জেলা প্রতিনিধি:
দশম সংসদ নির্বাচনের বার্ষিকীতে চট্টগ্রামে মানববন্ধন করতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে বিএনপি নেতাকর্মীরা। বুধবার (৫ জানুয়ারী) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে এ সংঘর্ষের সময় ঢিলের আঘাতে চার পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে দলটির ৪৪ নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের অষ্টম বার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে এই প্রতিবাদী মানববন্ধনের আয়োজন করেছিল নগর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি। সেই নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি প্রতিবছর দিনটি পালন করে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে। চট্টগ্রাম নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি) মো. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, তাদের মানববন্ধন করার কথা ছিল। সবসময় প্রেসক্লাবের সামনের ফুটপাতে মানববন্ধন করা হয়। কিন্তু আজ তারা রাস্তা ব্লক করেছিল। যান চলাচল স্বাভাবিক করতে তাদের রাস্তা ছাড়তে অনুরোধ করি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা ইট নিক্ষেপ শুরু করে। আজ প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক ছিল তারা। এতে চারজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
এর মধ্যে আমাদের অতিরিক্ত উপকমিশনার (দক্ষিণ) আমিনুল ইসলামের মাথা ফেটেছে। পাঁচটি সেলাই দিয়ে উনাকে বাসায় পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ৪৪ জনকে আটক করা হয়েছে জানিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা মুজাহিদ বলেন, দোশীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ। এ বিষয়ে নগর বিএনপির একজন জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, আজ সমাবেশে প্রচুর লোক সমাগম হয়। পুলিশ রাস্তায় গাড়ি চালানোর কথা বলে সমাবেশে বাধা দেয়। এতে নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে। আমাদের ৪৯ জনকে আটক করা হয়েছে। যদিও এখন পর্যন্ত পুলিশ বলছে ৪৪ জন আটক। আমাদের ১০-১২ জন কর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশের সাথে সংঘর্ষ চলাকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী মানববন্ধনে বলেন, বর্তমানে দেশ এমন এক প্রেক্ষাপটে উপনীত হয়েছে যেখানে কোনো গণতন্ত্র নেই। সরকার ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারী গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়াকে এখনো পরিপূর্ণ মুক্তি দেননি। তিনি এখন মারাত্মক অসুস্থ। সংবিধানে যেখানে সবার চিকিৎসা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে, সেখানে বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত করেছে সরকার। নতুন ইসি গঠনের সংলাপের প্রসঙ্গ ধরে আমীর খসরু বলন, সরকার এখন যে আলোচনা করছে সেটি আগামী নির্বাচনের ভোট ডাকাতির আলোচনা। এই আলোচনা প্রহসনের, এই আলোচনা জনগণ মানে না। আমাদেরকে বর্তমানে কঠিন প্রেক্ষাপট মোকাবেলা করতে হচ্ছে, সামনের সময়গুলো যে কত কঠিন হবে তা অনুধাবন করা যায়। তবে এটা শুধু বিএনপির সমস্যা নয়। দেশের মানুষের সমস্যা। দেশের গণতন্ত্র মুক্তির সংগ্রামে বিএনপির নেতৃত্বে জাতিকে এগিয়ে আসতে হবে। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের পরিচালনায় মানববন্ধন কর্মসূচিতে অন্যান্যের মধ্যে দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জাফরুল্ ইসলাম চৌধুরী, দক্ষিন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, নগর বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ আজিজ, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মিয়া ভোলা, অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার, এস এম সাইফুল আলম, নাজিমুর রহমান, শফিকুর রহমান স্বপন, কাজী বেলাল উদ্দীন, ইয়াসিন চৌধুরী লিটন, শাহ আলম, ইস্কান্দার মির্জা, আবদুল মান্নান বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি