April 23, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, January 2nd, 2022, 8:50 pm

গোবিন্দগঞ্জে এক কেন্দ্রে ভোট পড়েছে শতভাগ!

ফাইল ছবি

জেলা প্রতিনিধি, গাইবান্ধা :
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন পরিষদে গতবছরের ২৬ ডিসেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে শালমারা ইউনিয়নের বাইগুনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে শতভাগ ভোটা দেখানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই কেন্দ্রে পরিকল্পিত ও অবৈধভাবে ভোটগ্রহনের অভিযোগ এনে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। ওই কেন্দ্রের ফলাফল বাতিলের দাবিতে গত ২৮ ডিসেম্বর পরাজিত স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আইয়ুব আলী এই অভিযোগ দেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বাইগুনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোট ভোটার ২ হাজার ১১৭ জন। কিন্তু এই কেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়েছে বলে দেখানো হয়েছে। প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ঘোষিত ফলাফল বিবরণী অনুযায়ি এই কেন্দ্রে মোট দুই হাজার ১১৭ ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগের বিজয়ী প্রার্থী আনিছুর রহমান নৌকা প্রতীকে দুই হাজার, স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আইয়ুব আলী চশমা প্রতীক ১০ ভোট, আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু তাহের ৫ ভোট, আমির হোসেন ১০ ভোট, ইমরান হোসেন ১৫ ভোট, রাসেল মোসারফ ৭ ভোট ও মিহিলিকা বেগম ৩ ভোট পান। এই কেন্দ্রে ৬৭ ভোট বাতিল দেখিয়ে শতভাগ ভোট পড়েছে বলে দেখানো হয়। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আনিছুর রহমান তার লোকজন দ্বারা ওই কেন্দ্রে পরিকল্পিত ও অবৈধভাবে ভোটগ্রহন করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
অভিযোগকারি ও পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আইয়ুব আলী বলেন, ভোটগ্রহন শেষে ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা তাড়াহুড়ো করে ফলাফল সিট তৈরি করেন। এ বিষয়ে দায়িত্বরত ভোটগ্রহন কর্মকর্তা, প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যদের মৌখিকভাবে অভিযোগ দিয়েও তিনি কোন প্রতিকার পাননি। আইয়ুব আলীর অভিযোগ, একটি কেন্দ্রে কোনভাবেই শতভাগ ভোট পড়তে পারে না। তিনি বলেন, পাঁচবছর পর নির্বাচন হলো। এরমধ্যেই অনেকে মারা গেছেন, কেউ দূরে চাকরি করেন ও অনেকে ব্যস্ততার কারণে ভোট দিতে পারেননি। এসব ভোট নৌকা প্রতীকের পক্ষে পরিকল্পিত ও অবৈধভাবে দেওয়া হয়েছে। তাই ওই কেন্দ্রের ফলাফল বাতিল করে পুনরায় নির্বাচন দিতে হবে।
শতভাগ ভোট পড়ার বিষয়ে বাইগুনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) মহিমাগঞ্জ শাখার কর্মকর্তা সাকিল আহম্মেদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তিনি সাংবাদিক পরিচয় শুনে ভুল নম্বর বলে ফোন কেটে দেন।
তবে অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করেন ওই ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহ আলম পারভেজ। তিনি মুঠোফোনে বলেন, ওই কেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়ার বিষয়টি অস্বাভাবিক। তবে কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তার দেওয়া ভোটের হিসাব করেই ফলাফল ঘোষণা করা হয়ে থাকে। এবিষয়ে তাদের করনীয় কিছু নেই। এটা আইনের মাধ্যমে সমাধান হতে পারে। এ জন্য সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা অভিযোগকারি গাইবান্ধা জেলার নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ও আপিল ট্রাইব্যুনালে মামলা করতে পারবেন। এক্ষেত্রে ভোটের গেজেট প্রকাশ হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে। ট্রাইব্যুনাল সেই আবেদন ১৮০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করবেন। সেখানে সুবিচার পাননি মনে করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ট্রাইব্যুনালের রায়ের ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবেন। আপিল ট্রাইব্যুনালও পরবর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে আবেদন নিষ্পত্তি করবেন।
এই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিজয়ী প্রার্থী আনিছুর রহমান ভোটগ্রহনের দিন প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাঁর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।