চাঁদপুর ও সিলেট রুটে আন্তনগর ট্রেন সার্ভিস দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি।
এ অঞ্চলের শত শত মানুষ চাঁদপুর থেকে হযরত শাহজালাল ও শাহ পরানের পবিত্র মাজার জিয়ারত করতে যান। এছাড়াও সিলেটের মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শিক্ষার্থী রয়েছে। বিপুল সংখ্যক পর্যটকও এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে উত্তর-পূর্ব জেলায় যান। তাই এই রুটে চলাচলে ঝুঁকিপূর্ণ ও সময়সাপেক্ষ হওয়ায় দিন দিন ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।
রেলওয়ে কর্মকর্তাদের মতে, ২০০০ সালে চাঁদপুর থেকে লাকসামগামী একটি কমিউটার ট্রেনে সিলেটগামী যাত্রীদের জন্য বেশ কয়েকটি বগি সংযুক্ত ছিল। লাকসাম জংশনে পৌঁছার পর এসব কোচ জালালাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেনের সাথে লিংক করা হতো। এতে করে অনেক আরামে ও সাশ্রয়ী মূল্যে ঝামেলা ছাড়াই সিলেটে ভ্রমণ করতে পারতেন যাত্রীরা।
২০০০ সালে ২০ সেপ্টেম্বর মেঘনা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে চাঁদপুর বড় রেল স্টেশনের বেশ কিছু অংশও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। পরে বিলীন হওয়া স্থানটি বালু দিয়ে ভরাট করা হলেও লাকসাম হয়ে সিলেটে ট্রেন চলাচল পুনরায় চালু করেনি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ফলে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও সিলেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, মাজারে ভক্ত ও পর্যটকরা সিলেটে যাতায়াতের সময় নানা অসুবিধার সম্মুখীন হন।
এমনকি চাঁদপুর রেলস্টেশন থেকে সিলেটের টিকিটও দেয়া হয় না বলে জানিয়েছেন স্টেশন মাস্টার শোয়াইবুল সিকদারসহ বেশ কয়েকজন টিটি।
তিনি বলেন, চাঁদপুর ও সিলেটের মধ্যে নির্বিঘ্নে যাতায়াতের জন্য আন্তনগর ট্রেন চালু করা খুবই প্রয়োজন। আগের তুলনায় সিলেটগামী যাত্রীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এটা এখন সময়ের দাবি।
এ সরকারের আমলে চাঁদপুর–লাকসাম রেল রুট ও রেল স্টেশনগুলোর অনেক উন্নয়ন হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। একই দাবি জানিয়েছেন বরিশাল ও বরগুনার যাত্রীরা। সেখানকার ও আশেপাশের জেলার বেশিরভাগ যাত্রীকে লঞ্চে চাঁদপুর ঘাটে নেমে তারপর সিলেটে যেতে হয়।
চাঁদপুর রেলওয়ে স্টেশনটি চাঁদপুর স্টিমার ঘাট ও লঞ্চঘাট থেকে মাত্র পাঁচ মিনিটের হাঁটার দূরত্ব। সুন্দর যাতায়াত ব্যবস্থা, স্টেশনে রাতে প্রচুর আলো থাকে এবং নিরাপত্তাও কোনো সমস্যা নেই।
এদিকে, চাঁদপুর বাস টার্মিনাল তিন মাইল দূরে। বাস চলাচলের সময়সূচি, ভাড়া ও যাত্রীদের ওয়েটিং রুম, বাথরুম ও নিরাপত্তাও একটা বড় ব্যাপার।
চাঁদপুর পরিবহন মালিকরা জানান, চাঁদপুর থেকে সিলেট শহরে প্রতিদিন ৯টি বাস চলাচল করে। সিলেট যাওয়ার নন-এসি বাসে ভাড়া ৫৫০ টাকা ও এসি বাসে ৬৫০ টাকা। তবে চাঁদপুর থেকে সিলেট পর্যন্ত ট্রেনের ভাড়া ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা হবে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের কর্মকর্তারা। ট্রেনে ভ্রমণ সাশ্রয়ী এবং কম সময় লাগে।
চাঁদপুর-সিলেট আন্তনগর ট্রেন সার্ভিস চালু হলে তা বেশ লাভজনক হবে বলে দাবি কর্মকর্তারা। এটি ব্যবসা ও বাণিজ্যে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে মনে করে তারা।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি