চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য দুই হাজার ১৬১ কোটি ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে।
রবিবার (২৬ জুন) দুপুরে চট্টগ্রামের থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এই বাজেট ঘোষণা করেন সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী। মেয়র হিসেবে এবার দ্বিতীয় বাজেট ঘোষণা করলেন তিনি।
এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে উন্নয়ন অনুদান খাতে সর্বোচ্চ ১ হাজার ২১২ কোটি টাকার আয় দেখানো হয়েছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ হিসেবে দেখানো হয়েছে বকেয়া কর ও অভিকর খাতে ২১৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা। হালকর ও অভিকর খাতে আয় দেখানো হয়েছে ২১১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। এছাড়া ফিস আদায় বাবদ ১২৫ কোটি ৮৫ লাখ ৫০ হাজার, জরিমানা আদায় বাবদ ৬০ লাখ, সম্পদ হতে অর্জিত ভাড়া ও আয় বাবদ ১১১ কোটি ৮০ লাখ, ব্যাংক স্থিতি থেকে আয় বাবদ ৫ কোটি ও ভর্তুকিসহ নিজস্ব উৎস থেকে আয় বাবদ ৯০৪ কোটি ৫৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অন্যদিকে, ২০২২-২৩ অর্থ বছরের বাজেটে উন্নয়ন খাতে ১ হাজার ১১২ কোটি টাকা, বকেয়া দেনা বাবদ ১৭৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ের পরিকল্পনা নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। তবে চসিকের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন ভাতা ও পারিশ্রমিক প্রদান বাবদ ব্যয় হবে বছরে ২৯০ কোটি ১০ লাখ টাকা।
এছাড়া মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় ৪৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা, ভাড়াকর ও অভিকর বাবদ ৭ কোটি ৩৫ লাখ, বিদ্যুৎ-জ্বালানি ও পানি ব্যয় বাবদ ৫০ কোটি ৫০ লাখ, কল্যাণমূলক ব্যয় বাবদ ৪২ কোটি ৭০ লাখ, ডাক তার দূরালাপনী বাবদ ১ কোটি ২০ লাখ, আতিথেয়তা ও উৎসব বাবদ ৬ কোটি ৫ লাখ, বীমা বাবদ ৬৫ লাখ, ভ্রমণ ও যাতায়াত ব্যয় বাবদ ১ কোটি ৩০ লাখ, বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা ব্যয় বাবদ ৬ কোটি টাকাসহ মুদ্রণ ও মনিহারী বাবদ ৬ কোটি ৮১ লাখ, ফিসবৃত্তি ও পেশাগত ব্যয় বাবদ ১ কোটি ২৩ লাখ, প্রশিক্ষণ বাবদ ১ কোটি, ভাণ্ডার ও বিবিধ খাতের ব্যয় মিলিয়ে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। শুধুমাত্র বেতন, ভাতা, পারিশ্রমিকসহ চসিকের বার্ষিক পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ব্যয় হবে ৫৬৫ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়া বাকি ১ হাজার ৫৯৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা উন্নয়ন, বকেয়া দেনা, ত্রাণ ক্রয় ও অন্যান্য খাতে ব্যয় করার পরিকল্পনা রয়েছে সংস্থাটির।
বাজেট ঘোষণাকালে মেয়র রেজাউল করিম চট্টগ্রামকে একটি আধুনিক নগর হিসেবে গড়ে তুলতে তার একগুচ্ছ পরিকল্পনা তুলে ধরেন। বর্তমান ও ভবিষ্যতের আলোকে চসিক নগরবাসীর আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটানোর প্রত্যাশা ও চট্টগ্রাম নগরকে পরিবেশগত, প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ, নান্দনিক ও বাসযোগ্য নগর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য এই বাজেট বলে জানান তিনি। জনগণের প্রত্যাশিত সেবা ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিশ্চিত করার জন্য নগরবাসীর সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
আয়কর, ট্রেড লাইসেন্স এ রাজস্ব আদায় বৃদ্ধিতে চসিকের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে মেয়র রেজাউল জানান, নগরের ব্যবসায়ীদের সঠিকভাবে ট্রেড লাইসেন্সের আওতায় আনা গেলে সেটার সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় ৪ লাখ। অথচ চসিকের রেজিস্টার অনুযায়ী ট্রেড লাইসেন্সের সংখ্যা মাত্র ৮৫ হাজার।
মেয়র রেজাউল বলেন, অবসর ও মৃত্যুজনিত কারণে চসিকের অনুমোদিত বিভিন্ন পদ শূন্য হওয়ায় উক্ত পদগুলো পূরণের লক্ষ্য কার্যক্রম চলছে। এছাড়া মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী অস্থায়ী কর্মকর্তা কর্মচারীদের স্থায়ীকরণের ব্যাপারে কার্যক্রম চলছে। মানবিক দিক বিবেচনায় বিভিন্ন পদের কর্মচারীদের দুই দফা বেতন বাড়ানো হয়েছে। সেই সঙ্গে কর আদায়ে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বাজেট ঘোষণাকালে সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম, সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম প্রমুখ। এছাড়া চসিক ওয়ার্ড কাউন্সিলরগণ এবং দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা উপস্থিত আছেন।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি