ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’কে সোমালিয়ার দিকে নিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
আজ বুধবার (১৩ মার্চ) দুপুর পর্যন্ত জানা গেছে, জাহাজটি এখনও উপকূল থেকে প্রায় ২৭৫ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছে এবং সোমালিয়ার দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
তবে ২৩ নাবিকের সঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এর আগে জাহাজের প্রধান কর্মকর্তা (চিফ অফিসার) মো. আতিকউল্লাহ খান একাধিকবার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। জানিয়েছেন সেখানের সর্বশেষ পরিস্থিতি।
এদিকে জাহাজে জিম্মি হওয়া কয়েকজন নাবিকের পরিবারের সদস্যরা আজ সকাল থেকে জাহাজ মালিকের প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের গোসাইডাঙ্গাস্থ কেএসআরএম অফিসে জড়ো হয়ে উৎকণ্ঠা প্রকাশ এবং জিম্মি নাবিকদের উদ্ধারের জন্য দ্রুত পদক্ষপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
এ সময় জিম্মি নাবিক আব্দুর রশিদ ও আতিকুল্লাহ’র স্ত্রী-সন্তানরা প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মেহেরুল করিমের সঙ্গে দেখা করে তাদের উৎকণ্ঠার কথা জানান। এ সময় তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে জিম্মি নাবিকদের উদ্ধারে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জলদস্যুদের কবলে পড়ার পর জাহাজটির গতি ঘণ্টায় ৫ কিলোমিটার ছিল। কিন্তু রাত ১১টায় জাহাজটি ট্র্যাকিং অর্থাৎ নজরদারির বাইরে চলে যায়। জাহাজের ২৩ বাংলাদেশি নাবিকের নিরাপত্তা শঙ্কার মধ্যে পড়েছে।
কেএসআরএম গ্রুপের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের জাহাজটি পুরোপুরি দস্যুদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে কোম্পানির কাছে বার্তা পাঠানো হয়। এছাড়া নাবিকদের একাধিক অডিও বার্তায় অস্ত্রসহ জলস্যুদের জাহাজ দখলের কথা জানা যায়।
প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন এনাম বলেন, ‘জাহাজে থাকা নাবিকদের সঙ্গে সর্বশেষ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কথা হয়েছে। তারা সবাই সুস্থ আছেন। জলদস্যুরা নাবিকদের জাহাজের কেবিনে রেখেছেন। এরপর আর কোনো কথা হয়নি।’
জলদস্যু নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর জাহাজ থেকে মঙ্গলবার অডিও বার্তায় মো. আতিকউল্লাহ খান মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের কর্মকর্তাদের কাছে অবশিষ্ট খাবারের পরিমাণের উল্লেখ করে জানান, তাদের জাহাজে ২০০ টন বিশুদ্ধ পানি ও ২০ থেকে ২৫ দিন খাওয়া যাবে এই পরিমাণ খাবার রয়েছে। দ্রুত যাতে খাবার শেষ না হয় সেজন্য অপ্রয়োজনী ব্যবহার না করতেও জাহাজের সবাইকে জানানো হয়েছে।
এছাড়া যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগে সর্বশেষ স্ত্রীর কাছে পাঠানো এক অডিও বার্তায় জিম্মি আতিক বলেন, ‘আমাদের কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে নিচ্ছে। ফাইনাল কথা হচ্ছে, এখানে যদি টাকা না দেয়, আমাদের একজন একজন করে মেরে ফেলতে বলেছে। তাদের যত তাড়াতাড়ি টাকা দেবে, তত তাড়াতাড়ি ছাড়বে বলেছে। এই বার্তাটা সবাইকে পৌঁছে দিও।’
—–ইউএনবি
আরও পড়ুন
কারওয়ান বাজারে হোটেলের আগুন নিয়ন্ত্রণে
ঢাকার বিভিন্ন স্থানে হালকা বৃষ্টিতে কিছুটা স্বস্তিতে নগরবাসী
তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে মাদ্রাসা সুপার কারাগারে