নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঘন কুয়াশায় দেশের বিমানবন্দরগুলোতে নির্বিঘ্নে বিমান ওঠানামায় উন্নত প্রযুক্তি বসানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ওই লক্ষ্যে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) আসন্ন জানুয়ারিতেই হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইনস্ট্রুমেন্ট ল্যান্ডিং সিস্টেম (আইএলএস) ক্যাটাগরি-১ থেকে ২-এ উন্নীত করার কাজ শুরু করতে যাচ্ছে। বর্তমানে প্রায় প্রতিদিনই হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ দেশের সবক’টি বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ ওঠানামায় বিঘœ ঘটছে। এমন অবস্থায় পাইলটরা বাধ্য হয়ে কলকাতা বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ অবতরণ করছে। তাতে এয়ারলাইন্সগুলোর ল্যান্ডিং চার্জ বাড়ার পাশাপাশি যাত্রীরাও চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। দেরিতে ফ্লাইট ছাড়ায় সময়মতো গন্তব্যে যেতে না পেরে কেউ কেউ কানেকটিং ফ্লাইট মিস করছেন। মূলত বাংলাদেশ এখনো মান্ধাতার আমলের প্রযুক্তিতে পড়ে থাকায় শীত মৌসুমে কুয়াশার কারণেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঘন কুয়াশার মধ্যে রানওয়ের অবস্থান দেখা যাবে এমন প্রযুক্তি নেই। আশির দশকে হযরত শাহজালালে যে ক্যাটাগরি-১ আইএলএস চালু হয়েছিল এখনো তাই রয়েছে। অনেক সময় ৮০০ মিটারের মধ্যে রানওয়ের অবস্থান কম দেখা গেলেও ফ্লাইট অবতরণ করা সম্ভব। কিন্তু পাইলটরা ওই ঝুঁকি নিতে চান না। সেজন্য এবার তারা শাহজালালের পরিবর্তে কলকাতা বা দেশের অন্য কোনো বিমানবন্দরে ফ্লাইট অবতরণ করছে। সম্প্রতি এক দিনেই পাঁচটি ফ্লাইট কলকাতা ও সিলেট বিমানবন্দরে নেমেছে। যশোর ও সৈয়দপুরে ঘন কুয়াশায় বিমানবন্দরের ভিজিবিলিটি কমে যাওয়ায় কয়েকটি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট ঢাকায় ফিরে এসেছে। জানুয়ারিতে শীত আরো বাড়বে। বেড়ে যাবে কুয়াশার ঘনত্বও। ওই সময় উড়োজাহাজ উড্ডয়ন-অবতরণে সমস্যা হবে। যদিও বিশ্বের অনেক দেশ বিমানবন্দরে আইএলএস ক্যাটাগরি-৩ ব্যবহার করছে। সেক্ষেত্রে কুয়াশার মধ্যে ভিজিবিলিটি শূন্য থাকলেও উড়োজাহাজ ওঠানামায় কোনো সমস্যা হয় না।
সূত্র জানায়, হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের আইএলএস ক্যাটাগরি-১ থেকে ২-এ উন্নীত প্রকল্প বাস্তবায়নে চলতি বছরের ১০ মার্চে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ২৩ কোটি ৩২ লাখ ৯০ হাজার টাকার ওয়ার্ক অর্ডার দেয়া হয়। আইএলএস উন্নীতের পাশাপাশি বিমানবন্দরের রানওয়ের সেন্ট্রাল লাইনে লাইটিং ও ইলেকট্রিক সিস্টেমেও পরিবর্তন করা হচ্ছে। ওই কাজ আসন্ন জানুয়ারিতে করা হবে। তখন ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ থাকবে। আইএলএস ক্যাটাগরি-২ বসানো এবং লাইটিংয়ের কাজ শেষ হলে ঘন কুয়াশার মধ্যেও পাইলটরা উড়োজাহাজ ওঠানামা করাতে পারবে। রানওয়ের ভিজিবিলিটি ২০০ মিটার হলেও কোনো অসুবিধা হবে না। আর উড়োজাহাজ ওঠানামার সময় বিদ্যুৎ গেলে ৮ সেকেন্ডের মধ্যে রানওয়ের অ্যাপ্রোস লাইট সচল হবে। বর্তমানে শাহজালালের আইএলএস ক্যাটাগরি-১ হওয়ায় ঘন কুয়াশার মধ্যে উড়োজাহাজ অবতরণ ঝুঁকিপূর্ণ। সেজন্যই পাইলটরা ঝুঁকি না নিয়ে কিছু ফ্লাইট কলকাতা বিমানবন্দরে অবতরণ করছে।
এদিকে এ বিষয়ে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান জানান, ‘বিমানবন্দরের আইএলএস পরিবর্তন করে ক্যাটাগরি-১ থেকে ২-এ উন্নীত করা হচ্ছে। ওই বিষয়ে জোর প্রস্তুতি চলছে। আশা করা যায় দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ