November 24, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, December 22nd, 2022, 7:40 pm

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমার বিষয়ে প্রথম রেজ্যুলেশন গ্রহণ

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে রোহিঙ্গা সঙ্কট ও এর টেকসই সমাধানের ওপর গুরুত্ব দিয়ে ‘মিয়ানমারে পরিস্থিতি’ বিষয়ে প্রথমবারের মতো রেজ্যুলেশন গৃহীত হয়েছে।

মিয়ানমারে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, এর গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের ক্রমাগত অবনতি ও রাজনৈতিক নেতাদের নির্বিচারে আটকের কথা উল্লেখ করে রেজ্যুলেশনে সহিংসতা বন্ধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক সংলাপের আহ্বান জানানো হয়েছে।

নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমার পরিস্থিতির পেনহোল্ডার হিসেবে যুক্তরাজ্য রেজ্যুলেশন পেশ করে যা ১২টি ভোটে গৃহীত হয়।

নিউইয়র্কে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন অনুযায়ী, যদিও নিরাপত্তা পরিষদের কোনো সদস্যই এর বিরুদ্ধে ভোট দেয়নি বা ভেটো ক্ষমতা ব্যবহার করেনি। রবে চীন, রাশিয়া ও ভারত ভোটদান থেকে বিরত থাকে।

রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বন্দ্বসহ বহুমুখী বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের প্রেক্ষাপটে এই রেজ্যুলেশন মিয়ানমারে চলমান সঙ্কট সমাধানে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ এই সংস্থার দৃঢ় সংকল্প প্রদর্শন করে।

এই রেজ্যুলেশন রোহিঙ্গা সঙ্কটের দিকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের মনোযোগ আরও নতুন করে তুলে ধরবে।

২০১৭ সালে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ের পর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বাংলাদেশের অবস্থান স্পষ্ট করে আসছেন।

বাংলাদেশ মানবিক বিবেচনায় ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে।

রেজ্যুলেশনে রোহিঙ্গাদের আতিথেয়তা ও মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য বাংলাদেশের প্রচেষ্টার প্রশংসা করা হয়েছে।

এটি মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবর্তন এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার ওপর তাদের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রভাবকেও স্বীকৃতি দেয়।

এটি রাখাইন রাজ্যে সঙ্কটের মূল কারণগুলোকে মোকাবিলা করার এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি তৈরি করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয়।

রেজ্যুলেশনটি ২০২১ সালে সম্মত হওয়া পাঁচ দফা ঐকমত্য বাস্তবায়নে আসিয়ানের ভূমিকার ওপরও তাৎপর্যপূর্ণ আলোকপাত করে।

অবিলম্বে পদক্ষেপ হিসেবে প্রস্তাবটি জাতিসংঘের মহাসচিব ও মিয়ানমার বিষয়ক তার বিশেষ দূতকে ২০২৩ সালের ১৫ মার্চের মধ্যে নিরাপত্তা পরিষদে আসিয়ানের পাঁচ দফা ঐকমত্য বাস্তবায়নে জাতিসংঘের সম্ভাব্য সমর্থনের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য অনুরোধ করে।

রেজ্যুলেশনটি গৃহীত হওয়া মিয়ানমারের বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদের নিয়মিত আলোচনার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করবে।

এটি রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানের জন্য বাংলাদেশের চলমান প্রচেষ্টাকেও শক্তিশালী করবে।

বাংলাদেশের পক্ষে বলা হয়, নিউইয়র্কে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন রেজ্যুলেশনের আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।

নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মুহাম্মদ আবদুল মুহিত নিরাপত্তা পরিষদের কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন এবং বাংলাদেশের স্বার্থ সম্পর্কিত বিষয়গুলো রেজ্যুলেশনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তা নিশ্চিত করেছেন।

এই রেজ্যুলেশন রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বহুপক্ষীয় প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের মাইলফলক সাফল্যের সাক্ষ্য বহন করবে।

—-ইউএনবি