March 29, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, November 9th, 2021, 4:42 am

চীন আমাদের নিশ্চিহ্ন করতে চায় : উইঘুর নারীর বর্ণনা

অনলাইন ডেস্ক :

চীনে বসবাসরত সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের দেশটির সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে নিশ্চিহ্ন করতে চায় বলে অভিযোগ করেছে নির্যাতিতরা। দুই সন্তান নিয়ে চীনের উইঘুর অধ্যুষিত জিনজিয়াং প্রদেশ থেকে তুরস্কে পালিয়ে আসা গুলজারা মুহাম্মদ দ্য নিউ অ্যারাব’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন। ধর্মপ্রাণ একটি মুসলিম পরিবারে জন্ম গুলজারার। তার বাবা স্থানীয় উইঘুর শিশুদের কুরআন শিক্ষা দিতেন এবং তার স্বামী একটি মসজিদে ইমামতি করতেন। কিন্তু ২০১৮ সালে হঠাৎ একদিন চীনের সরকারি বাহিনী তার স্বামী ও বাবাকে বাসা থেকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় বাধা দিতে গেলে তাকেও তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। ইসলামভীতির কারণে বহুদিন ধরে গুলজারার পরিবারের ওপর গোপনে নজরদারি করে আসছিল চীনের গোয়েন্দারা। সমাজে ধর্মবিদ্বেষ ও অস্থিরতা সৃষ্টির অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের ঘরে থাকা সব কুরআন শরিফও জব্দ করে নিয়ে যায় পুলিশ। এ সময় পুলিশকে গুলজারা বলেছিলেন, আমার স্বামী এবং বাবা তো কোনো দেশদ্রোহী কাজ করছে না, তাদের কেন এভাবে হাতকড়া লাগিয়ে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তার ওপর থুতু নিক্ষেপ করে পুলিশ হুমকি দেয়, বেশি কথা বললে তোকেও তুলে নিয়ে যাব। এ সময় তাদের ছেড়ে দিতে অনেক কান্নাকাটি করলেও পুলিশ ছাড়েনি। তারা আমাদের সঙ্গে পশুর চেয়েও জঘন্য আচরণ করেছে। তার পরিচিত এক শিক্ষকের মাধ্যমে পুলিশকে ঘুস দিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের ছাড়িয়ে আনলেও থানা থেকে বের হওয়ার একদিন পরই তার বৃদ্ধ বাবা প্রচ- মনোকষ্ট নিয়ে মারা যান। পরে তিনি স্বামী-সন্তান নিয়ে তুরস্কে পালিয়ে আসেন। কিন্তু তাদের মতো সৌভাগ্য সবার কপালে জুটে না। উইঘুর নারীদের প্রতি তিন মাস পর পর পরিবার-পরিকল্পনা কর্মীরা এসে পরীক্ষা করেন, তারা গর্ভধারণ করেছেন কিনা। অনেক উইঘুর নারীকে বন্দিশিবিরে আটক রেখে ধর্ষণ করা হচ্ছে। একসময় তাদের বন্ধ্যা করে দেওয়া হচ্ছে, যাতে বন্দিশিবিরে তাদের ওপর চালানো পাশবিক নির্যাতনের কোনো প্রমাণ না থাকে। জোর করে তাদের শূকরের মাংস খাওয়াচ্ছে তাদের ধর্মবিশ্বাসকে ধ্বংস করে দেবে। ধর্ষণের পর এসব উইঘুর নারীকে চীনা যুবকদের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গুলজারা মুহাম্মদ বলেন, এভাবে উইঘুরদের তিলে তিলে নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছে চীনা সরকার।