অনলাইন ডেস্ক :
দুইশর কাছাকাছি রান তাড়ায় প্রথম ওভারে দুই ব্যাটসম্যানের বিদায়। ১০ ওভারে রান ৪ উইকেটে ৭৩। শেষ ১০ ওভারে চাই ১২১। বিস্ফোরক সেঞ্চুরি আর জেমস নিশামের সঙ্গে বিধ্বংসী এক জুটিতে কঠিন সেই সমীকরণ মিলিয়ে দিলেন মার্ক চাপম্যান। দুর্দান্ত জয়ে সমতায় সিরিজ শেষ করল নিউ জিল্যান্ড। রাওয়ালপিন্ডিতে সোমবার পাকিস্তানের বিপক্ষে পঞ্চম টি-টোয়েন্টিতে কিউইদের জয় ৬ উইকেটে। ১৯৪ রানের লক্ষ্য সফরকারীরা ছুঁয়ে ফেলে ৪ বল হাতে রেখে। এই সংস্করণে প্রথম সেঞ্চুরিতে ৫৭ বলে অপরাজিত ১০৪ রানের খুনে ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরা চাপম্যান।
যেখানে ১১টি চারের পাশে ছক্কা ৪টি। নিশাম ২৫ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় করেন ৪৫ রান। ¯্রফে ৫৮ বলে অবিচ্ছিন্ন ১২১ রানের জুটিতে দলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন দুজন। টি-টোয়েন্টিতে পঞ্চম উইকেটে রেকর্ড জুটি এটি। আগের সেরা ছিল যৌথভাবে অবিচ্ছিন্ন ১১৯ রানের, পাকিস্তানের শোয়েব মালিক ও মিসবাহ-উল-হক এবং আয়ারল্যান্ডের কার্টিস ক্যাম্পার ও জর্জ ডকরেলের। আইপিএলের কারণে দলের নিয়মিতদের অনেককে ছাড়া সফরে আসা নিউ জিল্যান্ডের টি-টোয়েন্টিতে এটি শততম জয়।
প্রথম দুই ম্যাচ হারের পরও পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ২-২ সমতায় শেষ করল তারা। চতুর্থ ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়েছিল। চাপম্যানের আলোয় আড়ালে পড়ে গেল মোহাম্মদ রিজওয়ানের ৬২ বলে অপরাজিত ৯৮ রানের ইনিংস। বড় লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতে জোড়া ধাক্কা খায় নিউ জিল্যান্ড। শাহিন শাহ আফ্রিদি প্রথম ওভারে ফিরিয়ে দেন টম ল্যাথাম ও উইল ইয়াংকে। চ্যাড বাওয়েসকে বিদায় করেন ইমাদ ওয়াসিম। চতুর্থ ওভারে ২৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় নিউ জিল্যান্ড। ড্যারিল মিচেলও তেমন কিছু করে দেখাতে পারেননি (১৫)।
দশম ওভারে তার বিদায়ের পর থেকেই মূলত চিত্র পাল্টে যাওয়ার শুরু। তখন চাপম্যানের রান ছিল ২৪ বলে ৩৩। এরপর ঝড় তোলেন আগের ম্যাচে ৪২ বলে অপরাজিত ৭১ রান করা এই ব্যাটসম্যান। তার ও নিশামের ব্যাটে বাউন্ডারি আসতে থাকে প্রতি ওভারে। চাপম্যান ফিফটি পূর্ণ করেন ৩০ বলে। শেষ ৩ ওভারে সমীকরণ দাঁড়ায় ২৮ রানে। অষ্টাদশ ওভারে আফ্রিদির প্রথম চার বলে চোখ ধাঁধানো তিনটি চার মেরে সেঞ্চুরির দুয়ারে পৌঁছে যান চাপম্যান। শেষ দুই বলে দুটি ডাবল নিয়ে কাক্সিক্ষত তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন তিনি ৫৪ বলে। হারিস রউফের পরের ওভারে আসে ৯। শেষ ওভারে ৩ রানের সমীকরণ মেলাতে কোনো সমস্যাই হয়নি চাপম্যান ও নিশামের। এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে রিজওয়ান ও বাবর আজমের ব্যাটে ভালো সূচনা পায় পাকিস্তান। পঞ্চম ওভারে জুটির রান স্পর্শ করে পঞ্চাশ।
এরপরই ছন্দপতন, ৫ বল আর ১ রানের মধ্যে তারা হারিয়ে ফেলে ৩ উইকেট। বাবরের ১৮ বলে ১৯ রানের পর মোহাম্মদ হারিস ও সাইম আইয়ুব ফেরেন শূন্য রানে। এক প্রান্ত আগলে রাখা রিজওয়ান চতুর্থ উইকেটে ৪৬ বলে ৭১ রানের জুটি উপহার দেন ইফতিখার আহমেদকে সঙ্গী করে। ২২ বলে ৩৬ রান করা ইফতিখারকে নিজের তৃতীয় শিকার বানিয়ে বিদায় করেন ব্লেয়ার টিকনার। রিজওয়ান ফিফটি স্পর্শ করেন ৩৩ বলে। তিনি আরেকটি পঞ্চাশোর্ধ জুটি গড়েন ইমাদ ওয়াসিমের সঙ্গে। ৯৭ রান নিয়ে শেষ ওভার শুরু করা রিজওয়ান প্রথম বলে সিঙ্গেল নেওয়ার পর আবার স্ট্রাইক পান শেষ বলে।
কিন্তু তিন অঙ্ক আর ছোঁয়া হয়নি তার, নিশামের শেষ বল ব্যাটেই লাগাতে পারেননি তিনি। ইমাদ ১৪ বলে ৫ চার ও এক ছক্কায় করেন ৩১ রান। রিজওয়ানের সঙ্গে তার জুটিতে ৬৮ রান আসে ৩৩ বলে। এসব কিছু ম্লান হয়ে গেল চাপম্যান ও নিশামের জুটিতে। ৫ ম্যাচে ১৬৫.৭১ স্ট্রাইক রেটে ২৯০ রান করে সিরিজের সেরাও চাপম্যান। চার ম্যাচে অপরাজিত থাকায় তার ব্যাটিং গড় ২৯০! একই মাঠে আগামী বৃহস্পতিবার শুরু হবে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান: ২০ ওভারে ১৯৩/৫ (রিজওয়ান ৯৮*, বাবর ১৯, হারিস ০, আইয়ুব ০, ইফতিখার ৩৬, ইমাদ ৩১, ফাহিম ১*; মিল্ন ৪-০-৩১-০, রবীন্দ্র ২-০-২৯-০, শিপলি ৩-০-৩৪-০, টিকনার ৪-০-৩৩-৩, সোধি ৪-০-৩১-১, নিশাম ৩-০-৪২-০)
নিউ জিল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৯৪/৪ (ল্যাথাম ০, বাওয়েস ১৯, ইয়াং ৪, মিচেল ১৫, চাপম্যান ১০৪*, নিশাম ৪৫*; আফ্রিদি ৪-০-৪৮-২, ইমাদ ৪-০-২১-২, ইহসানউল্লাহ ৪-০-৩৯-০, রউফ ৪-০-৩৯-০, শাদাব ২-০-২৯-০, ফাহিম ১.২-০-১৭-০)
ফল: নিউ জিল্যান্ড ৬ উইকেটে জয়ী
সিরিজ: ৫ ম্যাচের সিরিজ ২-২ সমতায় শেষ
ম্যান অব দা ম্যাচ: মার্ক চাপম্যান
ম্যান অব দা সিরিজ: মার্ক চাপম্যান
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা