November 23, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, September 22nd, 2024, 3:58 pm

ঘাঘট নদে ৮টি ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের মহোৎসব!

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর :

রংপুরের মিঠাপুকুরে ঘাঘট নদে ৮টি ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। একটি প্রভাবশালী চক্র প্রায় মাস খানেক ধরে বালু উত্তোলন করলেও রহস্যজনক কারণে প্রশাসন নিরব ভুমিকা পালন করছেন। এছাড়াও ওই নদের আরেকটি পয়েন্টে স্কেবেটর দিয়ে কেটে নেওয়া হচ্ছে নদী পাড়ের বালু। এরফলে নদ পাড়ের ফসলী জমিগুলোতে ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের ঘাঘট নদের ইসলামপুর মজিদের ঘাটে ৮টি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। নদের পূর্বপাড়ে প্রায় ১ মাস ধরে বালু উত্তোলন করছেন একটি প্রভাবশালী চক্র। চক্রটি স্থানীয় বাসিন্দাদের ম্যানেজ করে নদী কেটে বালু উত্তোলন করলেও প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেনা কেউ। প্রভাবশালীদের মধ্যে রয়েছে মিলন মিয়া, লেবু মিয়া, রুস্তম আলী ও লাভলু মিয়া। তারা ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নদের গতিপথ পরিবর্তণের জন্য বালু উত্তোলন করছেন বলে দাবি করেছেন। ইসলামপুর গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, দিনেরাতে বালু উত্তোলন করলেও আমরা প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছিন। এলাকার কিছু লোক মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তাদের বালু উত্তোলনের সুযোগ করে দিয়েছে।

অপরদিকে ওই ইউনিয়নের ইমাদপুর আদর্শপাড়া মাঝিপাড়া এলাকায় স্কেবেটর দিয়ে নদের পাড়ে কেটে নিয়ে যাচ্ছেন বৈরাতীহাটের প্রভাবশালী বালু খেকো শফিকুল ভাংড়ী। তিনি ১৫ দিন ধরে নদের পাড় কেটে বালু বিক্রি করছেন। স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র রয়েছে তার সাথে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, নদের পাড়ে কেটে বালু উত্তোলন করলেও আমরা প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছিনা। শফিকুল ভাংড়ী বেশ প্রভাবশালী ও কয়েকজন স্থানীয়কে ম্যানেজ করে তিনি দিনে শতাধীক ট্রাক্টর বালু উত্তোলন করছেন।

স্থানীয় ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নদী হতে বালু উত্তোলন করে গ্রামের কয়েকটি পয়েন্টে স্তুপ করে রাখা হচ্ছে। প্রতিদিন শত শত ট্রাক্টরে করে বালু বিক্রি করছে চক্রটি। প্রতি ট্রাক্টর ১ হাজার ৬শ টাকা দরে বিক্রি করছেন তারা। স্তুপ আকারে রয়েছে প্রায় অর্ধকোটি টাকার বালু। এছাড়াও, স্থানীয়ভাবে একটি রাস্তার সংস্কারের জন্য কয়েক হাজার ট্রাক্টর বালু সরবরাহ করছেন শফিকুল ভাংড়ী। এজন্য তিনি নদের পাড় কেটে বালু দিচ্ছেন ওই রাস্তায়।

বালু উত্তোলনকারী শফিকুল ইসলাম ভাংড়ী বলেন, নদের পাড়ের জমির মালিকেরা আমার কাছে ট্রাক্টর প্রতি বালু বিক্রি করছেন। সেগুলো স্কেবেটরের মাধ্যমে কেটে রাস্তায় সরবরাহ করছি। ইসলামপুর মজিদের ঘাটে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনকারী মিলন মিয়া, লেবু মিয়া, রুস্তম আলী ও লাভলু মিয়া জানান, স্থানীয়ভাবে কিছু মানুষ নদের গতিপথ পরিবর্তনের জন্য বালু উত্তোলন করার অনুমতি দিয়েছেন। একারণে আমরা বালু উত্তোলন করছি।

মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, ইসলামপুর মজিদের ঘাট ও ইমাদপুর আদর্শপাড়া মাঝিপাড়ার কয়েকজন নদের বালু উত্তোলন করছে। তবে, কেউ কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি।
মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহি অফিসার বিকাশ চন্দ্র বলেন, দু’একদিন আগে নদের বালু উত্তোলনের খবর পেয়েছি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে অভিযান পরিচালনা করা হবে।