ফেরদৌস জুয়েল, গাইবান্ধা:
গাইবান্ধায় পুলিশ অফিসারের পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশ পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকুরি নিয়ে দিবে মর্মে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ টাকা লেনদেন করার সময় হাতে নাতে দুই প্রতারককে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ১৪ নভেম্বর বিকেলে তাদের গ্রেফতার করা হলেও আজ মঙ্গলবার বিকেলে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সহকারি পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা নওশাদ মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে-শহরের থানাপাড়া এলাকায় মোঃ হারুন সরকারের ছেলে মোঃ আসাদুজ্জামান সরকার ওরফে মিলন(৩৬) ও সদর উপজেলার খোলাহাটী ইউনিয়নের উত্তর খোলাহাটী(ঢোলমাড়া) গ্রামের মৃত আতাউল্লাহ ব্যাপারীর ছেলে মোঃ সাহেদুল ইসলাম ওরফে জার্জ্জু(৪৮)। আসাদুজ্জামান সরকার ওরফে মিলন ‘গাইবান্ধা প্রতিদিন’ নামে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের সম্পাদক ও ‘নিরাপদ যানবাহন চাই’ ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান। তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, বাংলাদেশ পুলিশ ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল/২০২১ পদে প্রার্থীদের শারীরিক মাপ ও ফিজিক্যাল ইনডুরেন্স টেস্ট পরীক্ষা চলছিল। ১৪ নভেম্বর বিকেল পৌনে ৪টার দিকে পুলিশ লাইন সংলগ্ন বোর্ড বাজার এলাকায় মৌলত মিয়ার হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট এর ভিতরে গ্রেফতারকৃতরাসহ অজ্ঞাত ৩/৪ জন প্রতারক বাংলাদেশ পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকুরি নিয়ে দিবে মর্মে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ টাকা লেনদেন করছিলো। গোপন সংবাদে ভিত্তিতে গাইবান্ধার গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল মৌলত মিয়ার হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে প্রতারকরা পালানোর চেষ্টা করলে আসাদুজ্জামান সরকার ওরফে মিলন ও মোঃ সাহেদুল ইসলাম ওরফে জার্জ্জুকে আটক করে। তাদের সাথে থাকা অজ্ঞাত ৩/৪ জন কৌশলে পালিয়ে যায়। এসময় আটককৃতদের কাছ থেকে নগদ টাকাসহ কনস্টেবল পদের একাধিক প্রার্থীর প্রবেশপত্রের অনলাইন কপি, জীবন বৃত্তান্ত, শিক্ষাগত যোগ্যতা, জন্ম সনদ, নাগরিকত্ব সনদ উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে গোয়েন্দা পুলিশের সহকারি পরিদর্শক শাহজাহান মিয়া বাদি হয়ে আসাদুজ্জামান সরকার ওরফে মিলন ও মোঃ সাহেদুল ইসলাম ওরফে জার্জ্জুসহ অজ্ঞাত ৩/৪ জনের বিরুদ্ধে গাইবান্ধা সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে টাকার বিনিময়ে পুলিশের চাকুরি নিয়ে দেওয়ার কথা বলে স্বীকার করেছে। এ ছাড়া আমামিদ্বয়সহ অজ্ঞাত আসামিরা পরস্পর যোগসাজস করে বাংলাদেশ পুলিশের স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নিয়োগ চলাকালীন সময়ে উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের পরিচয় দিয়ে নিরীহ প্রার্থী ও তাদের অভিভাবকদের ভুল বুঝিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে পুলিশের চাকুরী নিয়ে দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে টাকা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তাদের হেফাজতে রাখে। যা পেনাল কোড ১৮৬০ সালের ১৭০/৪০৬/৪২০ ধারায় অপরাধের সামিল।
গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মাসুদুর রহমান আজ বিকেলে জানান, আসাদুজ্জামান সরকার ওরফে মিলন ও মোঃ সাহেদুল ইসলাম ওরফে জার্জ্জুকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি