March 29, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, February 11th, 2022, 7:35 pm

জরাজীর্ণ টিনশেড ঘরে চলছে ইউপি কার্যক্রম

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার গোড়ল ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে উন্নয়নের কোন ছোঁয়া লাগেনি। এই পরিষদের নিজস্ব কোনো ভবন নেই। আধা পাকা জরাজীর্ণ দুটি টিনশেড ঘরে ইউপি কার্যক্রম চলছে। চেয়ারম্যান ও সদস্যরা একটি কক্ষে গাদাগাদি করে বসে পরিষদের কার্যক্রম চালিয়ে নিচ্ছেন।

এতে পরিষদ থেকে সেবা পেতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ইউনিয়নবাসী। তবে উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ভবন নির্মাণের জন্য একনেকে আবেদন করা হয়েছে, পাস হলে শিগগিরই কাজ শুরু হবে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রায় ৫০ হাত দুটি টিনশেড দু’চালা ঘরের মধ্যে চলছে এই ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম। এর একটিতে গোডাউন ও সভার কাজে ব্যবহৃত হয়। আর একটি ঘরে রয়েছে উদ্যোক্তার ও ইউপি সচিবের জন্য ছোট একটি কক্ষ। চেয়ারম্যান ছোট্ট একটি কক্ষে বসে পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করলেও গ্রাম আদালত ও ইউপি সদস্যদের বসার কোনো কক্ষ নেই।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারত সীমান্তবর্তী ৫ দশমিক ৮৩২ বর্গ কিলোমিটারের গোড়ল ইউনিয়ন পরিষদের জনসংখ্যা ৩২ হাজার ৫৯২ জন। এর উত্তরে ভারত দক্ষিণে চলবলা ইউনিয়ন পশ্চিমে চন্দ্রপুর ও পূর্বে আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ী ও কমলাবাড়ী ইউনিয়ন।

১৯৬৪ সালে গোড়ল ইউনিয়ন বোর্ডকে ইউনিয়ন কাউন্সিলে পরিবর্তন করা হয়। আর এর জন্য এক একর জমি প্রয়োজনীয়তায় একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়, সে সময়কার চেয়ারম্যান ফয়েজ উদ্দিন আহমেদের চেষ্টায় চাকলারহাট এলাকায় মরহুম সোনাউল্লাহ সরকারের জ্যেষ্ঠপুত্র মরহুম হাফিজ উল্লাহ সরকার এক একর জমি দান করেন। তখন থেকে সেখানেই ইউনিয়ন পরিষদের কাজ চলে আসছে।

২০০৪-২০০৫ অর্থ বছরে গোড়ল ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সের বরাদ্দ আসলে সে সময় জমি দাতার পুত্র আদালতে জমি নিজের দাবি করে আদালতে মামলা করেন। ফলে কমপ্লেক্স নির্মাণের বরাদ্দ বাতিল হয়ে যায়। এরপর দীর্ঘ দিন উচ্চ আদালতে ঝুলে ছিল গোড়ল ইউনিয়ন বাসীর কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের স্বপ্ন। তিন বছর আগে মামলার বাদী মামলা প্রত্যাহার করে নেয়। কিন্তু কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা আর হয়নি।

এদিকে দীর্ঘদিন ধরে কোন সংস্কার বা মেরামত না হওয়া আধাপাকা টিনশেড জরাজীর্ণ ঘর দুটি বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বৃষ্টি হলেই ছিদ্র টিন দিয়ে পানি পরে, পোকায় খেয়ে নষ্ট হয়েছে দরজা-জানালাসহ কাগজপত্র।

গোড়ল ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, ‘আমার ইউনিয়নে অবকাঠামোগত কোনো উন্নয়ন হয়নি। মামলাজনিত যে কারণ ছিল, তা তিন বছর আগেই শেষ হয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে দেখা করেছি, তিনি বলেছেন ৬ মাসের মধ্যে কাজ শুরু হবে।’

কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আবু তৈয়ব মো. শামসুজ্জামান বলেন, ‘জমি নিয়ে যে সমস্যা ছিল তা সমাধান হয়েছে। ভবন নির্মাণের বিষয়ে একনেকে আবেদন করা হয়েছে।’

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল মামান বলেন, ‘গোড়ল ইউনিয়নে পরিষদের জমি নিয়ে মামলা ছিল। সেটি নিষ্পত্তি হয়েছে। মামলা নিষ্পত্তির কাগজপত্রসহ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। একনেকে পাস হলে আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি কাজ শুরু হবে।’

—ইউএনবি