জেলা প্রতিনিধি, সিলেট :
সিলেটের গোয়াইনঘাটের মাত্র ৪ শতক জমিতে বারী-১২ জাতের বেগুন চাষ করে বাজিমাত করেছেন আলীরগ্রামের কৃষক প্রদীপ কুমার দাস মিন্টু। উর্বর মাটি এবং সঠিক পরিচর্যায় বেড়ে ওঠা বারী বেগুনের গাছগুলোতে প্রচুর ফলনও হয়েছে বাম্পার।প্রতিটি গাছেই ৬-৭টি এসব বড় বড় বেগুন ধরে মাটি পর্যন্ত ঝুলে রয়েছে।
উপজেলার ১২নং ইউনিয়ন পরিষদের আলীরগ্রামে পিরিজপুর-সোনারহাট সড়কের পূর্বপাশে নেটের বেড়া দেয়া কয়েক বিঘা জমি।ফলানো আছে শিম, লাউ, টমেটো কাচা মরিচ, ফুলকপি, বাঁধা কপি, ধনে পাতাসহ শীতকালীন নানা শাক সবজি।এরমধ্যে মালচিং পেপার দিয়ে গাছের গোড়া ভরাট করে ১০ শতক জমিতে টমেটো ও ৪ শতক জমিতে ফলানো হয়েছে বারী-১২ জাতের উচ্চ ফলনশীল জাতের বেগুন।সবুজ এসব বেগুন দেখতে অত্যন্ত সুন্দর ও ওজনে একেকটি প্রায় ১ কেজি। সুস্বাদু এই জাতের বেগুন গাছগুলো নুয়ে পড়েছে বেগুনের ওজনের কারণে।
গোয়াইনঘাট উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন জাতের বেগুনের চাষাবাদ থাকলেও বারী-১২ জাতের এই বেগুন আর কোথাও ফসলের মাঠে চোখে পড়েনি। শনিবার সরজমিন পরিদর্শনকালে কথা হয় এই সফল কৃষকের সঙ্গে।
তিনি জানান, ইউটিউবে বারী-১২ জাতের বেগুনের চাষাবাদ, ফলনসহ লাভজনক দিক দেখেন। অনেকটা শখের বসে তিনি এ বেগুন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেন।
বারী-১২ জাতের বেগুন বীজ সংগ্রহে সিলেটে তার এক বন্ধুর সহযোগিতা নেন।ওই বন্ধুর সহযোগিতায় ও উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার খোয়াজ হোসেনের সার্বিক তত্ত্বাবধান ও পরামর্শে গড়ে তোলা হয় এ বেগুন শেড।
বিগত এক মাস থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত ৪০ টাকা দরে তার উৎপাদিত বেগুন বিক্রি থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় এসেছে।আগামী বছর বৃহৎ পরিসরে লাভ বেশকিছু বেগুন বীজ সংগ্রহের জন্য গাছ যে পরিমাণ বেগুন ও ফুল আছে তাতে আসন্ন রমজান মাসে বাড়তি প্রচুর টাকা আয় হতে পারে বলে আশাবাদী এ কৃষক।
ছোটবেলা থেকে বাবা স্বর্গীয় (মৃত) প্রমথ রঞ্জন দাসের হাতেই কৃষিতে তার হাতেখড়ি জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারি পর্যাপ্ত দিক নির্দেশনা, প্রণোদনা ও সহযোগিতা পেলে স্থানীয় কৃষিতে বিপ্লব ঘটনা সম্ভব।
উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, গোয়াইনঘাটের বিভিন্ন স্থানে শীতকালীন শাক সবজিসহ রবিশস্য খুবই ভালো হয়েছে। মাটি উর্বর থাকায় ফলনও ভালো হয়ে থাকে। বারী-১২ জাতের বেগুন চাষ লাভজনক, পোকার আক্রমণ কম এবং ক্ষতিসাধিত হয়ে থাকে।আলীরগ্রামে কৃষক মিন্টুর রোপিত বাগানে আমাদের সব ধরনের সহযোগিতা পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিলুর রহমান বলেন, সরকার সারা দেশের ন্যায়, গোয়াইনঘাটের কৃষকদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করে আসছে। বিনামূল্যে সার, বীজ প্রণোদনা, কৃষি উপকরণ সব কিছু দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে। বারী-১২ জাতের বেগুন চাষের একটি ইতিবাচক সংবাদ গোটা উপজেলার কৃষির জন্য একটি ভালো খবর। ফসল উৎপাদন ও সর্বোপরি কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতায় গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসন সেবার মানসিকতা নিয়ে পাশে আছে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি