November 15, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, February 27th, 2022, 12:55 pm

চুয়াডাঙ্গায় গাছে গাছে আমের মুকুল, ছড়াচ্ছে সৌরভ

চুয়াডাঙ্গায় ঋতুরাজ বসন্তে ফুটা নানা ফুলের সঙ্গে আমের মুকুলও সৌরভ ছড়াচ্ছে। এবার সময়ের আগেই সোনালি মুকুলে ভরে গেছে জেলার আম বাগানগুলো। মাঘের আমন্ত্রণে আসা আগাম মুকুল ফাল্গুনকে স্বাগত জানিয়ে বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীদের মনে আশার আলো জ্বালিয়েছে।

জেলার সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা গেছে, গাছে গাছে নানা ফুলের সঙ্গে থোকায় থোকায় হলুদ রঙের আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে। গাছে মুকুল ও গুটি আম দেখে ইতোমধ্যে ব্যবসায়ীরা বাগানের দরদাম হাঁকছেন। আর বাগানের মালিকেরা আমের ভালো ফলন পেতে ছত্রাকনাশক প্রয়োগসহ বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ততার সময় পার করছেন।

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গত বছর চুয়াডাঙ্গা সদরে ৮২৫ হেক্টর জমিতে ১০ হাজার ৭৬০ মেট্রিক টন, আলমডাঙ্গায় ২৮০ হেক্টর জমিতে ৫ হাজার ৩৪০ মেট্রিক টন, জীবননগরে ৪০০ হেক্টর জমিতে ৭ হাজার মেট্রিক টন ও দামুড়হুদায় ৩১০ হেক্টর জমিতে ৭ হাজার ৮৭৫ মেট্রিক টনসহ জেলায় মোট এক হাজার ৮৯২ হেক্টর জমিতে ৩২ হাজার ৯৫৫ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়েছিল।

এই বছর সদর উপজেলায় ৮২৬ হেক্টর, আলমডাঙ্গায় ২৮০ হেক্টর, জীবননগরে ৪১০ হেক্টর ও দামুড়হুদায় ৩২৫ হেক্টরসহ মোট ১ হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার ৯৩ হেক্টর জমিতে আবাদ বেশি হয়েছে। এবারের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ২৩ হাজার মেট্রিক টন।

চুয়াডাঙ্গার আবহাওয়া অনুকূলে থাকা ও আম লাভজনক হওয়ায় প্রতিবছরই আমের আবাদ বাড়ছে। এ জেলাতে প্রধানত আম্রপালি, লেংড়া, ফজলি, হাড়িভাঙা, মল্লিকা, থাই, গোপালভোগ, বারি ১০, দেশি, বেনারসি সিতাভোগ জাতের আমের আবাদ হচ্ছে। এর মধ্যে সিংহভাগই আম্রপালি।

দামুড়হুদা উপজেলার পারকৃষ্ণপুর গ্রামের আম চাষি শাকিল হোসেন বলেন, ‘এই বছর আমার আম গাছে প্রচুর পরিমাণে মুকুল আসতে শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত আমের মুকুলে কোনো রোগ-বালাই আক্রমণ করেনি। আবহাওয়াও ভালো। যদি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না আসে আশা করছি প্রতিটি আম গাছেই পর্যাপ্ত পরিমাণে আম ধরবে।’

উপজেলার জুড়ানপুর গ্রামের আম বাগানের মালিক জামিরুল বলেন, বাগানের অধিকাংশ গাছেই মুকুলে ছেয়ে গেছে। এবার কুয়াশা কম থাকায় মুকুল ভালোভাবে প্রস্ফুটিত হয়েছে। গত বছর সাড়ে ১৫ বিঘা জমিতে আমের বাগান ছিল। যা বিক্রি করেছিলাম ৭ লাখ টাকায়। এবছর ২০ বিঘা আমের বাগান আছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. আব্দুল মাজেদ বলেন, চুয়াডাঙ্গাতে আমের উৎপাদন ভালো হয়। এবছর একটু আগে ভাগেই আম গাছে মুকুল আসছে। তাছাড়া এখন পর্যন্ত প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ দেখা দেয়নি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার আমগাছে খুব একটা কীটনাশক প্রয়োগের প্রয়োজন হবে না।

তবে ছত্রাকজনিত রোগে আমের মুকুল ও গুটি আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই বাগানে দুই দফা ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে।

তিনি বলেন, ‘আম চাষে সহজেই লাভবান হওয়া যায়। যার কারণে অনেকই এই পেশায় এগিয়ে আসছেন। বর্তমানে জেলাতে আবাদি জমিতে আমের চাষ করা হচ্ছে। আমের ভালো ফলন পেতে আমরা কৃষকদের বিভিন্ন সময়ে পরামর্শ দিচ্ছি। এজন্য মাঠ পর্যায়ে আমাদের কর্মকর্তা কাজ করছেন। আশা করছি গত বছরের থেকে এ বছর আমের উৎপাদন বেশি হবে।’

—ইউএনবি