March 29, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, July 19th, 2021, 7:55 pm

ঘাটগুলোতে ঘরমুখো মানুষের ঢল

তিল ঠাঁই নেই লঞ্চে। ঈদ উল আযহা উপলক্ষে রাজধানী থেকে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার জন্য লঞ্চের ভিতরে ও ছাদে ছিল যাত্রীরা। ছবিটি সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে সোমবার তোলা।

নিজস্ব প্রতিবেদক :

ঈদযাত্রার শেষদিকে ফেরি ও লঞ্চঘাটগুলোতে দেখা দিয়েছে মানুষের উপচেপড়া ভিড়। এর মধ্যে সোমবার (১৯ জুলাই) দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার ঘরমুখো মানুষের উপচেপড়া ঢল নামে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে। শিমুলিয়া লঞ্চঘাটে যাত্রীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হয় কর্তৃপক্ষকে। শৃঙ্খলা রক্ষায় ঘাটজুড়ে মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ।

এদিকে, ফেরিঘাটেও ছিল যানবাহনের দীর্ঘ সারি। সোমবার (১৯ জুলাই) সকাল থেকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছোট-বড় যানবাহনে করে হাজার হাজার মানুষ আসতে শুরু করেন শিমুলিয়ায়।

পোশাক কারখানা ছুটি হওয়ায় যাত্রীর চাপ বাড়ে কয়েকগুণ। লঞ্চ, ফেরি যে যেভাবে পারছিলেন পদ্মা পাড়ি দিচ্ছিলেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, অর্ধেক যাত্রী ধারণের কথা থাকলেও ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী নিয়েই অধিকাংশ লঞ্চ চলাচল করে। হাজার হাজার মানুষের ভিড়ে উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি, সামাজিক দূরত্ব। এদিকে, নদীতে তীব্র স্রোত থাকায় শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে ফেরি পারাপারে বেশি সময় লাগে। আর ঘাটে গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ বেড়ে যাওয়ায় ফেরিতে যানবাহন পারাপারে বেগ পেতে হয়। ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় অবস্থান করছিল ছয় শতাধিক ব্যক্তিগত গাড়ি ও পণ্যবাহী ট্রাক। এছাড়া, ঘাট অভিমুখে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতেও ছিল পণ্যবাহী ট্রাকের দীর্ঘ সারি।

বিআইডাব্লিউটিএ ও বিআইডাব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে ১৪টি ফেরি ও ৮৪টি লঞ্চ চলাচল করছিল। বিআইডাব্লিউটিএ শিমুলিয়া নদী বন্দর কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে শেষ সময়ে মানুষের চাপ পড়েছে। নৌরুটে বর্তমানে ৮৪টি লঞ্চ দিয়ে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। সকাল থেকে বেলা ১০টা পর্যন্ত নৌরুটে লঞ্চের ১১২টি ট্রিপ হয়েছে। এসব লঞ্চে আনুমানিক ১২ হাজার যাত্রী পদ্মা পারপার করেছে। লৌহজং থানার ওসি আলমগীর হোসাইন বলেন, গার্মেন্টস বন্ধ দেয়ার কারণে ঈদ যাত্রীদের যাত্রীদের চাপ অত্যাধিক। আমাদের পক্ষ থেকে যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে ও লঞ্চে নির্ধারিত যাত্রী তোলার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পুরো ঘাটজুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন স্তরের তিন শতাধিক সদস্য মোতায়েন রয়েছে।


অন্যদিকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও আরিচা ঘাট এলাকায় সোমবার (১৯ জুলাই) সকাল থেকেই ছিল ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। পাটুরিয়া-ঢাকা মহাসড়কের চরের ডাঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার যানবাহনের দীর্ঘ সারি। এতে যাত্রীদের ঘাট এলাকায় এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থাকতে হয়। ভোর থেকেই ঘাট এলাকায় ভিড় বাড়তে শুরু করে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় বাড়তে থাকে। লঞ্চ ও ফেরিতে স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে গাদাগাদি করে যাত্রীরা নদী পাড়ি দিয়ে পারাপার হন।

এদিকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে নদীতে প্রচ- স্রোতে ফেরি চলাচলে সময় বেশি লাগে। আরিচা-কাজীরহাট নৌরুটে ফেরি স্বল্পতা এবং যানবাহন বৃদ্ধির কারণে ঘাট এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। আরিচা অফিসের বিআইডব্লিউটিসির ডিজিএম জিল্লুর রহমান জানান, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও আরিচা-কাজীরহাট নৌরুটে ফেরি স্বল্পতা ও নদীতে প্রচন্ড স্রোতের কারণে ফেরি চলাচলে সময় বেশি লাগায় ঘাট এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ১৬টি ও আরিচা কাজীরহাট নৌরুটে মাত্র ৩টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করায় ঘাট এলাকায় এ যানজট দেখা দেয়। শিবালয় থানার ওসি ফিরোজ কবির জানান, আসন্ন ঈদ উপলক্ষে ঘাট এলাকা দিয়ে ঘরমুখো যাত্রীরা নির্বঘ্নে গৌন্তব্যে পৌঁছানোর লক্ষ্যে প্রায় ৬ শতাধিক পুলিশসহ বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন নিয়োজিত রয়েছে।

যাত্রীদের মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন সুলতানা বলেন, লঞ্চে সামাজিক দূরত্ব ও দুই সিটে একজন এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রীদের পারাপার করতে বলা হয়েছে। কোনো লঞ্চে স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে গাদাগাদি করে যাত্রী পারাপার করা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।