চট্টগ্রামের একটি বিদ্যালয়ের ২ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ না নিয়েও পাস করেছে। এমনকি উভয়ই জিপিএ-৫ পেয়েছে। চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় বাঁশখালী উপজেলায় চাম্বল উচ্চ বিদ্যালয়ের ২ পরীক্ষার্থী এক বিষয়ে লিখিত পরীক্ষা না দিয়েও পাস করেছে।
অবশ্য পরে ওই ২ শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন করে তাদের ফেল দেখানো হয়েছে। মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণে তাদের ফলাফল পরিবর্তন হয়েছে। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে এই ফল প্রকাশ করা হয়।
এর আগে ৮ জুন পরীক্ষা না দিয়েও পেলেন জিপিএ-৫, এমন সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর নজরবিহীন এ ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। একটি বিষয়ের পরীক্ষায় অনুপস্থিত থেকে কীভাবে তারা পাস করল, তা নিয়ে শিক্ষাবোর্ডের কর্তারাও রীতিমতো ‘অবাক’ হয়ে যান। এরপর তদন্তে নামে শিক্ষাবোর্ড। মঙ্গলবার (১২ জুন) পুনঃনিরীক্ষণের ফলে এই ২ শিক্ষার্থীকে ফেল দেখানো হয়েছে।
জানা যায়, এসএসসি পরীক্ষার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে নৈর্ব্যক্তিক ও ব্যবহারিকে ২৫ নম্বর করে মোট ৫০ নম্বরের পরীক্ষা হয়। ২৮ ফেব্রুয়ারি ওই বিষয়ের নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষা ছিল। ৩০ মিনিটের নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষায় কেন্দ্রেই উপস্থিত হননি ২ শিক্ষার্থী। পরীক্ষা ছিল না মনে করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি পরীক্ষায় অংশ নেননি তারা। পরে তারা তাড়াহুড়ো করে কেন্দ্রে পৌঁছালে দেখতে পান নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষা শেষ করে পরীক্ষার্থীরা বের হচ্ছেন।
অথচ ১২ মে প্রকাশিত এসএসসির ফলাফলে দেখানো হয়, তারা ২ জন আইসিটি বিষয়ের পরীক্ষায় জিপিএ ৩ দশমিক ৫ পেয়েছেন।
শিক্ষাবোর্ডের কর্তারা বলছেন, ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায় ২ জনকেই তাদের ব্যবহারিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ দেখিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্র (বাঁশখালী-১) থেকে নম্বরপত্র পাঠানো হয়। একইভাবে অনুপস্থিত ২ শিক্ষার্থীর উত্তরপত্র জমা না হওয়া সত্ত্বেও তত্ত্বীয় (নৈর্ব্যক্তিক) পরীক্ষায়ও সর্বোচ্চ নম্বর দিয়ে তাদের ৩ দশমিক ৫ পাইয়ে দেন বোর্ড পরীক্ষকরা।
এ বিষয়ে বাঁশখালী আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের কেন্দ্র সচিব রতন চক্রবর্তী শিক্ষাবোর্ডকে জানিয়েছেন, ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে পরীক্ষার দিন ওই দুই শিক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলেন। তারা সেদিন কেন্দ্রেও আসেনি। আমরা দুই শিক্ষার্থীর অনুপস্থিতির তথ্য পরীক্ষার দিনই বোর্ডে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু পরীক্ষায় অংশ না নেওয়া ওই দুই শিক্ষার্থী কীভাবে ৩ দশমিক ৫ পেল তা বুঝতে পারছি না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর এএমএম মুজিবুর রহমান বলেন, ‘বোর্ডে পরীক্ষার ফলাফল প্রস্তুত করার সঙ্গে যারা যুক্ত, তাদের একটা ভুলের কারণে এটা হয়েছে। পরীক্ষার ফলাফল প্রস্তুত করতে গেলে তো ভুল-ত্রুটি থাকে। এই বিষয়টি আমাদের শৃঙ্খলা কমিটিতে উঠবে।’
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর রেজাউল করিম বলেন, ‘ফল তৈরিতে কিছু ছোট ভুল ক্রটি হয়, তবে এ ধরনের ভুল খুবই মারাত্মক। এটা অমার্জনীয় কাজ। যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে বোর্ডের অর্ডিন্যান্স, ১৯৬১ অনুযায়ী বোর্ড নিজে ব্যবস্থা নেবে। প্রয়োজনে ফৌজদারি ব্যবস্থাও নেওয়া হতে পারে।’
—–ইউএনবি
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম