April 25, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, May 12th, 2023, 7:58 pm

ঘূর্ণিঝড় মোখা: কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার, বেড়েছে ঘূর্ণন

ফাইল ছবি

দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় কেন্দ্রীভূত হচ্ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা। এর কেন্দ্রস্থলে বাতাসের গতিবেগ বাড়ছে এবং রবিবার বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

শুক্রবার সকালে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের কাছে সাগর উত্তাল থাকবে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি আগামী কয়েক ঘণ্টায় আরও তীব্র হতে পারে এবং এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়েছে।

১২ মে সকাল ৬টায় এটি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে এক হাজার ৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার বন্দর থেকে এক হাজার ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা বন্দর থেকে এক হাজার ৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রাবন্দর থেকে এক হাজার ২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে কেন্দ্রীভূত হয়।

কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্র বন্দরসমূহকে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

এদিকে, উপকূলীয় জেলা কক্সবাজারের স্থানীয় প্রশাসন ইতোমধ্যেই ভূমিধসের আগে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনার জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে, কারণ জেলাটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

জেলার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মুহাম্মদ শাহীন ইমরান বলেছেন, ঘূর্ণিঝড়টি এই অঞ্চলে আঘাত হানার আগে সম্ভাব্য প্রাণহানির কথা বিবেচনা করে তারা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে।

তিনি বলেন, পাঁচ লাখ ৫০ হাজার ৯৯০জনকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য মোট ৫৭৬টি ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে এবং একটি জরুরি নিয়ন্ত্রণ কক্ষও খোলা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, দুর্যোগের সময় মানবিক সহায়তার জন্য ১০ লাখ ৩০ হাজার টাকা, ৪৯০ টন চাল ও ১৯৪ বান্ডিল ঢেউটিন প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

তাছাড়া দুর্যোগ মোকাবিলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে এক লাখ টাকা, ৫০ টন চাল, ৭ টন শুকনো খাবার বরাদ্দ করা হয়েছে বলে জানান ডিসি।

খুলনায় স্থানীয় প্রশাসন দুই লাখ ৭৩ হাজার ৮৫০ জনকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য ৪০৯টি সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত রেখেছে এবং বাগেরহাট জেলায় কমপক্ষে ৪৪৬টি সাইক্লোন শেল্টার তৈরি করা হয়েছে, যাতে জনগণের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং জেলায় ৯৮ শতাংশ বোরো ধান কাটা হয়ে গেছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় তিন ধাপে প্রস্তুতি নিয়েছে ভোলা জেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. তৌফিক-ই-লাহী চৌধুরী জানান, ভোলায় আটটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।

তিনি জানান, ৭৪৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যাতে প্রায় পাঁচ লাখ ৬৩ হাজার মানুষ আশ্রয় নিতে পারে। এছাড়াও, ১৩ হাজার ৬০০ সিপিপি এবং পাঁচ হাজার রেড ক্রিসেন্ট স্বেচ্ছাসেবক স্ট্যান্ডবাইতে রয়েছেন।

সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেদের প্রায় ৯০ শতাংশ ইতোমধ্যেই তীরে ফিরে এসেছে এবং বাকি জেলেদের ফিরিয়ে আনতে মৎস্য বিভাগ ও কোস্টগার্ড কাজ করছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোখা’র সময় ও পরবর্তী প্রভাব মোকাবিলায় জনগণকে পরিস্থিতি সম্পর্কে সতর্ক করতে এবং তাদের প্রস্তুত করতে নদী উপকূলীয় এলাকায় সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাচ্ছে চাঁদপুর স্থানীয় প্রশাসন।

—ইউএনবি