ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে দেশের যুবকদের সংগঠিত করতে ১৯০৯ সালে চট্টগ্রামের বকশীর হাটের ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর চালু করেছিলেন বলীখেলা। এরপর ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রতি ১২ বৈশাখ লালদীঘি ময়দানে হতো জব্বারের বলীখেলা।
তবে মহামারি করোনার কারণে ২০২০-২০২১ সালের বলীখেলাটি আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। পরের বছর ২০২২ সাল থেকে আবারও নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে জব্বারের বলীখেলা।
এবারের বলীখেলা আয়োজনের জন্য ইতোমধ্যে স্থানীয় ব্যবস্থাপনা কমিটি সব প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানা যায়। মুসলমানদের রমজান, ঈদ ও বৈশাখী মেলা এবারে একত্রিত হয়ে গেল।
এ বছর জব্বারের বলীখেলার ১১৫তম আসর লালদিঘী ময়দানে আগামী ২৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বলীখেলা উপলক্ষে আগামীকাল ২৪ এপ্রিল থেকে ২৬ এপ্রিল ৩ দিনের বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হবে। বাঙালি সংস্কৃতি ঐতিহ্যবাহী আব্দুল জব্বারের এই বলীখেলাকে কেন্দ্র করে লালদীঘির আশপাশের প্রায় কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মেলা বসতে শুরু করেছে।
ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এসে নগরীর আন্দরকিল্লা, বক্সিরহাট, লালদীঘি, কোতোয়ালি, জেল রোড় এলাকায় সড়কের পাশে নানা পসরা সাজিয়ে বিক্রি শুরু করেছেন।
এবারও মেলায় কয়েক লাখ মানুষের সমাগম ঘটবে এমনটি আশা আয়োজকদের।
মেলা আয়োজক কমিটির সভাপতি জহর লাল হাজারী বলেন, ‘১৯০৯ সালে এই মেলার প্রথম আয়োজন হয়। এরপর থেকে কখনও বন্ধ হয়নি। তবে ২০২০ ও ২০২১ সালে কোভিড সংক্রমণের কারণে জব্বারের বলীখেলা ও মেলার আয়োজন হয়নি। এরপর ২০২২ সালে বলীখেলা ও মেলার আয়োজন করা হয়। আগামী ২৫ এপ্রিল ঐতিহ্যবাহী লালদিঘী ময়দানে ১১৫তম আসর শুরু হবে। প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে একদিন আগে থেকেই বলীরা চট্টগ্রামে অবস্থান করবেন। সারা দেশের লাখ লাখ মানুষ মেলায় অংশ নেবে।’
তিনি বলেন, ‘এ বলীখেলা ও বৈশাখী মেলাকে সামনে রেখে চট্টগ্রামসহ সারা দেশের মানুষের মধ্যে আগ্রহ ও উদ্দীপনা বিরাজ করে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার গ্রামে-গঞ্জে বলীখেলা, গরুর লড়াই, ঘোড়দৌড়সহ বিভিন্ন লোকসংস্কৃতি যুগ যুগ ধরে চলে আসছে।’
গ্রামীণ এ মেলাতে এ অঞ্চলের মানুষের গৃহস্থালীর নানা ব্যবহার্য পণ্য-সামগ্রী বিক্রির জন্য আনা হয়। বছরব্যাপী এ পেশার সঙ্গে জড়িত মানুষগুলো নানাজাতের গৃহস্থালীর জিনিসপত্র তৈরি করে। লালদীঘির বলীখেলার সাদৃশ্যে লোকসংস্কৃতির মেলা জেলা-উপজেলা ও গ্রামে-গঞ্জে ৩-৪ দিন কখনও কখনও এক সপ্তাহের জন্য বসে। সেই লোকসংস্কৃতি ও খেলাসমূহ স্থানীয় জনগণ নানা জাতের ধর্ম-গোত্র-পেশার মানুষ উপভোগ করেন। ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে বাঙালি জাতি এসব মেলাতে একাকার হয়ে আনন্দের সঙ্গে সংস্কৃতির নানা আয়োজন উপভোগ করে আসছেন।
—–ইউএনবি
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি