November 16, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, April 10th, 2022, 8:46 pm

গাইবান্ধায় হাসান হত্যার পুনঃতদন্তের দাবি, প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সভা

জেলা প্রতিনিধি, গাইবান্ধা :
গাইবান্ধার আলোচিত জুতা ব্যবসায়ী হাসান আলী হত্যাকান্ডের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী ছিল আজ রোববার। এ উপলক্ষে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় মামলার পুনরায় তদন্ত করে পুন:অভিযোগপত্র প্রদানের দাবি জানানো হয়েছে। গাইবান্ধা শহরের ডিবি রোডের গানাসাস মিলনায়তনে রোববার সকাল ১১টায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভা থেকে এ দাবি জানানো হয়। হাসান হত্যার প্রতিবাদ মঞ্চ এই সভার আয়োজন করে।
এতে সভাপতিত্ব করেন মঞ্চের সমন্বয়ক বিশিষ্ট রাজনৈতিক আমিনুল ইসলাম। বক্তব্য দেন, কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারি সাধারণ সম্পাদক ও জেলা সিপিবির সভাপতি মিহির ঘোষ, গণফোরাম জেলা সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা ময়নুল ইসলাম, জেলা জাসদের সভাপতি গোলাম মারুফ ও সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক, জেলা আইনজীবি সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, সাম্যবাদী আন্দোলনের জেলা সদস্য সচিব মনজুর আলম, জেলা সিপিবি’র সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য গোলাম রব্বানী, কৃষক শ্রমিক জনতালীগের জেলা সভাপতি মোস্তফা মনিরুজ্জামান, ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্কর্সবাদী) জেলা সভাপতি রেবতী বর্মণ, ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সাধারণ সম্পাদক মিলন কান্তি সরকার, বাসদের জেলা সদস্য সচিব সুকুমার মোদক, জেলা জাতীয় শ্রমিক জোটের সাধারণ সম্পাদক নুর মোহাম্মদ, জেলা ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি ওয়ারেছ সরকার, জাসদ ছাত্রলীগ জেলা সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ কবীর, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল জেলা সভাপতি শামীম আরা প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, হাসান হত্যার ঘটনায় পুলিশের সংশ্লিষ্টতা থাকলেও অভিযোগপত্রে পুলিশকে কৌশলে বাদ দেওয়া হয়েছে। তাই এটা অসম্পূর্ণ অভিযোগপত্র। সেই সাথে এই মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুষ লেনদেনের ফোনালাপের অডিও প্রকাশিত হওয়ায় প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। বক্তারা এই হত্যাকান্ডের ন্যায় বিচারের স্বার্থে নতুন করে তদন্ত করে পুন:অভিযোগপত্র প্রদানের দাবি করেন। সেই সাথে ঘুষ লেনদেনের ফোনালাপের অডিওর বিষয়েও তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেন।
মামলার বিবরণে বলা হয়, গতবছরের ১০ এপ্রিল সকালে গাইবান্ধা সদর উপজেলার নারায়নপুর এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা মাসুদ রানার (৪২) বাসা থেকে হাসানের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রায় দুইবছর আগে রানার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা ঋণ নেন শহরের স্টেশন রোডের জুতা ব্যবসায়ী হাসান আলী। এই টাকা সুদাসলে ১৯ লাখে দাঁড়ায়। সুদের টাকা দিতে না পারায় গত বছরের ৫ মার্চ লালমনিরহাট থেকে হাসানকে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে আসেন মাসুদ রানা। তিনি হাসানকে নিজ বাসায় একমাসের বেশি আটকে রেখেছিলেন। এনিয়ে নিহতের স্ত্রী বিথী বেগম বাদি হয়ে সদর থানায় মাসুদ রানাসহ তিনজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। অপর দুইজন হচ্ছেন শহরের স্টেশন রোডের জুতা ব্যবসায়ী রুমেল হক ও খলিলুর রহমান।
প্রথমে মামলার তদন্ত করেন গাইবান্ধা সদর থানার তৎকালীন পরিদর্শক (অপারেশন) সেরাজুল ইসলাম। পরে গাইবান্ধা ডিবি পুলিশের তৎকালীন ওসি ও বর্তমানে সুন্দরগঞ্জের কঞ্চিবাড়ি তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক মানষ রঞ্জন দাস দায়িত্ব পান। সর্বশেষ মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তার দায়িত্ব পান তৎকালীন গাইবান্ধা ডিবি পুলিশের ওসি ও সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি মো. তৌহিদুজ্জামান। তাঁর সঙ্গে মামলার আসামির দুই স্বজনের টাকা লেনদেনের ফোনালাপ ফাঁস হয়। মামলার অভিযোগপত্র থেকে এক আসামির নাম বাদ দেওয়া ও আইনের ধারা কমিয়ে দিতে টাকা লেনদেনের কথাবার্তা হয়। গত ৭ মার্চ মাসুদ রানাসহ তিন আসামিকেই অভিযুক্ত করে আদালতে সংশোধিত অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়।