চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় ১৬ জনকে আসামি করে আরও একটি পাল্টা মামলা দায়ের হয়েছে। সোমবার (১ নভেম্বর) রাতে নগরীর চকবাজার থানায় এ পাল্টা মামলা করেন কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মাহমুদুল হাসান। তিনি চমেক ক্যাম্পাসে সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। এ নিয়ে সংঘর্ষের পর ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি দুটি মামলা হয়েছে।
সোমবার দায়ের করা মামলার আসামিরা হলেন- জাকির হোসেন সায়াল, মঈনুল ইসলাম, জুলফিকার মোহাম্মদ শোয়েব, মাহিন আহমেদ, ইমাম হাসান, মোহাম্মদ শরীফ, সৌরভ দেবনাথ, সাজু দাস, আহমেদ সিয়াম, ইমতিয়াজ আলম, মো. হাবিবুল্লাহ হাবিব, সাজেদুল ইসলাম হৃদয়, মো. সাইফুল্লাহ, অভিজিৎ দাস, মো. ফাহাদুল ইসলাম, মো. তৌফিকুর রহমান ইয়ন। আসামিরা শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে চমেক ক্যাম্পাসে পরিচিত।
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস জাহান বলেন, গত শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) দিনগত রাতে চমেকের প্রধান ছাত্রাবাসে সংঘর্ষের ঘটনায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিদের সবাই পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা এবং মামলাটি তদন্ত করা হচ্ছে।
এর আগে গত শনিবার (৩০ অক্টোবর) দিনগত রাতে চমেকের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী মো. তৌফিকুর রহমান বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। তৌফিক চমেক ক্যাম্পাসে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
ওই মামলার আসামিরা হলেন- সাদ মোহাম্মদ গালিব (২১), আহসানুল কবির রুমন (২১), জাহিদুল ইসলাম জিসান (২১), মাহাদি বিন হাশিম (২৪), আসিফ বিন তাকি (২৫), ইমতিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী (২১), মাহতাব উদ্দিন রাফি (২১), জাহিদুল আলম জিসান (২১), সৌরভ বেপারী (২১), মো. আনিস (২১), রক্তিম দে (২১), এইচ এম আসহাব উদ্দিন (২১), তানভীর ইসলাম (২১), নাজমুস সাদাত আসিফ (২১), এনামুল হাসান সীমান্ত (২১) ও রিজওয়ান আহমেদ (২১)। আসামিরা সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে চমেকে এককভাবে আধিপত্য বিস্তার করে আসছিল আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী ছাত্রলীগের গ্রুপটি। নাছির চমেক হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ছিলেন দীর্ঘদিন। গত বছরের ২০ আগস্ট এ পদে আসেন ব্যারিস্টার নওফেল। সে থেকে ধাপে ধাপে চমেক ক্যাম্পাসে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করে নওফেল গ্রুপ।
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে একপর্যায়ে উভয় গ্রুপ সংঘর্ষে জড়ায়। ছোটখাটো সংঘর্ষের পর গত ২৭ এপ্রিল সিএমসি ক্যান্টিনে এক ছাত্রলীগ নেতাকে কটুক্তির ঘটনায় উভয় পক্ষের মধ্যে বড় সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত পাঁচজন আহত হয়। এ ঘটনার পর পাঁচলাইশ থানায় উভয় গ্রুপ পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করে। একই সঙ্গে চমেক হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ধর্মঘট ডাকেন। পরে প্রশাসনের মধ্যস্থতায় সমঝোতা হলে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
সর্বশেষ গত শুক্রবার দিনগত রাত ও শনিবার উভয় গ্রুপের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনার পর শনিবার জরুরি বৈঠকে বসে প্রশাসন। বৈঠক শেষে মেডিকেল কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয় এবং আবাসিক শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি