অনলাইন ডেস্ক :
বঙ্গোপসাগরের ঘূর্নিঝড় ইয়াস প্রবল ঘুর্ণিঝড়ে রুপ নিয়েছে। ইয়াসের বর্তমান গতিপথ ভারতের উড়িষ্যা উপকূলের দিকে। দিক পরিবর্তন না করলে বাংলাদেশের খুলনা অঞ্চলে তীব্র আঘাতের সম্ভাবনা কম, বলছে আবহাওয়া অফিস। এবস্থায় দেশের সবক’টি সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
সংস্থাটির পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ জানান, ঘূর্ণিঝড় এই গতিপথে থাকলে বাংলাদেশে আঘাত হানবে না। তবে যদি ইয়াসের গতি পথ পরিবর্তন করে পশ্চিমবঙ্গ বা কলকাতা মুখী হয় তবে, এটি বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানবে।
উপকূলে আঘাত হানার সময় ঘূর্ণিঝড়ের গতি থাকবে ১২০ কিলোমিটার থেকে ১৪০ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড় ইয়াস বর্তমানে ১৫ কিলোমিটার গতিতে অগ্রসর হচ্ছে। এটি আরও গতি সঞ্চার করবে। বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দরগুলোর জন্য দুই নম্বর সতর্কতা দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
পশ্চিমবঙ্গের দীঘা, পারাদ্বীপ ও বালেশ্বরের মধ্যবর্তী এলাকা দিয়ে সর্বশক্তি নিয়ে ঘূর্ণিঝড়টির আঘাত হানার পূর্বাভাস দিয়েছে সেখানকার আবহাওয়া অফিস। এরই মধ্যে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে। এর এক ধাপ কম, অর্থাৎ অরেঞ্জ এলার্ট জারি হয়েছে বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায়।
এই ,মুহূর্তে দীঘা থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরে জলভাগের উপর আরও শক্তি সঞ্চয় করছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। তবে এর গতিপথ এখনও একই রয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। এরই মধ্যে কলকাতাসহ বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়েছে ভারি বৃষ্টিপাত।
আগামীকাল বুধবার দুপুর থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত খুলনা উপকূলে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি থাকতে পারে।
এদিকে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে আবহাওয়াবিদ এ কে এম রুহুল কুদ্দুস বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, গত ছয় ঘন্টায় ঘূর্ণিঝড়টি নয় কিলোমিটার গতিতে এগিয়েছে এবং এটি আরো শক্তি সঞ্চয় করবে।
তবে এই ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশে আঘাত হানার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস
উত্তর-মধ্য বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপটি থেকে ঘুর্নিঝড় সৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছিল আবহাওয়া অধিদপ্তর। শক্তি সঞ্চয় করে এটি প্রবল ঘুর্নিঝড় ইয়াসে রুপ নেয়। ঘুর্নিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের গতিবেগ ৬২ কিলোমিটার যা ঝড়ো হাওয়া আকারে ৮৮ কিলোমিটার গতি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তবে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এটি আইলা বা আম্পানের মত সুপার সাইক্লোনে রুপ নেয়ার সম্ভাবনা নেই। ঘুর্নিঝড় ইয়াস বর্তমানে উত্তর পশ্চিমে অগ্রসর হয়ে ভারতের উড়িষ্যা উপকূলের দিকে যাচ্ছে। ঝড়ের গতিপথ যদি উত্তর-পূর্ব দিকে পরিবর্তন হয়, তবেই বাংলাদেশের দক্ষিনের জেলাগুলোতে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই, এখন পর্যন্ত দেশে শক্তিশালী আঘাতের সম্ভাবনা দেখছে না আবহাওয়া অধিদপ্তর।
গভীর নিম্নচাপ থেকে সোমবার ভোরে এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর পূর্বে ঠিক করা তালিকা অনুযায়ী এটির নাম হয় ইয়াস। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সাইক্লোন সংক্রান্ত আঞ্চলিক সংস্থা এসকাপের তালিকা অনুযায়ী এই নামটি প্রস্তাব করেছিল ওমান। এর অর্থ ‘হতাশা’।
এদিকে দেশে তীব্র দাবদাহের পর সোমবার রাত পৌনে ৯টার দিকে বজ্রপাত, দমকা হাওয়াসহ নামে অপেক্ষার বৃষ্টি। এতে গত কয়েক দিনের ভ্যাপসা গরমের অবসান ঘটেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব এখনও বাংলাদেশের সীমানায় আসেনি। মঙ্গলবার সন্ধ্যা নাগাদ এর প্রভাব শুরু হতে পারে। এখন যে বৃষ্টি হচ্ছে, তা স্থানীয় আবহাওয়ার কারণে। বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রা কিছুটা কমে আসবে।
আরও পড়ুন
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ