ফরিদপুরের সালথা ও আলফাডা উপজেলার কয়েকটি গ্রামে ঘূর্ণিঝড়ে অন্তত বসতঘর বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার আগে উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের সানাতুদী গ্রামে এই ঝড় হয়। এতে অসংখ্য গাছপালা ভেঙে ও উপড়ে পড়েছে। অনেক জায়গায় সড়কের উপরে গাছ পড়ে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে অন্ধকার হয়ে যায় পুরো গ্রাম।
স্থানীয় বাসিন্দা দেলায়ার হোসেন জানান, টানা বৃষ্টির মধ্যে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার আগে সানাতুদী গ্রামে ভয়াবহ ঝড় আঘাত হানে। প্রচণ্ড বেগে মাত্র তিন মিনিটের ঝড়ের আঘাতে গ্রামের লিটু মুন্সী, ফারুক মুন্সী, মুরাদ মুন্সী, দবির মুন্সী, কাইউম মুন্সী, কামাল ঠাকুর, জামাল ঠাকুর, জমিলা বেগম, নিরু বেগম, ছানা কাজী, আতি কাজী ও হাফেজ মাসগির মুন্সির অন্তত ১৮টি বসতঘর বিধস্ত হয়। এ ছাড়া গাছপালা ভেঙে ব্যাপক ক্ষতি হয়। ক্ষতিগ্রস্তরা প্রায় সবাই কৃষক।
ঝড়ের সময় ওই গ্রামের বিধবা লিপি বেগমের একমাত্র সম্বল সেমিপাকা একটি বসতঘরের ওপর বিশাল একটি গাছ পড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। এ সময় লিপি বেগম বাথরুমে আশ্রয় নেন প্রাণে বাঁচতে। অসংখ্য গাছপালা ভেঙে সড়কের ওপর চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গ্রামে বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ হয়ে গেছে।
স্থানীয় বল্লভদী ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুর রহমান শাহিন ঝড়ে গ্রামবাসীর ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে উপজেলা পরিষদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, একইদিন বিকাল সোয়া ৩টার দিকে আলফাডাঙ্গা উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিদ্যাধর, ব্রাহ্মণ-জাটিগ্রাম, বেজিডাঙ্গা ও টগরবন্দ ইউনিয়নের মালা, কৃষ্ণপুর-টগরবান, তিতুরকান্দি গ্রামে ঘুর্ণিঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন- জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার। এর আগে তিনি ভাঙ্গায় ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে সরকারি সহায়তা পৌঁছে দেন।
জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করতে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের সর্বাত্মক সাহায্য সহযোগিতা করা হবে।
আলফাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহিদুল হাসান জাহিদ বলেন, সারাদিনের প্রবল বর্ষণের পর বিকালের দিকে মাত্র কয়েক মিনিট ঘূর্ণিঝড় স্থায়ী হয়। এতে দুই ইউনিয়নের ৬টি গ্রামের প্রায় শতাধিক কাঁচাপাকা বাড়িঘর ও কয়েকশো গাছপালা উপড়ে যায়। বিস্তীর্ণ জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। অনেকেই ঘরবাড়ি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান নেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে কাজ শুরু করেছি।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আলফাডাঙ্গা সাব জোনাল অফিসের এজিএম ফাহিম হাসান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের ফলে সেখানে কয়েকটি গ্রামে বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুতের তিনটি খুটি ভেঙে গেছে। অনেকগুলো আঁকাবাকা হয়ে পড়েছে। আজ-কালের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া সম্ভব হবে।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি