নিজস্ব প্রতিবেদক :
গণহারে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের খাতার পুনর্মূল্যায়ন, দ্রুততম সময়ে বিশেষ পরীক্ষা গ্রহণসহ চার দফা দাবিতে রাজধানীর নীলক্ষেত মোড়ের একাংশ অবরোধ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। রোববার (২৯ আগষ্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা কলেজের সামনের সড়ক থেকে উঠে এসে শিক্ষার্থীরা নীলক্ষেত মোড়ে অবস্থান নেন। এর আগে সকাল ৯টা থেকে শিক্ষার্থীরা নীলক্ষেতের আশপাশে জড়ো হতে থাকেন। পরে বিক্ষোভ মিছিল করে নিউ মার্কেটের সামনের সড়ক দিয়ে ঢাকা কলেজের সামনের সড়ক অবরোধ করেন। এর কিছুক্ষণ পর শিক্ষার্থীরা নীলক্ষেত মোড়ে ফিরে এসে অবরোধ করতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে বাগবিতন্ডা হয়। অবস্থানকালে শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি জানান।
তাদের দাবিগুলো হলো- চতুর্থ বর্ষের অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের খাতা সঠিকভাবে পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে অথবা শিক্ষার্থীদের জন্য ১০ দিনের মধ্যে বিশেষ পরীক্ষার নোটিশ দিতে হবে, সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্তৃক ক্লাস যাচাই করতে হবে, শিক্ষার্থীদের যে কোনো ধরনের অ্যাকাডেমিক সমস্যা নিজ কলেজের মাধ্যমে সমাধান করতে হবে, সব বিভাগের ফলাফল একসঙ্গে প্রকাশ এবং বিভিন্ন বিভাগের আটকে থাকা পরীক্ষার ফলাফল আগামী ১০ দিনের মধ্যে প্রকাশ করতে হবে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, ২০১৫-১৬ সেশনের ইংরেজি বিভাগের স্নাতক চতুর্থ বর্ষে ভয়াবহ ফল বিপর্যয় হয়েছে। তিতুমীর কলেজে ২৪১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৯৩ জন, ইডেন মহিলা কলেজে ২১০ জনের মধ্যে ১৭৫ জন, সরকারি বাংলা কলেজে ১১৬ জনের মধ্যে ৯২ জন এবং বদরুন্নেসা মহিলা কলেজে ৪৫ জনের মধ্যে ৩০ জন অকৃতকার্য হয়েছেন। আন্দোলনরত ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, এত শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হওয়ার পেছনে কোনো কারণ কলেজ প্রশাসন দেখাতে পারছে না। আমরা চাই খাতাগুলো আবারও মূল্যায়ন করা হোক। পরে কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে রোববার (২৯ আগষ্ট) দুপুর ২টার দিকে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেন। এর আগে শিক্ষার্থীদের পক্ষে চারজন প্রতিনিধি ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ ও সাত কলেজের সমন্বয়ক (ফোকাল পয়েন্ট) অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ’র সঙ্গে দেখা করেন। সমন্বয়কের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেয়া হয়েছে বলে জানায় শিক্ষার্থীরা। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ স্যার আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। সুবিধাজনক সময়ে আমাদের গণহারে অকৃতকার্য বিষয়ে বিশেষ পরীক্ষা নেওয়া হবে। শিগগিরিই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে বলে ওঁরা জানিয়েছেন। তাই আমরা আপাতত অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছি। নীলক্ষেত মোড়ে দায়িত্বরত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ধানমন্ডি জোনের অতিরিক্ত সহকারী পুলিশ কমিশনার ইহসানুল ফেরদৌস বলেন, শিক্ষার্থীরা নীলক্ষেত থেকে অবরোধ তুলে নিয়ে ফিরে গেছেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি আমরা। ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ ও সাত কলেজের সমন্বয়ক (ফোকাল পয়েন্ট) অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়টি নিয়ে আমরা আলোচনা করছি। তবে এখন পর্যন্ত ছয় কলেজের শিক্ষার্থীদের ফল এবং কোনো প্রস্তাবনা পাইনি। তিনি বলেন, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের যে সংখ্যাটি বলছে, সেটি নিশ্চিত করে জানতে পারিনি। শিক্ষার্থীদেরকে আমরা বলেছি, সংশ্লিষ্ট কলেজ এবং বিভাগে যোগাযোগ করতে। সেখান থেকে প্রস্তাবনা পাঠাতে, যেন আমরা সেটি বিশ্লেষণ করে একটি চূড়ান্ত প্রস্তাবনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পাঠাতে পারি।
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম