নিজস্ব প্রতিবেদক:
সব চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা স্থায়ীভাবে বৃদ্ধি করাসহ চার দফা দাবিতে লাগাতার কর্মসূচি শুরু করেছে সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য পরিষদ নামে চাকরিপ্রার্থীদের একটি সংগঠন। বুধবার (৮ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা থেকে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নেন তারা। এতে অংশ নেন পাঁচ শতাধিক চাকরিপ্রার্থী। তাদের অন্য দাবিগুলো হলো- নিয়োগ দুর্নীতি ও জালিয়াতি বন্ধ করে নিয়োগ পরীক্ষার মার্কসহ ফলাফল প্রকাশ করা, চাকরিতে আবেদনের ফি সর্বোচ্চ ১০০ টাকা করা এবং সমন্বিত নিয়োগ পরীক্ষার ব্যবস্থা করা। তারা ‘শেখ হাসিনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘এসো ভাই এসো বোন, গড়ে তুলি আন্দোলন’, ‘দাবি মোদের একটাই, বয়সসীমা বৃদ্ধি চাই’, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ স্লোগান দেন এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
চাকরিপ্রার্থীরা বলেন, ২০১১ সালের সাধারণ চাকরিজীবীদের অবসরের বয়সসীমা ৫৭ থেকে ৫৯ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৬০ বছরে উন্নীত করা হয়। কিন্তু সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ১৯৯১ সালে যখন গড় আয়ু ৫৭ বছর ছিল তখন শেষবারের মতো ২৭ থেকে ৩০ বছরে উন্নীত করা হয়। এই ৩০ বছরে গড় আয়ু ১৮ বছর বৃদ্ধি পেয়ে ৭৩ বছর হলেও বৃদ্ধি হয়নি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা। অন্যদিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর হলেও কোটাধারীদের ক্ষেত্রে তা ৩২ বছর। তাই সংবিধান অনুযায়ী বয়স বৃদ্ধি এখন সময়ের দাবি। আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারের কথা উল্লেখ করে তারা বলেন, ২০১৮ সালে আপনাদের ইশতেহারে প্রতিশ্রুতি ছিল পরিস্থিতি অনুযায়ী বাস্তবতার নিরিখে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধিতে যুক্তিসঙ্গত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কিন্তু মাঝে করোনার কারণে শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে প্রায় দুই বছর হারিয়ে গেলেও তিন বছর আগে ছাত্র সমাজকে দেওয়া সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। ইশতেহারের বাস্তবায়ন যুব সমাজের প্রাণের দাবি।
চাকরিতে বয়স বৃদ্ধিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী আপনি যদি ৭৫ বছর বয়সেও নানা অ্যাওয়ার্ড অর্জন করতে পারেন, আমাদের কেন ত্রিশের শেকলে বন্দি করে রাখছেন? আমাদের বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রী যদি আমাদের করুণ অবস্থার কথা জানতেন তিনি ব্যবস্থা নিতেন কিন্তু প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত আমাদের এই যৌক্তিক দাবি পৌঁছে দেওয়ার কেউ নেই। প্রধানমন্ত্রী আমরা আপনার সন্তান, আমাদের বাঁচান। এদিকে সব চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা স্থায়ীভাবে বৃদ্ধি করাসহ চাকরিপ্রার্থীদের চার দাবিতে লাগাতার কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছে পুলিশ। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শাহবাগ মোড় ঘুরে মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যে যেতে চাইলে তাদের বাধা দেয় পুলিশ। পুলিশের বাধায় দুপুর ১টার দিকে আবারও তারা শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নেন। পুলিশকেও তাদের ঘিরে অবস্থান নিতে দেখা যায়। এ সময় চাকরিপ্রার্থীরা পুলিশকে ফুল দিতে চাইলেও পুলিশ তাদের ফুল গ্রহণ করেনি। এসময় তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে বলেন, আমাদের বাধা দেবেন না, প্লিজ। আমরা আমাদের যৌক্তিক দাবি নিয়ে এসেছি, গাড়ি ভাঙচুর করতে আসিনি। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখানে অবস্থান নেবো, কর্মসূচি চলমান রাখবো।
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম