March 29, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, July 5th, 2022, 8:16 pm

চরম খাদ্য সংকটে শ্রীলঙ্কা, শিশুদের দুধও মিলছে না

অনলাইন ডেস্ক :

চরম খাদ্য সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কার জনগণ। একদিকে জ¦ালানির সংকট সেই সঙ্গে শুরু হয়েছে খাদ্যের অভাব। এবার শিশু খাদ্যেও দেখা দিয়েছে সংকট। শিশুদের খাওয়ানোর মতো দুধ পাওয়া যাচ্ছে না দেশটিতে। খবর বিবিসির। শ্রীলঙ্কায় খাদ্য সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে দেশটির শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধারাও। কারণ দ্রব্যমূল্যের দাম তাদের নাগালের বাইরে। বেশিরভাগ বাড়িতেই খাবারের সংকট। তাদের ঘরে প্রয়োজনীয় খাবার নেই। বেশি কষ্টে আছে নারী ও শিশুরা। খাবারের জন্য তারা বাচ্চাদের নিয়ে খাবারের লাইনে অপেক্ষা করছেন দিনের পর দিন। খাবার নিতে লাইনে দাঁড়ানো চার সন্তানের জননী চন্দ্রিকা মানেল বলেন, ‘আমরা এখানে এসেছি, কারণ আমরা ক্ষুধার্ত।’ শাক সবজির দামও চলে গেছে হাতের নাগালের বাইরে, বাচ্চাদের খাবারের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। শিশুদের কাটছে ভয়ংকর দিন। কমিউনিটি রান্নাঘরে আসা মানেল জানালেন তার আরও দুঃখের কথা। তিনি বলেন, ‘জীবনযাপন খরচ অনেক বেড়ে গেছে, বেঁচে থাকার জন্য আমাদের ধার-দেনা করতে হচ্ছে।’কমিউনিটি রান্নাঘরের উদ্যোক্তা প্যাস্টর মোসেস আকাশ বলেন, ‘আমাদের এখানে অনেক মানুষ আসছেন, যারা গেল ৪ মাসে এক প্লেট জায়গায় দুই প্লেট ভাত নিতে পারেননি।’ শুধু জুন মাসে শ্রীলঙ্কায় খাদ্য পণ্যের দাম বেড়েছে ৮০ শতাংশ। তাই অধিকাংশ শিশুরাই পাচ্ছে না পুষ্টিসম্পন্ন খাবার। শাহনা নামের এক অন্তঃসত্ত্বা নারী, যার আরও তিন সন্তান আছে, তিনি জানান, ‘আমার শিশুরা খুব করুণ সময় পার করছে, তাদের ভোগান্তির কোনো অন্ত নেই। আমি তাদের জন্য না কিনতে পারছি এক প্যাকেট বিস্কুট, না কিনতে পারছি দুধ।’ অনেকের মতো শাহনাও মনে করেন এই দুরবস্থার জন্য দায়ী তার দেশের নেতারা। তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতারা বিলাসী জীবনযাপন করেন। তাদের শিশুরাও আরাম আয়েশে থাকে, তবে আমাদের শিশুরা এভাবে ভুগবে কেন?’ এদিকে শ্রীলংকার স্মরণকালের ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দেশটির প্রেসিডেন্ট এখন অব্যাহত চাপের মুখে আছেন। এই দ্বীপ-রাষ্ট্রের জ¦ালানি প্রায় ফুরিয়ে যাওয়ার পথে, কারণ তাদের আর জ¦ালানি আমদানি করার মতো সামর্থ্য নেই। এ সপ্তাহে দেশটির স্কুলগুলোতে ছুটি দিয়ে দেয়া হয়েছে এবং অতি জরুরি সেবা ছাড়া আর সবকিছুর জন্য জ¦ালানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। প্রেসিডেন্ট রাজাপাকশে এখন রাশিয়ার কাছ থেকে সস্তায় জ¦ালানি তেল কেনার জন্য প্রেসিডেন্ট পুতিনের কাছে চিঠি লিখেছেন। এ সংকটের সূচনা হয় ২০১৯ সালে ব্যাপক হারে কর নেয়ার পদক্ষেপের মাধ্যমে। এ সময়ে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সেও ভাঁটা পড়ে। ফলে দেশটির আয় কমতে থাকে। বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে হিমশিম খেতে থাকে শ্রীলঙ্কা। ঋণের বড় অংশই ছিল উচ্চাভিলাষী অবকাঠামোগত প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য চীনের কাছ থেকে নেয়া অর্থ। এ সময়ে আমদানি পণ্যের মূল্য পরিশোধে হিমশিম খেতে থাকে সরকার। পরিস্থিতি খারাপ হয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়ে একসময় তা সহিংসতায় রূপ নেয়। অবশেষে সরকার পরিবর্তন হয়।