রাজধানীর উত্তরায় বিআরটি প্রকল্পের ফ্লাইওভারের গার্ডার চাপায় প্রাইভেট কারে থাকা শিশুসহ পাঁচজন নিহতের প্রত্যেকের জন্য এক কোটি করে মোট পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ কেনো দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, সড়ক ও জনপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ, রোড অ্যান্ড হাইওয়ে ডিপার্টমেন্টের চিফ ইঞ্জিনিয়ার, ঢাকা বাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানিসহ সংশ্লিষ্টদেরকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জাকারিয়া খানের করা এক রিটের শুনানি নিয়ে বুধবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন।
আদেশে উন্নয়নমূলক কাজ করতে গিয়ে জনগণের নিরাপত্তার জন্য বিআরটি কর্তৃপক্ষ গত পাঁচ বছরে কী কী ব্যবস্থা/পদক্ষেপ নিয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে আগামী ৬০ দিনের মধ্যে একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আদালতে এই রিটের পক্ষে শুনানি করবেন আইনজীবী এবিএম শাহজাহান আকন্দ মাসুম।
গত ১৫ আগস্ট বিকেলে রাজধানীর উত্তরা তিন নম্বর সেক্টরের প্যারাডাইস টাওয়ারের সামনে নির্মাণাধীন বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ক্রেন থেকে গার্ডার ছিটকে পড়ে প্রাইভেটকারের দুই শিশুসহ নিহত পাঁচ যাত্রী নিহত হন। গাড়িটিতে মোট সাতজন যাত্রী ছিলেন। এরমধ্যে দুই শিশু, দুই নারী ও একজন পুরুষ মারা যান। নিহতরা হলেন— রুবেল (৫০), ঝর্ণা (২৮), ফাহিমা, জান্নাত (৬) ও জাকারিয়া (২)। আহত নবদম্পতি হৃদয় (২৬) ও রিয়ামনি (২১) উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরেছেন।
এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শেগুফতা তাবাসসুম আহমেদ ফ্লাইওভারের গার্ডার চাপায় প্রাইভেটকারে থাকা শিশুসহ পাঁচজন নিহত হওয়ার ঘটনার পর কী কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা জানাতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। রিটে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে জনগণের চলাফেরায় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতের নির্দেশনা চাওয়া হয়। শুনানি নিয়ে বুধবার রিট আবেদনটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
এছাড়া একই ঘটনায় আজ সকালে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) ও আইন সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) পক্ষে অ্যাডভোকেট সৈয়দা নাসরিন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় একটি রিট করেন। রিটে দুই শিশুসহ নিহত পাঁচ যাত্রীর প্রত্যেকের পরিবারকে এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এ রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, সড়ক ও জনপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), রোড অ্যান্ড হাইওয়ে ডিপার্টমেন্টের চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে। এ রিট আবেদনটির ওপর আগামীকাল বৃহস্পতিবার শুনানি হতে পারে বলে জানান সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম