অনলাইন ডেস্ক :
‘পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ান’ সিনেমাখ্যাত অভিনেতা জনি ডেপ। প্রাক্তন স্ত্রী অ্যাম্বার হার্ডের সঙ্গে আইনি লড়াইয়ে তিনি। ‘অ্যাকুয়াম্যান’খ্যাত এই অভিনেত্রীর সঙ্গে তার একটি মামলার কার্যক্রম চলছে ভার্জিনিয়ার একটি আদালতে। ভালোবেসে একে অপরের কাছে এসেছিলেন জনি ডেপ ও অ্যাম্বার হার্ড। কিন্তু তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। ধীরে ধীরে তাদের তিক্ততা বাড়তে থাকে। শেষ পর্যন্ত ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নেন। চলুন জেনে নিই জনি ডেপ ও অ্যাম্বার হার্ডের প্রেম, বিয়ে, বিচ্ছেদ ও আইনি লড়াইয়ের নেপথ্যের গল্প। জনি ডেপ ও অ্যাম্বার হার্ডের পরিচয় ২০০৯ সালে। ‘দ্য রাম ডায়েরি’ সিনেমার শুটিং সেটে তাদের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। হান্টার এস. থম্পসনের লেখা একই নামের একটি বই অবলম্বনে সিনেমার গল্প। চলতি সপ্তাহে মামলার শুনানিতে জনি ডেপ জানান, সিনেমায় গোসলের সময় একটি চুমুর দৃশ্য করতে গিয়েই মূলত অ্যাম্বার হার্ডের প্রেমে পড়েছেন তিনি। এই অভিনেতার ভাষায়, ‘ওই মুহূর্তে, এমন কিছু অনুভূতি হয়েছিল, যা হওয়া উচিত হয়নি। মনে হয়েছিল, গোসলের সময় চুমুর দৃশ্য সত্যি ছিল।’ এই অভিনেতার দাবি, দুই বছর পর সিনেমার প্রচারের জন্য আবারো একসঙ্গে হতে হয়েছিল তাদের। সিনেমার পর সেটিই ছিল তাদের প্রথম দেখা। অ্যাম্বার হার্ডের আগে দীর্ঘদিন ভেনেসা প্যারাডিসের সঙ্গে ছিলেন জনি ডেপ। তাদের দুই সন্তানÑ লিলি রোজ ও জন ক্রিস্টোফার। ২০১২ সালে আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ভেনেসা ও জনি। এরপর অ্যাম্বার হার্ডের সঙ্গে প্রেম শুরু করেন এই অভিনেতা। ২০১৪ সালের মেট গালাতে বাগদান সারেন জনি ডেপ ও অ্যাম্বার হার্ড। পরের বছর লস অ্যাঞ্জেলেসে ঘরোয়া পরিবেশে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন এই জুটি। তবে বছর পেরুতেই তাদের পরিবারে ভাঙনের সুর শোনা যায়। বিয়ের পনেরো মাসের মাথায় ২০১৬ সালে ডিভোর্সের আবেদন করেন অ্যাম্বার। তিনি অভিযোগ করেন, মাদক সেবন করে ও মদ্যপ অবস্থায় তাকে শারীরিক নির্যাতন করেন জনি ডেপ। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেন ‘অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড’ অভিনেতা। পরবর্তী সময়ে ২০১৬ সালের আগস্টে ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ডিভোর্স নিষ্পত্তি করেন আদালত। জানা যায়, জনির কাছ থেকে পাওয়া এই অর্থ দাতব্য সংস্থায় দান করেন অ্যাম্বার হার্ড। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় নারীদের নির্যাতন নিয়ে লেখেন অ্যাম্বার হার্ড। যদিও সেখানে তিনি জনি ডেপের নাম সরাসরি উল্লেখ করেননি। তবে ২০১৯ সালে অ্যাম্বার হার্ডের এই লেখার কারণে তার বিরুদ্ধে ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের মানহানি মামলা দায়ের করেন জনি। এই অভিনেতা দাবি করেন, এর কারণে তার অভিনয় কেরিয়ারে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। অনেক চেষ্টা করেও এটি স্থগিত করতে পারেননি অ্যাম্বার। এরপর পাল্টা ১০০ মিলিয়ন ডলারের মামলা দায়ের করেন এই অভিনেত্রী। বর্তমানে এটিরই বিচার কার্যক্রম চলছে। অ্যাম্বার হার্ডের ওপর নির্যাতন নিয়ে ২০১৮ সালে একটি প্রতিবেদন করায় ২০২০ সালে দ্য সানের প্রকাশকের বিরুদ্ধে মামলা করেন জনি ডেপ। পরে এ বিষয়ে অ্যাম্বারকে জেরা করেন আদালত। এই অভিনেত্রী জানান, জনি তাকে অনেকবার হত্যার হুমকি দিয়েছেন। পরে বিভিন্ন তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে জনির এই মামলা খারিজ করে দেন আদালত। গত ১২ এপ্রিল ভার্জিনিয়াতে জনি ডেপের করা মানহানি মামলার শুনানি শুরু হয়। এরপর থেকে তাদের বিষয়ে নানা তথ্য বের হতে থাকে। জানা যায়, অ্যাম্বারকে পুড়িয়ে মেরে ফেলার কথা বন্ধুর সঙ্গে মেসেজে বলেছিলেন জনি। অন্যদিকে, রকেট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স ও ইলেকট্রিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্কের সঙ্গে নাকি পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন অ্যাম্বার। যদিও বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ইলন ও অ্যাম্বার। বর্তমানে মামলার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের জবানবন্দি গ্রহণ করছেন আদালত।
আরও পড়ুন
ইউটিউব থেকে সরানো হলো শাকিবের ‘তুফান’
চিন্তিত অনন্যা পান্ডে
কনাকে নিয়ে সুখবর দিলেন আসিফ