অনলাইন ডেস্ক :
কয়েক সপ্তাহ দ্বিধা-দ্বন্দ্বে থাকার পর অবশেষে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ২৬ এ যোগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ঠেকাতে নতুন চুক্তির জন্য দর কষাকষি করতে আগামী মাসে গ্লাসগোতে সম্মেলনে বসছেন বিশ্ব নেতারা। গত মাসে ওই সম্মেলন বয়কটের ইঙ্গিত দিয়ে বিশ্ব জুড়ে সমালোচনার মুখে পড়েন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী। কয়লা এবং গ্যাসের বড় উৎপাদক অস্ট্রেলিয়া। জলবায়ু ইস্যুতে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার চাপে রয়েছেতারা। অর্গানাইজেশন ফর ইকোনোমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ওইসিডি) হিসাব অনুযায়ী অস্ট্রেলিয়ার জলবায়ু নীতি এবং কার্বন নিঃসরণ কমানোর পরিমাণ বিশ্বের সবচেয়ে নিকৃষ্ট। গতকাল শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন সাংবাদিকদের বলেন, ‘গ্লাসগো সম্মেলনে আমার উপস্থিতি নিশ্চিত করছি, অংশ নিতে আগ্রহী হয়ে আছি। এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ আয়োজন।’ এর আগে সম্মেলনে উপস্থিতির প্রতিশ্রুতি না দেওয়ায় জলবায়ু কর্মীদের সমালোচনার মুখে পড়েন স্কট মরিসন। এনিয়ে কূটনৈতিক বিরক্তিও প্রকাশ করে যুক্তরাজ্য। স্কট মরিসনের মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন প্রিন্স চার্লস। স্কটল্যান্ডের সবচেয়ে বড় শহরে আগামী ৩১ অক্টোবর থেকে ১৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে কপ২৬ সম্মেলন। ২০১৫ সালের প্যারিস সম্মেলনের পর এটাই হতে যাচ্ছে সবচেয়ে বড় জলবায়ু সম্মেলন। সম্মেলনে নিজের অনুপস্থিতির কারণ হিসেবে করোনা চ্যালেঞ্জের কথা বলেন স্কট মরিসন। তিনি বলেন, কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থাপনা নিয়ে ইতোমধ্যেই চাপে রয়েছেন তিনি। তবে এখন কোয়ারেন্টিনের প্রয়োজনীয়তা অবসানের পরিকল্পনা সাজানো শুরু করেছে ক্যানবেরা। বিশ্বের বহু দেশ ২০৫০ সাল নাগাদ কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার উচ্চাকাক্সিক্ষ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। তবে অস্ট্রেলিয়া তা করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে। ২০০৫ সালে দেশটি ২০৩০ সাল নাগাদ ২৬ শতাংশ কার্বন নিঃসরণ কমানোর প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে এটি খুবই কম বলে বারবার সমালোচিত হয়ে আসছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অস্ট্রেলিয়ার ২০৩০ সাল নাগাদ ৪৭ শতাংশ কমানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া প্রয়োজন, যদি তারা জাতিসংঘের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখতে চায়। কয়লা চালিত বিদ্যুতের ওপর ব্যাপক নির্ভরতার কারণে মাথাপিছু হিসেবে বিশ্বের অন্যতম বড় কার্বন নিঃসরণকারী দেশ অস্ট্রেলিয়া। দেশটির রক্ষণশীল সরকার গত কয়েক মাস ধরেই জলবায়ু নীতি পরিবর্তনে দেশি-বিদেশি চাপের মুখে রয়েছে। আশা করা হচ্ছে সামনের সপ্তাহে তারা আরও বেশি কার্বন নিঃসরণ কমানোর প্রতিশ্রুতি দেবে। শুক্রবার স্কট মরিসন বলেন, ‘সম্মেলনে অংশ নিতে নিজেদির অবস্থান চূড়ান্ত করে ফেলবে সরকার। আমরা এসব ইস্যু নিয়ে কাজ করছি।’ অস্ট্রেলিয়ার বহু প্রান্তিক এলাকা কয়লা, গ্যাস এবং কৃষি কাজের ওপর নির্ভর করে।
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু