয়েছে।
রোববার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, চারদিকে সবুজের সমারোহ। আমন ধান কাটার পর বোরো রোপা লাগানোর জন্য জমি তৈরি হচ্ছে। গ্রামে বর্তমানে ইট পোড়াতে চুল্লি নির্মাণ কাজ চলছে। ইট তৈরির জায়গা প্রস্তুত করা হচ্ছে।
এলাকাবাসি জানায়, গাইবান্ধা শহরের ডিবি রোডের ব্যবসায়ী আয়ান মিয়া প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এই গ্রামের তিন ফসলি প্রায় ছয় একর জমি ইজারা নিয়ে অবৈধভাবে ইটভাটা নির্মাণ করছেন। এনিয়ে চলতি জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকে গাইবান্ধা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) লিখিত অভিযোগ দেন এলাকাবাসি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইউএনও মো. আবদুর রাফিউল আলমের নির্দেশে গত ১০ জানুয়ারি ভাটা মালিকের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এসময় নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো. শহিদুল ইসলাম ১৬ জানুয়ারির মধ্যে ভাটাটি অপসারণের নির্দেশ দেন। তা না হলে বুলডোজার দিয়ে ভাটা গুড়িয়ে দেওয়া হবে। সেই নির্দেশের ১৩ দিন পেরিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু রোববার পর্যন্ত নির্মাণাধীন ভাটা অপসারণ করা হয়নি। উল্টো ইটভাটা নির্মাণ কাজ অব্যাহত রাখা হয়েছে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, এই ভাটার রেজিষ্ট্রেশন, পরিবেশ ছাড়পত্র নেই। নেই জেলা প্রশাসনের অনুমতি। ভাটাটি নির্মিত হলে পরিবেশ নষ্ট হবে। ভাটা মালিক প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ বাঁধা দিতে সাহস পাচ্ছেন না।
অভিযোগকারি খামার বোয়ালি গ্রামের জলিল মিয়া বলেন, জনবসতিপুর্ণ এলাকায় ভাটা নির্মিত হলে আবাদি জমি, ফসল ও গাছপালা নষ্ট হবে। ভাটা নির্মাণ বন্ধে ইউএনওকে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। একই গ্রামের জোব্বার আলী বলেন, ভাটায় দীর্ঘদিন ইট পোড়ানো হলে এলাকার অনেক গাছপালা মরে যাবে। প্রতিবছর ফসলের ক্ষতি হবে। তারপরও অবৈধভাবে ভাটা হচ্ছে। আরেক অভিযোগকারি কবির হোসেন বলেন, নিয়মানুযায়ী অনাবাদি জমিতে ভাটা স্থাপনে রেজিষ্ট্রেশন, পরিবেশ ছাড়পত্র ও জেলা প্রশাসনের অনুমতি বাধ্যতামুলক। কিন্তু ওই ভাটা মালিকের কোনটিই নেই। উপরন্ত প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে কয়েকদিন ধরে আবাদি জমিতে পুনরায় ভাটার কাজ চলছে।
এসব বিষয়ে গাইবান্ধা সদর ইউএনও মো. আবদুর রাফিউল আলম বলেন, জরিমানা আদায়ের পর নির্মাণাধীন ভাটার চুলা অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়। তারপরও কাজ চললে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি