অনলাইন ডেস্ক :
চোটের সঙ্গে লড়াইয়ে পেরে উঠলেন না ইবাদত হোসেন। দীর্ঘায়িত হলো তার মাঠে ফেরার অপেক্ষা। হাঁটুর চোটে এশিা কাপের বাংলাদেশ দল থেকে ছিটকে গেলেন এই পেসার। বদলি হিসেবে ডাক পেলেন তরুণ পেসার তানজিম হাসান। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন আগের দিনই জানিয়েছিলেন ইবাদতকে নিয়ে শঙ্কার কথা। মঙ্গলবার বিসিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তি কোনো সুখবর বয়ে আনেনি তার জন্য। ইবাদতকে না বাংলাদেশের জন্য বড় এক ধাক্কা। স্বল্প সুযোগেই উইকেট শিকারি বোলার হিসেবে নিজেকে মেলে ধরেছেন ২৯ বছর বয়সী এই পেসার। ১২ ওয়ানডে খেলে তার উইকেট ২২টি। গত অগাস্টে এই সংস্করণে তার অভিষেক। এরপর থেকে এই সময়টায় ওয়ানডেতে তার চেয়ে বেশি উইকেট নিতে পারেননি বাংলাদেশের আর কেউ। তার চোটে প্রথমবার জাতীয় দলের দুয়ার খুলল তানজিমের সামনে।
সাম্প্রতিক সময়ে ইমার্জিং টিমস এশিয়া কাপ, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দারুণ বোলিংয়ের পর এবার আন্তর্জাতিক মঞ্চে ডাক পেলেন ২০ বছর বয়সী পেসার। শ্রীলঙ্কায় গত মাসে ইমার্জিং টিমস এশিয়া কাপে ৩ ম্যাচে ৯ শিকার ধরেন এই তরুণ পেসার। প্রিমিয়ার লিগে চ্যাম্পিয়ন আবাহনী লিমিটেডের হয়ে ১৫ ম্যাচে তার ঝুলিতে জমা পড়ে ১৭ উইকেট। সব মিলিয়ে ৩৭টি লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে ২০২০ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের এই পেসারের নামের পাশে রয়েছে ৫৭ উইকেট। তানজিমের অন্তর্ভুক্তিতে বাংলাদেশের এশিয়া কাপ দলে ২০২০ যুব বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটারের সংখ্যা বেড়ে হলো পাঁচ। আগেই দলে ছিলেন তানজিদ হাসান, শামিম হোসেন, শরিফুল ইসলাম, তাওহিদ হৃদয়। গত মাসে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বোলিং করার সময় আম্পায়ারের সঙ্গে কনুইয়ের ধাক্কায় ভারসাম্য হারিয়ে বাজেভাবে পড়ে যান ইবাদত। ওই চোটে ম্যাচ থেকে তো বটেই, সিরিজ থেকেও ছিটকে যান ২৯ বছর বয়সী পেসার।
এরপর পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় থাকায় জাতীয় দলের ফিটনেস ক্যাম্পে থাকতে পারেননি ইবাদত। তবে দ্রুত সুস্থতার আশায় তাকে এশিয়া কাপের স্কোয়াডে নেন নির্বাচকরা। দলের সঙ্গে অনুশীলনও করছিলেন তিনি। কিন্তু আশানুরূপ উন্নতি হয়নি তার চোটের। কয়েক দফা স্ক্যান রিপোর্টের পর তাকে এশিয়া কাপ থেকে বাইরে রাখার পরামর্শ দেয় বিসিবির চিকিৎসা বিভাগ। ভিডিওবার্তায় বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশিষ চৌধুরি যা বললেন, তাতে আরও বড় শঙ্কার ছবিই ফুটে উঠল। “গত জুলাইয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ইবাদত বোলিং করার সময় বাম হাঁটুতে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। কিছুদিন বিশ্রাম শেষে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু হয়। গত ৬ থেকে ৭ সপ্তাহ ওর পুনর্বাসন প্রক্রিয়া বিসিবির ফিজিও এবং ট্রেনারের তত্ত্বাবধানে চলে।”
“আঘাতের পর ইবাদতের বাম হাঁটুর একাধিকবার স্ক্যান করা হয়। সব স্ক্যানেই হাঁটুর এসিএলে (এন্টেরিয়র ক্রসিয়েট লিগামেন্ট) চোটের অস্তিত্ব ধরা পড়ে। পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার উন্নতিটা সন্তোষজনক না হওয়ার কারণে ইবাদতকে আর এশিয়া কাপের দলে রাখা হয়নি।” এসিএল চোট মানে বড় দুর্ভাবনার জায়গা থাকেই। বিশেস করে বিশ্বকাপের যখন বেশি দেরি নেই। প্রায় দেড় মাস ধরে চোটের সঙ্গে লড়াই করতে থাকা ইবাদতের মাঠে ফিরতে কত দিন সময় লাগতে পারে, সেটি নিয়েও কিছু জানাননি বিসিবির প্রধান চিকিৎসক।
তবে বিশ্বকাপের জন্য এই পেসারকে প্রস্তুত করার চেষ্টায় কমতি থাকবে না বলে জানালেন তিনি। “আগামী বিশ্বকাপের দলে ইবাদতের নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য বিসিবি সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছে। এরপরে যদি কোনো উন্নত চিকিৎসার জন্য ওকে বিদেশে পাঠানো হয়, সে ব্যাপারেও বিসিবি চিন্তাভাবনা করছে। অর্থাৎ যত দ্রুত এবং নিরাপদভাবে ইবাদতকে আবার খেলায় ফিরিয়ে আনা যায়, এই ব্যাপারে বিসিবির চিকিৎসা বিভাগ সর্বাত্মক সহযোগিতা করে যাবে।” আগামী ৩০ অগাস্ট শুরু হবে এশিয়া কাপের এবারের আসর। দ্বিতীয় দিন নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা