ফেনী জেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দাগনভূঞা।উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তামান চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ বলেন, আমি চেয়ারম্যান হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার পর গত ১০ বছরে জায়লস্কর ইউনিয়নে কতটুকু উন্নয়ন করেছি জনগন তা বলতে পারবেন। আমার উন্নয়নের এলাকা গুলোতে যারা চলাচল করছেন তারা অনেক ভাল বলতে পারবেন। রাস্তাঘাটের উন্নয়নের কথা বলে শেষ করে যাবে না। বিগত ১০ বছর পূর্বের চেয়ারম্যানগনরা জায়লস্করে কি উন্নয়ন করেছেন আর আমি ১০ বছরে কি উন্নয়ন করেছি তা যাচাই করলে হিসাব মিলে যাবে। তাই আমি স্পষ্ট ভাবে বলতে চাই এবারের নির্বাচন আমি চেয়ারম্যান হই বা না হই, জায়লস্করের জনগনকে সাথে নিয়ে সকল উন্নয়নমূলক কাজ করে যাবো ইনশাআল্লাহ। রবিবার দি নিউ নেশনের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব বলেন।
তিনি বিগত ১০ বছরে চেয়ারম্যান থাকাকালীন জায়লস্কর ইউনিয়নের যে উন্নয়ন কাজ করেছেন তার ফিরিস্তি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমি ২০১১ সালে প্রথমবারেরমত এবং ২০১৬ সালে ২য় বারেরমত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হই। চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই ইউনিয়নের উন্নয়নে মনোনিবেশ করি। এবং বিগত ১০ বছরে প্রায় ২০০ কোটি টাকার কাজ করি সড়ক পাকাকরণ ও সংস্কার কাজে। ১২০ কি.মি কাঁচা রাস্তা পাকাকরণ এবং প্রায় ১০০ কি.মি পাকারাস্তার সংস্কার কাজ করি । ইউনিয়নের মানুষের চলাচল ও যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নকল্পে ছোট ফেনী নদীর উপর বর্তমানে ১১ কোটি টাকা ব্যায়ে একটি ব্রিজ নির্মিত হচ্ছে এবং ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যায়ে বিভিন্ন খালের উপর আরো ৯টি ব্রিজ নির্মিত হয়েছে। ভাঙ্গনরোধে ২কোটি টাকা ব্যায়ে ২ হাজার মিটার গার্ডওয়াল স্থাপণ করা হয়েছে। এছাড়া বিগত ১০ বছরে সবচেয়ে বেশী উন্নয়ন হয়েছে শিক্ষাক্ষেত্রে। অত্র ইউনিয়নে ৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যায়ে সিলোনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে চারতলা ভবন, ২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যায়ে জায়লস্কর উচ্চ বিদ্যালয়ের তিনতলা ভবন, ৬৫ লাখ টাকা ব্যায়ে মকবুল আহমেদ উচ্চ বিদ্যালয়ে একতলা ভবন এবং ২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যায়ে সিলোনিয়া আলিম মাদ্রাসার তিনতলা ভবন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ সম্পর্ণ করি। এছাড়াও প্রায় ১৪ কোটি টাকা ব্যায়ে ইউনিয়নের কেবি হাট, দক্ষিণ নেয়াজপুর, লালপুর, আলামপুর বুচি, দক্ষিণ জায়লস্কর, দক্ষিণ বারাহিগুনি ও উত্তর জায়লস্কর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বীতলবিশিষ্ট ভবন এবং সিলোনীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩য় তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মান প্রকল্পের কাজ শেষ করেছি।
জায়লস্কর ইউনিয়নে সরকারের গৃহহীনকে গৃহ ও ভূমিহীনদের ভূমিসহ গৃহদান প্রকল্পের আওতায় ৪২ জন গৃহহীনকে গৃহ ও ২৯ জন ভূমিহীনকে ভুমিসহ গৃহদান করা হয়। উপরোক্ত উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন ছাড়াও বিগত ১০ বছরে জায়লস্করের প্রতিটি গ্রামের সকল মসজিদ, এতিমখানা, মন্দিরের উন্নয়নে সাধ্যমত সহযোগীতা করে আসছেন। তার নিজের খরচে এলাকার গরিব ও অসহায় পরিবারের বিবাহযোগ্য মেয়েদের বিয়েতে সর্বাত্মক সহযোগীতা করেছি। এছাড়াও ইউনিয়নের কৃষির উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ, গ্রামের ছোট ছোট রাস্তায় আরসিসি পাইপ, ইটের সোলিং, ড্রেন, কালভার্ট, গাইড ওয়াল, নলকূপ, মাটির রাস্তা, সেনেটারী ল্যাট্রিন, মাদ্রাসা স্কুল কলেজ গ্যারেজ, হাট-বাজারের উন্নয়নে কাজ করেছি।
এছাড়াও জায়লস্কর ইউনিয়নকে বাল্যবিবাহমুক্ত, মাদকমুক্ত ও শালিসবাণিজ্যমুক্ত ইউনিয়ন হিসেবে গড়ে তুলেছি।
করোনাকালীন সময়ে নিজ অর্থায়ণে ইউনিয়নের প্রতিটি দিনমজুর, অসহায় ও দুঃস্থদের মাঝে খাদ্য সহায়তা ও কিছু পরিবারকে নগদ অর্থ প্রদান করেছি।
তিনি বলেন, জনগণ আমাকে বিগত ২ বার ভোট দিয়েছেন ইউনিয়নের উন্নয়নমূলক কাজ ও মানুষের পাশে থাকার জন্য। আমি সাধ্যমত চেষ্টা করেছি। দেখার মালিক আল্লাহ। যে কয়দিন বেঁচে থাকবো ততদিন যেন জনগনের পাশে থেকে ইউনিয়নের উন্নয়নমূলক কাজ করতে পারি। এটিই আমার আশা, ভোট জনগণের হাতে যাকে খুশি তাকে দিবে, তবে আমি ইউনিয়নের সর্বস্তরের মানুষের পাশে সবসময় থাকবো। আমি বিশ্বাস করি আগামী ২৬ ডিসেম্বর নির্বাচনে জায়লস্কর ইউনিয়নের জনগন নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাকে তৃতীয়বারেরমত চেয়ারম্যান নির্বাচিত করবে। এ প্রত্যাশা করি।
আলমপুর গ্রামের বাসিন্দা ইব্রাহিম খলিল শিপন বলেন, জায়লস্করে যে উন্নয়ন মিলন চেয়ারম্যান করেছেন অত্র ইউনিয়নের মানুষ তাকে যুগযুগ ধরে মনে রাখবে। যতবার মিলন অত্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হবেন ততবারই তাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবে ইউনিয়নবাসী। আগামী ২৬ ডিসেম্বর ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতিকে ভোট দিয়ে আবারও মিলনকে বিজয়ী করে ইউনিয়নে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবে দলমত নির্বিশেষে ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগন এমনটাই মনে করেন ইউনিয়নের বাসিন্দারা।
শিপন বলেন, ২০১৬ সালে জায়লস্কর ইউনিয়ন পরিদর্শনে এসে ইউনিয়নের এতসব উন্নয়ন দেখে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানে তৎকালীন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার রুহুল আমিন তার বক্তব্যে উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, এ ইউনিয়নে এসে আমি অবাক হয়েছি। একজন ইউপি চেয়ারম্যান কিভাবে এত উন্নয়নপ্রকল্প নিয়ে আসতে পারেন। এত উন্নয়নপ্রকল্পের কাজ নিয়ে আসা কোন প্রথম শ্রেনির পৌরসভার মেয়রের পক্ষেও সম্ভব না। তিনি উপস্থিতিদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের ভাগ্য ভালো মিলনেরমত একজন চেয়ারম্যান পেয়েছেন। এসময় তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, ‘আপনারা মিলনকে ভালোবাসুন, আমি আপনাদের ভালোবাসবো’।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি