November 19, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, December 1st, 2021, 7:50 pm

চীনকে টেক্কা দিতে আসছে ইইউয়ের ‘গ্লোবাল গেটওয়ে’

অনলাইন ডেস্ক :

চীনের প্রভাবকে চ্যালেঞ্জ জানাবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। চীন তার বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের মধ্য দিয়ে বিশ্বে, বিশেষ করে এশিয়ায় বড় প্রভাব বিস্তার করেছে। ফলে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন বৈশ্বিক বিনিয়োগের বিস্তৃত ও বৃহৎ একটি পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। একে দেখা হচ্ছে চীনের ওই উদ্যোগের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে। এ বিষয়ে জানেন অভ্যন্তরীণ এমন সূত্রগুলো বলেছেন- ডিজিটাল, পরিবহন, জলবায়ু ও জ¦ালানি স্কিম নিয়ে কংক্রিট ধারণা স্থাপন করবে এই প্রকল্প। আফ্রিকা এবং অন্য স্থানগুলোতে চীন যে প্রভাব বিস্তার করছে তাকে কাউন্টার দেয়ার জন্য একে দেখা হচ্ছে পশ্চিমাদের উদ্যোগ হিসেবে। এর নাম হবে গ্লোবাল গেটওয়ে। বুধবার (১লা ডিসেম্বর) ‘গ্লোবাল গেটওয়ে’ উদ্যোগ উপস্থাপন করার কথা রয়েছে ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েনের। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এক্ষেত্রে যে শত শত কোটি ইউরো প্রয়োজন, তা সদস্য রাষ্ট্র, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি খাত থেকে কিভাবে সংগ্রহ করা যায় সে বিষয়টি খতিয়ে দেখছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। মিস ভন ডার লিয়েন সেপ্টেম্বরে তার স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণে বলেছেন, মানসম্মত অবকাঠামো, পণ্য সরবরাহে সংযুক্তি, জনগণ এবং বিভিন্ন রকম সেবা সারাবিশ্বের কাছে পৌঁছে দিতে বিনিয়োগ প্রত্যাশা করি আমরা। এ জন্য বুধবার (১লা ডিসেম্বর) তিনি যে পরিকল্পনা উপস্থাপন করবেন তার বিস্তৃতি ১৪ পৃষ্ঠার। এতে এই প্রকল্পকে চীনের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আখ্যায়িত করা হবে না। গত মঙ্গলবার এ পরিকল্পনা সম্পর্কে চাপ দেয়া হয়েছিল কমিশনকে। তবে কমিশন কৌশলে চীনের নাম উল্লেখ করা থেকে নিজেদের বিরত রাখে। কিন্তু জার্মান মার্শাল ফান্ডে সিনিয়র ট্রান্সআটলান্টিক ফেলো অ্যানড্রু স্মল বলেছেন, এর পটভূমি বিস্তৃত। যদি বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগ না থাকতো তাহলে গ্লোবাল গেটওয়েরও অস্তিত্ব আসতো না। এর মধ্য দিয়ে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন যে প্যাকেজ এবং আর্থিক কৌশল নির্ধারণ করেছে, তাতে চীনের কাছ থেকে ঋণ নেয়া দেশগুলো ভাবতে পারে যে, তাদের কাছে আরো বিকল্প আছে। বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগ চীনের পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রে রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে নতুন নতুন সড়ক, বন্দর, রেলওয়ে, সেতু উন্নয়নের মাধ্যমে বাণিজ্যকে উন্নত করা হচ্ছে। এই কৌশল পৌঁছে গেছে এশিয়া, ইন্দো-প্যাসিফিক, আফ্রিকা, এমনকি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রতিবেশী বলকান অঞ্চলেও। চীনের এই উদ্যোগ নিয়ে নানা সমালোচনা আছে। বলা হয়, তারা ঋণ দেয়ার মাধ্যমে দেশগুলোকে ঋণের ফাঁদে ফেলছে। এটা হলো তাদের ‘ঋণের ফাঁদ বিষয়ক কূটনীতি’। কিন্তু অন্য অনেকে এই চিত্রটিকে আরো জটিলভাবে দেখেন। তাদের মতে, বড় অংকের ঋণ খুব বেশি ঝুঁকিমুক্ত। উপরন্তু চীন এসব দেশের জন্য এমন কিছু করছে, যা অন্য কেউ করেনি। অন্যদিকে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে চীনের যখন উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে, তখন তারা অর্থনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক দিক থেকে তাদের অবস্থান শক্ত করেছে। এখন ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন নিজেদের প্রভাব ও সম্পদের ব্যবহার করবে। অ্যানড্রু স্মল বলেন, এটা হবে একটি বড় পরীক্ষা। এখন প্রশ্ন হলো, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সত্যি এই ভূরাজনৈতিক স্থান নিতে পারবে কিনা। অ্যানড্রু স্মল বলেন, অন্যদিকে দেখতে হবে এটা খুবই অনমনীয়, অভ্যন্তরীণ আমলাতান্ত্রিক লড়াইয়ে আচ্ছন্ন কিনা। এ ক্ষেত্রে যদি তারা ব্যর্থ হয়, তবে তারা বড় ভুল করবে। একজন কূটনীতিক বলেছেন, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন যে এ ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে- তা একটি ভাল লক্ষণ। যুক্তরাষ্ট্র এবং বৃটেনে আমাদের ট্রান্সআটলান্টিক বন্ধুদের সঙ্গে আমরা এই অভিন্ন স্বার্থটাই শেয়ার করি। সেন্টার ফর গ্লোবাল ডেভেলপমেন্টের সিনিয়র ফেলো স্কট মরিস বলেন, এই অভিন্ন স্বার্থ সৃষ্টি করতে পারে আরো জটিলতা। সর্বোপরি গত জুনে জি৭ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র তার নিজস্ব উদ্যোগ ‘বিল্ড ব্যাক বেটার ওয়ার্ল্ড’ উদ্যোগের ঘোষণা দিয়েছে। ফলে একে অন্যের ওপর চাপিয়ে দেয়ার মতো একটি জটিল অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। তবে গ্লোবাল গেটওয়ে ইনিশিয়েটিভ উদ্যোগ সফল হবে বলে আশা করেন স্কট মরিস। তিনি মনে করেন, চীনকে টেক্কা দেয়ার চেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এটা ইউরোপের সামনে একটি সুযোগ। এর মধ্য দিয়ে তারা উন্নয়নশীল দেশগুলোর সঙ্গে অর্থায়নের মাধ্যমে ভাল কিছু করতে পারে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের এই পরিকল্পনা বুধবার (১লা ডিসেম্বর) যখন কলেজ অব কমিশনারস অনুমোদন করবে, তখন তা উপস্থাপন করার কথা উরসুলা ভন ডার লিয়েন।