নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থানে সরকার। কোনোভাবেই সিন্ডিকেটকে ছাড় দিতে রাজি নয়। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার চাল আমদানি উন্মুক্ত করে দিতে যাচ্ছে। পাশাপাশি খাদ্য, বাণিজ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে টাস্কফোর্স গঠন করা হচ্ছে। তাছাড়া ওএমএস দ্বিগুণ করার পাশাপাশি দেশব্যাপী সকল মিলার ও ধান-চাল ব্যবসায়ীর ওপর কঠোর নজরদারির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, মিলারদের হাতে ধানের বাজার নিয়ন্ত্রণ। মিল মালিক ও আড়তদাররা চাল মজুদ করে মৌসুমের শেষ সময়ে দাম বাড়িয়ে তা বাজারে ছাড়ে। গত বছর অভিযানের মাধ্যমে তেমন অনেক মজুদের চাল বের করা হয়েছে। এবারও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে ধানের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। পরে ধানের মূল্য বৃদ্ধির অজুহাতে মিলাররাই চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। ওই সুযোগে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরাও সব ধরনের চালের দাম বাড়িয়ে দিয়ে বাজার অস্থিতিশীল করেছে। বাস্তবে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে মনিটরিং ব্যবস্থা খুবই দুর্বল। আর ওই দুর্বল মনিটরিং ব্যবস্থার সুযোগেই অসাধু চাল ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফার আশায় সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে।
সূত্র জানায়, চালের দাম মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে রাখার জন্য সরকার গৃহীত বিদ্যমান ব্যবস্থাগুলো গতিশীল করা জরুরি। দাম নিয়ন্ত্রণে মিল মালিক, আড়তদার, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা যেন কোনভাবেই সিন্ডিকেট গঠন না করতে পারে সেদিকে নিরীক্ষণ ও নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন। তাছাড়া চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে গঠিত উচ্চ পর্যায়ের বিভিন্ন কমিটির কার্যক্রম ও মনিটরিং গতিশীল করা দরকার। চালের বাজারে অস্থিতিশীলতার বিষয়ে গোয়েন্দা রিপোর্ট বিশ্লেষণে দেখা যায়, সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ওই সিন্ডিকেট অত্যন্ত প্রভাবশালী। সারাদেশেই তাদের সদস্য রয়েছে। এমনকি সিন্ডিকেটের সদস্যরা পাইকারি ও খুচরা বাজারেরও ব্যবসায়ী। আর তাদের পেছনে কাজ করছে শক্তিশালী চক্র। টাস্কফোর্স গঠনের পর তাদের মাধ্যমে ওই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হবে।
সূত্র আরো জানায়, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই মাঠপর্যায়ের খাদ্য কর্মকর্তাদের ধান-চালের বৈধ-অবৈধ সকল মজুদের তথ্য দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর ওই তথ্যানুযায়ী সরকার মজুদদারদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামবে। এই সময়ের মধ্যে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকরা (ডিসি ফুড) তার জেলায় কারা ধান-চালের ব্যবসা করছে তা খতিয়ে দেখবে। তার মধ্যে কারা অবৈধভাবে ধান-চাল মজুদ করছে তা আ লিক খাদ্য নিয়ন্ত্রককে (আরসি ফুড) জানাতে হবে। আর কেউ মজুদ না করলে তাও জানাতে হবে। ওই মজুদদারদের তালিকা অনুযায়ী অভিযান পরিচালনা করা হবে। তবে কোন জায়গায় মজুদ করছে না বলে প্রতিবেদন দেয়ার পর সেখানে মজুদ পাওয়া গেলে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে তা নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
এ প্রসঙ্গে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার জানান, এবার কোন রকমের কারসাজি বরদাশ্ত করা হবে না। কোন সিন্ডিকেটকে টিকে থাকতে দেয়া হবে না। সিন্ডিকেট যতো শক্তিশালী হোক না কেন অপকর্ম করে কেউ ছাড় পাবে না।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি