সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’র কারণে চাঁদপুরে প্রায় ৪৪২ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালালউদ্দীন।
দুর্যোগপূর্ণ উত্তর কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায় জরিপে দেখা গেছে, জেলার ৮ উপজেলায় আলু, সরিষা, গম, বোরো বীজতলা, পেঁয়াজ, মরিচ ও আগাম শীতকালীন শাক সবজি ও অন্যান্য ফসলসহ ক্ষতি হয়েছে চার হাজার ৫৫৫ হেক্টর ফসল। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আগাম শীতকালীন শাক-সবজির। এতে কৃষকদের প্রায় ৪২৬ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
সরিষায় সাত কোটি আড়াই লাখ টাকা, আলু ক্ষেতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় পাঁচ কোটি ৪১ লাখ টাকার। অন্যান্য বিভিন্ন জাতের ফলের ক্ষতি হয়েছে তিন কোটি সাড়ে ৪২ লাখ টাকার। পেঁয়াজের ক্ষতি হয়েছে ২১ লাখ টাকার। বোরো বীজতলার চার লাখ ১৫ হাজার টাকার, মরিচের এক লাখ ৬৫ হাজার টাকার ও গমের ক্ষতি হয়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকার।
জেলায় সবর্মোট ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ৫৭ হাজার ৭৪ জন। এর মধ্যে শাকসবজির চাষির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ১৭ হাজার ৬৩০ জন। সবচেয়ে কম গম চাষি ১৯৫ জন।
সদরের আশিকাটি, কুমারডুগি, লোদেরগাঁও ও আশপাশের ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা জানান,অধিকাংশ কৃষকই ঋণ করে আলুসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ করেছিলেন। গতবার আলুর বাম্পার ফলনে এবার সবাই উদ্ধুদ্ধ হয়ে আলু চাষ করেছিলেন। ‘জাওয়াদ’র কারণে এসব কৃষকদের মাথায় হাত। কীভাবে ঋণের কিস্তি শোধ করবেন, তা নিয়ে চিন্তিত তারা।
চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালালউদ্দীন বলেন, চাঁদপুরে কোনো কৃষকের কৃষি বা শস্য বীমা নেই। শস্য বীমার জন্য তাদের আগ্রহী ও সচেতন করা প্রয়োজন। অন্যান্য জেলা ও হাওর অঞ্চলেও অনেক কৃষকের শষ্যবীমা আছে। কিন্তু চাঁদপুরের কৃষকদের শষ্যবীমা নেই, এটা দুঃখজনক ।
তিনি জানান, এবার আলু,সরিষা,গম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করার সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আউশ ফসল উৎপাদনে প্রণোদনামূলক কর্মসূচি গ্রহণের মতামত দেন তিনি। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বলেও ধারণা করছেন এই কৃষি কর্মকর্তা।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি