ফেরদৌস জুয়েল, গাইবান্ধা :
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি’র মোবাইল নম্বর কোলন করে মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নে নৌকা মার্কার ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী রেজওয়ানুর রহমান মুন্সীর কাছ থেকে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি প্রতারক চক্র। নির্বাচনে জিতিয়ে দেয়ার কথা বলে ছয়টি বিকাশ একাউন্টের মাধ্যমে আজ বিকেলে প্রতারকরা ওই পরিমান টাকা হাতিয়ে নেয় বলে গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি ইজার উদ্দীন জানান। এ ব্যাপারে পুলিশের পক্ষ থেকে থানায় একটি সাধারণ ডায়রি ও ভুক্তভোগির পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, আজ সকালের দিকে একটি প্রতারক চক্র গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার(ওসি) সরকারি মোবাইল নম্বর(০১৩২০১৩২৪৮০) কোলন করে। তারা ওই নম্বর থেকে মহিমাগঞ্জ, কোচাশহর ও শালমারা ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর কাছে মোবাইল করে নির্বাচনে জিতিয়ে দেওয়ার জন্য পরিকল্পনার কথা জানায়। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতারক চক্রের এক সদস্য অন্য একটি মোবাইল নম্বর থেকে “আমি ওসি বলছি, নির্বাচনে জিতিয়ে দেওয়ার জন্য কিভাবে কাজ করা হবে তা ম্যাজিষ্ট্রেট স্যারের কাছে শোনেন” অপর এক প্রতারক ম্যাজিষ্ট্রেট সেজে মহিমাগঞ্জ ইউপি নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী রেজওয়ানুর রহমান মুন্সীর সাথে কথা বলেন। এসময় ম্যাজিষ্ট্রেট ছদ্মবেশী প্রতারক নির্বাচনে জেতার জন্য ছয়টি মোবাইল(বিকাশ একাউন্ট) নম্বর দিয়ে টাকা পাঠাতে বলে। একই ভাবে কোচাশহর ও শালমারা ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর কাছে টাকা পাঠানোর কথা বলে ফোন করা হয়।
এদিকে নির্বাচনে জিতিয়ে দেয়ার প্রলোভন পেয়ে আজ বিকেলে মহিমাগঞ্জ ইউপি নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী রেজওয়ানুর রহমান মুন্সী ছয়টি বিকাশ একাউন্টে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা পাঠায়। কিন্তু নৌকা প্রতীকের কোচাশহর ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু সুফিয়ান ও শালমারা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী আনিসুর রহমান টাকা না পাঠিয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার(ওসি) সাথে কথা বলেন। তারা ওসি ইজার উদ্দীনের কাছে টাকা পাঠানো সংক্রান্ত বিষয়ে ফোনের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। কিন্তু ওসি ইজার উদ্দীন কিছুই জানেন না এমন কথা বলার পর বিষয়টি নিয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের মধ্যে যোগাযোগ শুরু হয়। বিকেল মহিমাগঞ্জ ইউপি নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী রেজওয়ানুর রহমান মুন্সী ছয়টি বিকাশ একাউন্টে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা পাঠানোর কথা জানিয়ে ওসি ইজার উদ্দীনের কাছে ফোন করেন। কিন্তু ওসি ইজার উদ্দীন টাকা চাওয়ার কথা কিছুই জানেন না বললে চেয়ারম্যান প্রার্থী রেজওয়ানুর রহমান মুন্সী যেসব নম্বরে টাকা পাঠিয়েছেন তাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু ততক্ষনে ওই ছয়টি বিকাশ একাউন্ট এবং ম্যাজিষ্ট্রেট পরিচয় দিয়ে যে নম্বর থেকে টাকা পাঠাতে বলা হয় সেই নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যায়। পরে জানা যায় প্রতারক চক্র ওসি’র মোবাইল নম্বর কোলন করে প্রতারনা করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। দিনভর ঘটনা ঘটলেও বিষয়টি গণমাধ্যম কর্মীরা জানতে পারেন আজ সন্ধ্যার পর।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি ইজার উদ্দীন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। প্রতারকদের গ্রেফতারে কাজ করা হচ্ছে। আর যাতে কেউ প্রতারনার শিকার না হয় সে জন্য সোসাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারনা চালানো হচ্ছে এবং সরাসরি প্রার্থীদের সতর্ক করে দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি