November 23, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, October 6th, 2023, 7:25 pm

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশগ্রহণ বাংলাদেশের অবস্থানকে শক্তিশালী করেছে: প্রধানমন্ত্রী

ছবি: পি আই ডি

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৮তম অধিবেশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণকে ‘সফল’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘বহুপাক্ষিক ফোরামে আমাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ বাংলাদেশের অবস্থানকে শক্তিশালী করেছে। আন্তর্জাতিক ইস্যু সম্পর্কে, আমি আশা করি এটি সহযোগিতার পরিধি প্রসারিত করবে। সামগ্রিক বিবেচনায়, আমি মনে করি এই অধিবেশনে (ইউএনজিএ) বাংলাদেশের অংশগ্রহণ অত্যন্ত সফল হয়েছে।’

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগদান ও সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র সফর সম্পর্কে গণমাধ্যমকে জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

তার সরকারি বাসভবন গণভবনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের এ বছরের অধিবেশনে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে উদারতা এবং জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে বাংলাদেশের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব অত্যন্ত প্রশংসিত হয়েছে।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তার ভাষণ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ ও টেকসই ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে মানবতার অভিন্ন চ্যালেঞ্জগুলো সম্মিলিতভাবে মোকাবিলায় বিভক্তি, বিচ্ছিন্নতা ও বিচ্ছিন্নতার ওপর ঐক্য, সংহতি ও বহুপাক্ষিকতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, তিনি দ্ব্যর্থহীনভাবে উল্লেখ করেছেন যে, সরকার দেশের সংবিধানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে ও এটি অব্যাহত থাকবে।

এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন, ইউক্রেন যুদ্ধ, মহামারি ও রোহিঙ্গা সংকটের প্রভাব নিয়ে সরকারের উদ্বেগের বিষয়টিও তুলে ধরা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে তাদের মাতৃভূমিতে প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে এ অঞ্চলে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তিনি সন্ত্রাসী হুমকি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অপব্যবহার, সহিংসতা উস্কে দেওয়া, বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ও উস্কানিমূলক বক্তব্য ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি লক্ষ্য করেছেন। তিনি বলেন, তার সরকার সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থার বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করে।

একই সঙ্গে উন্নয়নশীল দেশগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য মানবাধিকার ইস্যুকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার না করার দাবি জানান প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, তিনি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে জরুরি পরিস্থিতিতে আঞ্চলিক ‘ফুড ব্যাংক’ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি জলবায়ু সহনশীল ফসলের গবেষণা ও উন্নয়নে সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।

পাশাপাশি তিনি জলবায়ু পরিবর্তন, রোহিঙ্গা পুনর্বাসন, মহামারি, এসডিজি অর্জনে খাদ্য সহযোগিতা এবং অন্যান্য ইস্যুতে অন্যান্য উচ্চ পর্যায়ের অধিবেশনে যোগ দেন।

কমিউনিটি ক্লিনিক সম্পর্কিত একটি উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে চিকিৎসা ব্যয় হ্রাস, ডিজিটাল ও আধুনিক ডায়াগনস্টিক সেবা প্রদান এবং মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানসহ পাঁচটি সুনির্দিষ্ট অগ্রাধিকার উপস্থাপন করেন।

এ ছাড়া তিনি নিউইয়র্কে ট্রাস্টিশিপ কাউন্সিল চেম্বারে ‘এসডিজি সামিট-লিডার্স ডায়ালগ-৪ (এসডিজি অর্জনে সমন্বিত নীতি ও সরকারি প্রতিষ্ঠান শক্তিশালীকরণ) শীর্ষক আরেকটি সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাইড ইভেন্টে ভবিষ্যতে যেকোনো মহামারি মোকাবিলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট পক্ষের মধ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার একটি কাঠামো প্রণয়নের প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়।

এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী পাঁচটি রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান ও প্রতিনিধিরাও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি আয়োজিত কমিউনিটি সংবর্ধনায় যোগ দেন এবং বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে সংবাদ সম্মেলন করেন।

নিউইয়র্কে অবস্থানকালে গভীর সমুদ্র থেকে বৃহৎ আকারে মাছ আহরণ রোধ এবং সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ‘গভীর সাগর সম্পর্কিত জাতিসংঘের চুক্তি’ সই করেন প্রধানমন্ত্রী।

এ ছাড়া হাঙ্গেরির সঙ্গে তিনটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক এবং কূটনৈতিক ও অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতির বিষয়ে কাজাখস্তানের সঙ্গে আরেকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।

ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থানকালে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন এবং অন্যান্য কর্মসূচিতে অংশ নেন। এ ছাড়া ভয়েস অব আমেরিকাকে সাক্ষাৎকার দেন।

শেখ হাসিনা বলেন, লন্ডনে বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গাবিষয়ক এপিপিজি’র সভাপতি রুশনারা আলীর নেতৃত্বে সর্বদলীয় পার্লামেন্টারি গ্রুপের একটি প্রতিনিধি দল এবং যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগ ও ক্ষুদ্র ব্যবসাবিষয়ক ছায়ামন্ত্রীসহ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি।

—-ইউএনবি